বনভোজন যাত্রার পূর্বের নির্দেশনা

Spread the love

এক সময় রাজারা তাদের ছেলে ও সৈন্যদের নিয়ে বনে ভোজের আয়োজন করতেন। তখন থেকেই বনভজনের প্রথা শুরু হয়। এক সময় গ্রামে চড়–ইভাতি আয়োজন ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে বৈচিত্র্য এসেছে। এখন ভোজ কর্পোরেট স্টাইল। বছরের শুরুতেই বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, অফিসে বনভোজনের আয়োজনে ভিড় হয়। এ সময় পিকনিক স্পট, ক্যাটারিং কোম্পানি, পরিবহন ব্যবস্থা করতে হিমশিম খেতে হয় অনেককে। একটু জ্ঞান ও প্রস্তুতি থাকলে এগুলো ডালভাত।  

আমাদের পিকনিকের অনেক পুরনো ইতিহাস আছে। এক সময় গ্রামীণ পরিবেশে দল বেঁধে রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়া করতে দেখা যেত। তার আগে চাল-ডাল জোগাড় হয়েছে, কেউ মসলাপাতি দিয়েছে। গরু নাকি মুরগি? মা ও খালা এই দ্বন্দ্ব মেটাতেন। বাড়ির উঠোনে রান্না চলছিল। দুপুরের রান্নার গন্ধে ভরে উঠল সারা ঘর। বলেই তরুণের মুখ আনন্দে ভরে উঠল। এই ছিল চড়–ইভাতি।     

বনভোজন যাত্রার পূর্বে নিম্নলিখিত নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করা উচিত

১। পিকনিকের যাত্রার তারিখ ও সময় নির্ধারণ করা উচিত

২। বনভোজন যাত্রার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করা উচিত। পরিকল্পনায় যা যা থাকতে পারে সেগুলো হল-

গন্তব্যস্থল নির্বাচন

যাতায়াত ব্যবস্থা জন্য ভাল যানবাহন ব্যবস্থা করা

খাবারের ব্যবস্থা

অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র

৩। গন্তব্যস্থলের অবস্থান সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে ভ্রমন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া। 

৪। আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নেওয়া উচিত।

৫। বনভোজন যাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করা উচিত। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যে থাকতে পারে: খাবার, পানীয়, পোশাক, জুতা, টর্চলাইট, ওষুধ সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

৬।  প্রয়োজনে গন্তব্যস্থলে প্রবেশের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া।

৭। যাত্রায় পরিবেশের প্রতি সচেতন থাকা এবং নিরাপত্তা বিধি মেনে চলতে হবে।

৮। বনভোজন যাত্রায় সকলের সাথে সহযোগিতার মনোভাব থাক উচিত।

৯।  ছুটির দিন এড়িয়ে গেলে নিরাপত্তার দিকটি ভাল থাকে এবং আরও বেশি লোক নেওয়া যায়।

১০। বর্ষাকালে লাইফ জ্যাকেট পরতে হবে। ভালো গ্রিপ সহ জুতা ব্যবহার করুন। হাঁটার সময় সতর্ক থাকুন। উঁচু-নিচু জায়গায় লাফ দেওয়া উচিত নয়। পাহাড়ে ট্রেকিং করার সময় বাঁশের লাঠি ব্যবহার করা।

১১।  হ্রদ, খাল বা নদী পার হওয়ার সময়, গাইডকে জানিয়ে সাথে দড়ি নিতে হবে।

১২। ক্যামেরা এবং মোবাইল 100% চার্জ করা উচিত। এক্ষেত্রে পাওয়ার ব্যাঙ্ক সঙ্গে রাখাই ভালো।

১৩।  ফার্স্ট এইড কিট বক্স এবং বিশুদ্ধ পানীয় জল  অবশ্যই রাখতে হবে।

১৪। সর্বদা স্থানীয় নিয়ম- কানুন মেনে চলার সময় ট্র্যাক রাখুন।

.১৫। কোনোভাবে দলচ্যুত হওয়া যাবে না।

১৬। বনভোজনে বাচ্চাদের জন্য একটু বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। তাই তাদের প্রিয় খেলনা যেমন ব্যাট, বল, গাড়ি, পুতুল নিতে ভুলবেন না। বাচ্চাদের এমন পোশাক পরা উচিত যাতে তারা দৌড়াতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। পাহাড়ী এলাকায় ছোট বাচ্চা, অসুস্থ ও বয়স্কদের এই ধরনের ভ্রমণে যাওয়া উচিত নয়।

১৭। পরিবেশ, প্রকৃতি ও স্থানীয় জনগণের ক্ষতি করে এমন কোনো কাজ করা যাবে না।

১৮।  আবর্জনা নির্দিষ্ট এলাকায় ফেলা উচিত। জায়গা না পাওয়া গেলে সবাইকে একসঙ্গে পুড়িয়ে বা মাটি চাপা দিতে হবে।

১৯। পাহড়ি পথে ব্যাকপ্যাক হালকা ব্যাবহার করতে হবে।

উপসংহার

বনভোজন যাত্রার পূর্বে এই নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করলে বনভোজন যাত্রা আরও সুন্দর ও আনন্দময় হবে। বনভোজন যাত্রা একটি আনন্দময় ও শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা। এই অভিজ্ঞতাকে আরও সুন্দর ও স্মরণীয় করে তুলতে উপরোক্ত নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করা উচিত।

4 thoughts on “বনভোজন যাত্রার পূর্বের নির্দেশনা”

Leave a Comment