বনভোজন পরিচালনা নীতি

Spread the love

পিকনিকের বাংলা শব্দ বনভোজন। সঠিক অর্থ হল বাড়ি থেকে খাবার আনা এবং পার্টিতে একসাথে খাওয়া। ইংরেজরা এখনও করে কিনা জানি না। যাইহোক, বাঙালিরা এখনও পিকনিক করে এবং এটিকে বানভোজন বলে। বনভোজন শব্দটি সম্ভবত রবীন্দ্রনাথই তৈরি করেছিলেন।

পিকনিক শব্দটি তার চিঠিপত্রে আগে দেখা দেয়। ১৯১১ সালে প্রকাশিত “অচলায়ত” নাটকে হঠাৎ নতুন শব্দ বনভোজন হাজির হয়। বাংলা অভিধানে শব্দের অর্থ পাওয়া গেছে বনে রান্না করা খাবার। পরবর্তীতে প্রকাশিত অন্যান্য অভিধানগুলি একটি বৃহত্তর অর্থ দিয়েছে—একটি বন বা রিসর্টে একসঙ্গে রান্না করা এবং খাওয়ানো।

বনভোজন একটি আনন্দঘন ও উপভোগ্য অভিজ্ঞতা। তবে বনভোজন যাওয়ার সময় কিছু নীতি ও নিয়ম মেনে চললে তা আরও আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য হতে পারে। বনভোজন পরিচালনার জন্য নিম্নলিখিত নীতিগুলি অনুসরণ করা উচিত-

বনভোজনের পরিকল্পনা: বনভোজনের আগে তারিখ, সময়, স্থান, সঙ্গী-সাথীদের সংখ্যা, প্রয়োজনীয় খাবার, পানীয়, ওষুধ, অন্যান্য সরঞ্জাম ইত্যাদির বিষয়ে পরিকল্পনা করা উচিত।

নিরাপত্তা: স্থানটি অবশ্যই নিরাপদ হতে হবে। বনভোজনের সময় ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

পরিবেশবান্ধবতা: বনভোজনের সময় পরিবেশবান্ধবতার প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত। বনভোজনের পরে পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা। বনভোজন উপভোগ করার পাশাপাশি প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা। বনভোজনস্থলে পৌঁছে পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। বনভোজন শেষে বনভোজনস্থলের পরিবেশ যেন দূষিত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

মানবিকতা: বনভোজনের সময় মানবিকতার প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত। বনভোজনের স্থানে থাকা প্রাণী ও গাছপালার ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

বনভোজন পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম

১। পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার ও পানীয় সঙ্গে নেওয়া উচিত।

২। বনভোজনের সময় পোশাক ও জুতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরাম ও নিরাপত্তা বিবেচনা করা উচিত।

৩। সঙ্গীদের বনভোজনের সময় সহযোগিতা করা উচিত।

৪। পরিবেশের ক্ষতি এমন কাজ থেকে বনভোজনের সময় বিরত থাকা উচিত।

৫। বনভোজন যাওয়ার আগে পিকনিকস্থলের অবস্থান, পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভালো।

৬। প্রয়োজনীয় ওষুধ, অন্যান্য সরঞ্জাম ইত্যাদি সঙ্গে নেওয়া।

৭। বনভোজনস্থলে পৌঁছানোর জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করা।

৮। মহিলা এবং শিশুদের জন্য বিশেষ সর্তকতামূলক ব্যবস্থা রাখা

৯। দায়ীত্ববান ও প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রাখা।

বনভোজন পরিচালনার জন্য কিছু টিপস

১। জন্য উপযুক্ত সময় নির্বাচন করা উচিত।

২। স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধবতা বিবেচনা করা উচিত।

৩। বনভোজনের সময় আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নিতে হবে।

৪। প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে নেওয়া উচিত।

৫। বনভোজনের সময় ফায়ার সেফটি মেনে চলতে হবে।

বনভোজন উপভোগ করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মাথায় রাখা উচিত

১। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা।

২। বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সদস্যদের সাথে আনন্দে সময় কাটানো।

৩। খেলাধুলা, ভ্রমণ, গান, কবিতা আবৃত্তি ইত্যাদির মাধ্যমে সময় কাটানো।

  বনভোজন শেষে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি খেয়াল রাখা উচিত

১। বনভোজনস্থলের পরিবেশ যেন দূষিত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা।

২। বনভোজনস্থল থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে বের হওয়া।

বনভোজন এর উপকারিতা

বনভোজনের অনেক উপকারিতা রয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো

১। বনভোজন শরীর ও মনকে সতেজ করে তোলে।

২। বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ করে দেয়।

৩। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ করে দেয়।

৪। মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

বনভোজন পরিচালনার ক্ষেত্রে উপরোক্ত নীতি ও নিয়ম মেনে চললে বনভোজন একটি আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য হবে।