কিভাবে পড়লে সরকারি চাকরি পাওয়া সহজ হবে

Spread the love

কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিসিএস এর ২৬টি ক্যাডার, সবসময়েই থাকে তুঙ্গে। তাই সর্বপ্রথম সরকারি চাকরি সম্পর্কে একটি সঠিক ধারণা ও পছন্দমত লক্ষ্য স্থির করে নিয়ে সেভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। বুঝে-শুনে এগোলেই ভালো ফল আশা করা যাবে ইনশাআল্লাহ।

অনেকে সরকারি চাকরি মানেই ভাবেন বিসিএস, প্রথমেই এই ভ্রান্তি দূর করাটা আবশ্যক। সরকারি চাকরির মাঝে আছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস তথা বিসিএস এর ২৬টি ক্যাডার, আছে বিভিন্ন সরকারি ব্যাংক, পুলিশের ,সামরিক বাহিনির বিভিন্ন পোস্ট ইত্যাদি। শুধু তাই নয়, কিছু বিশেষায়িত খাতও আছে। যেমন, বিজ্ঞানী পদে- বিভিন্ন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রগুলোতে,ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়ানদের জন্য প্রকৌশলী পদে এবং গোয়েন্দা সংস্থাতেও ( ডিজিআই, এনএসআই ) ,রেলওয়ে অফিসার কিংবা নৌ- অফিসার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ ।

বিসিএস, ব্যাংক, পুলিশ নাকি অন্য কোথাও?

শুরুতেই লক্ষ্য ঠিক রাখা খুব জরুরি। কিছুদিন একটির প্রস্তুতি নিয়ে আবার কিছুদিন অন্যটার প্রস্তুতি এভাবে এগোতে থাকলে তালগোল পাকিয়ে যেতে পারে। কোনোটাই ঠিকমত হয় না। এজন্য লক্ষ্য স্থির রেখে এগোতে হবে। বিসিএস, ব্যাংক, পুলিশ বা অন্য যে সেক্টরকেই টার্গেট ধরে আগানো হোক না কেন, প্রস্তুতি যেন হয় গোছানো। কারণ,এদের সবগুলোর প্রস্তুতি কিন্তু একই রকম নয়।

কেন সবার লক্ষ্য থাকে একটি সরকারি চাকরি বাগিয়ে নেয়া? চাকরির মধ্যে কেন সরকারি চাকরিই করতে হবে?

এসব প্রশ্নের জবাবে প্রথমেই আসবে জব সিকিউরিটির কথা,যেকোনো বেসরকারি চাকরির থেকে জব সিকিউরিটি যে  হাজার গুণে বেশি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ভাতাদি, আমৃত্যু (কিছু ক্ষেত্রে নিজের পাশাপাশি স্ত্রীর মৃত্যু পর্যন্ত) পেনশন ইত্যাদি কারণে ড্রিমজবের তালিকায় বেশ উপরের দিকেই থাকে সরকারি চাকরি । একজন মানুষ হিসেবে প্রত্যক্ষভাবে জনসেবার সুযোগ তো থাকছেই। অন্যান্য চাকরিতেও আপনি জনসেবা করতে পারবেন, তবে সরকারি চাকরিগুলোতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রান্তিক লোকজনের সাথে কাজ করার সুযোগ পাবেন ।

এখানে যেমন রয়েছে কর্তৃত্বের হাতছানি, তেমনি সম্মানের ছোঁয়া। এককথায় চাকরি প্রার্থীদের কাছে সরকারি চাকরি একটি নিশ্চয়তার ঠিকানা।

কিভাবে পড়লে সরকারি চাকরি পাওয়া সহজ হবে এ প্রশ্ন আজ সার্বজনীন। বেশিরভাগ চাকুরী প্রত্যাশী মনে করেন যে টাকার জোড় বা মামুর জোড় না থাকলে সরকারি চাকরি পাওয়া যায়না। কথাটা সত্যি তবে যাদের কোনো যোগ্যতা নেই তাদের জন্য। সরকারি চাকরি পেতে হলে অবশই আপনা্র যথাযথ যোগ্যতা থাকতে হবে। শারিরিক, মানসিক এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেই কেবল সরকারি চাকুরির জন্য আবেদন করা যাবে। পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক পরীক্ষা এবং শারীরিক পরিক্ষার মাধ্যমে যোগ্য মনে হলেই কেবল আপনি সরকারি চাকরি পেতে পারেন ।

এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলা যায়?

কিভাবে পড়লে সহজেই নিজেকে যোগ্য করে তুলবেন একটি সরকারি চাকরির জন্য তা নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো 

বর্তমানে সরকারি চাকরি যেন সোনার হরিণ সহজে ধরা দিতে চায়না। সরকারি চাকরির প্রতযোগিতা অনেক বেশি। একটিমাত্র পদের জন্য হাজার হাজার প্রার্থী প্রতিযোগিতা করে থাকে। প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে আপনাকে অবশ্যই সর্বোচ্চ যোগ্যতার অধিকারী হতে হবে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা কিভাবে বাড়াবেন ?

শিক্ষা জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে হবে। অনার্সে পড়া অবস্থায়ই চাকুরির প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। অনেকেই পড়াশোনা শেষ করে চাকুরির প্রস্তুতি নিতে শুরু করে যা তাকে হতাশায় ডুবিয়ে দেয়। সেশনজট, সময় মত পরীক্ষা না হওয়া ইত্যাদি কারনে বয়স পেরিয়ে যায় তখন বয়স নিয়ে চিন্তা করে অনেকেই পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তাছাড়া সুদীর্ঘ সময় পড়াশোনার কারনে চাকরির পড়াশোনায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীর অনিহা দেখা দেয় তাই সময় থাকতে নিজেকে প্রস্তুত করুন সরকারি চাকরির জন্য। সরকারি চাকরির জন্য নিজেকে যোগ্যরুপে গড়ে তুলতে পড়াশুনার কোনো বিকল্প নেই। 

আপনি যদি চাকরির জন্য নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারেন তাহলে চাকুরি আপনাকে খুজবে ইনশাআল্লাহ। মূল কথা হলো সরকারি চাকুরীর পরীক্ষায় যে সকল বিষয়ে প্রশ্ন হয় আপনাকে সেই সকল বিষয়ের উপর পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। 

সাধারণত প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার কোনো সিলেবাস থাকে না,তবে যে বিষয়গুলো থেকে সাধারণত বেশি প্রশ্ন আসে সেই গুলো এখানে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো ।


যেকোনো পরীক্ষার প্রশ্নপদ্ধতি সম্পর্কে এবং বিশেষ করে নম্বরবণ্টন সম্পর্কে সুচারু ধারণা থাকতে হবে । তা না হলে যেকোনো রকমের প্রস্তুতিই বিফলে যেতে পারে। সরকারি চাকরিতে সাধারনত

বাংলা      ( ব্যাকরণ ও সাহিত্য )

ইংরেজি  ( গ্রামার ও অন্যান্য )

গণিত      ( বীজ গ্ণিত, পাটি গণিত ও জ্যামিতি )

সাধারণ জ্ঞান      ( বাংলাদেশ, আর্ন্তজাতিক, খেলাধুলা ও ইতিহাস )

মানসিক দক্ষতা

কম্পিউটার

এ জাতীয় বিষয়ে প্রশ্ন হয়ে থাকে। এখানে উল্লেখিত বিষয় গুলো ভালো ভাবে আয়ত্ব করলেই আপনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে যাবে এবং সরকারি চাকুরির জন্য যে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরিক্ষায় ভালো করতে পারবেন। আপনি সুনির্দিষ্টভাবে কোন চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন সেটার মানবণ্টন বিশদে জেনে নিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে।

কীভাবে পড়লে সাফল্য আশা করা যাবে 

সেরা চাকরির জন্য দরকার সেরা প্রস্তুতি। কথায় আছে,ওয়ার্ক হার্ড এর থেকে বেশি কার্যকর হলো ওয়ার্ক স্মার্ট, আর সর্বোচ্চ ফলাফলের জন্য সঠিক পদ্ধতিতে কঠোর পরিশ্রম করা জরুরি। কারণ,এটা মাথায় রাখতে হবে যে, শর্টকাট পড়ে বেশিদূর যাওয়া সম্ভব না। তাই লক্ষ্য স্থির রেখে উপযুক্ত স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী কাজ করলেই মিলবে কাঙ্ক্ষিত সোনার হরিণ। স্মার্টভাবে কাজ করলে অনেকসময় কম পরিশ্রম করলেই কাঙ্ক্ষিত ফল আশা করা যাবে।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, কীভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে ?

মুখস্থ নয়,পড়তে হবে বুঝে। দ্রুত অধ্যায় শেষ করার চিন্তা না করে সময় দিয়ে মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে বেশি বেশি। প্রতিটি বিষয়কে আলাদা সময়ের স্লটে ভাগ করে নিতে হবে। নিজের সময়,সুযোগ ও সাধ্যমতো একটা প্ল্যান করে পড়তে হবে।  আর কেউ যদি চাকরির পাশাপাশি প্রস্তুতি নিতে চান,পুরো অবসর সময় সম্পূর্ণ কাজে লাগাতে হবে। পড়তে থাকলে একসময় অন্যদের সঙ্গে ব্যালেন্স হয়ে যাবে। বেসিক ক্লিয়ার করে বই পড়লে, জয় হবেই। বেশি বই পড়ে,মনে না রাখার চেয়ে ভালো মানের অল্প বই বারবার পড়লে মেমোরাইজ জোন তৈরি হবে,মনে থাকবে বেশি। একটি ভালো বই ও পরিশ্রম বদলে দিতে পারে সম্ভাবনার দুয়ার। তাই নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রেখে শুরু করতে হবে। 

সুনির্দিষ্ট রুটিন এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে পড়া 

রুটিন করে পড়তে হবে,এতে সময় কম নষ্ট হবে। সাথে থাকতে হবে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও। যেটা অনুযায়ী প্রতিটা বিষয়ের অধ্যায় ধরে ধরে পড়া এগোবে। এভাবে প্ল্যান করে পড়তে থাকলে পুরো সিলেবাস সুন্দর মতো শেষ করে ফেলতে কোনো বেগই পেতে হবে না। পড়ার সুবিধার্থে দরকার হলে লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়বেন। এতে হবে কী, বাকিদের দেখাদেখি অটোমেটিক পড়াশুনার মোটিভেশন চলে আসবে। আর আমাদের ব্রেইন বেশ অনুকরণপ্রিয়,কোনো কিছু দেখে তা থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে ও ভালোই পারে। পড়ুয়াদের ভিড়ে থাকলে নিজেকে পড়ার ভেতর আবদ্ধ রাখতে সুবিধা হবে।  

সিনিয়রদের পরামর্শ নিয়ে ফলো করা  

আপনার যে বড় ভাই/ আপু কেবল চাকরিতে জয়েন করেছেন,তার থেকে উপদেশ নিতে পারেন। তারা কিভাবে পড়ে চাকরির পরীক্ষায় ভালো করেছে তা জানার চেষ্টা করুন। এই টেকনিক কাজে আসতে পারে যেকোনো পরীক্ষাতেই! তার অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হতে পারবেন বহুগুণে।

পরীক্ষার ধরন বুঝে প্রস্তুতি নেওয়া 

সমস্ত সরকারি চাকরির প্রশ্নপত্র এক রকম হয় না। যেমন ব্যাঙ্কের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পার্থক্য রয়েছে রেলের চাকরির পরীক্ষার। তেমনই কেন্দ্রীয় সরকারি থেকে রাজ্য সরকারি, সমস্ত পরীক্ষার কিছু ধরন রয়েছে। তাই প্রার্থীদের যে কোনও নির্দিষ্ট পরীক্ষা দেওয়ার আগে সেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি। 

সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর লেখার অভ্যাস করা

চাকরির পরীক্ষায় মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন হলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। বাংলা,ইংরেজি,অঙ্ক,সাধারণ জ্ঞান সহ থাকে বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্ন। ফলে সময়ের মধ্যে পুরো প্রশ্নের উত্তর দেওয়াই বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়। তাই বাড়িতে পড়াশোনা করার সময়েই ঘড়ি ধরে প্রস্তুতি নিতে হবে। 

পড়ার পাশাপাশি নোট লেখার অভ্যাস

যেহেতু চাকরির পরীক্ষায় সিলেবাস অনেক বেশি থাকে। তাই নিয়মিত নোট নিয়ে লিখে রাখার অভ্যাস করলে সুবিধা হবে। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার আগে কোনও একটি চ্যাপ্টার পুরোটা না পড়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলি চোখ বুলিয়ে নিলেই মনে রাখতে সুবিধা হবে। 

বেশি বেশি সাধারণ জ্ঞানের চর্চা করা

যে কোনও সরকারি চাকরির পরীক্ষাতেই সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন থাকেই। সেক্ষেত্রে নিয়মিত সংবাদপত্র পড়ার অভ্যাস থাকতে হবে। এছাড়াও সাম্প্রতিক জাতীয়,আন্তর্জাতিক খবর,সরকারি নীতি এবং সামাজিক আর্থিক উন্নয়নের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সের বিষয়ে খোঁজখবর রাখতে হবে।  

অনলাইনে চাকরির প্রস্ততি 

বর্তমানে সবকিছুর মতোই সরকারি চাকরির প্রস্ততিও অনলাইনে নেওয়া যায়। কিভাবে অনলাইনে সরকারি চাকরির প্রস্ততি নিবেন তা নিচে আলোচনা করা হলো 

চাকরি সম্পর্কিত বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে প্রস্ততি 

বর্তমানে ফেসবুকে অনেক পেইড কোর্সের বিজ্ঞাপন পাওয়া যায় যেগুলোতে রেকোর্ড অথবা লাইভ ক্লাসের মাধ্যমে অভিজ্ঞ ইন্সট্রাকটররা চাকরির প্রস্ততি নিতে সহায়তা করে থাকে। এছাাড়াও,বিনামূল্যে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করে এমন কিছু গ্রুপও আছে। 

ইউটিউবের সাহায্যে চাকরির প্রস্ততি 

যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তারা সবাই কমবেশি ইউটিউব সম্পর্কে জানেন। শিক্ষামূলক ভিডিও ইউটিউবে আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি চেষ্টা করেন ফ্রিতেই ইউটিউবের সাহায্যে অনলাইনে চাকরির প্রস্ততি নিতে পারেন।

চাকরির পড়াশোনা টিপস 

সরকারি চাকরির জন্য পড়াতো অনেক। এক কথায় ১ম শ্রেণি থেকে শুরু করে অনার্স পর্যন্ত যা যা পড়েছেন তার যেকোনো জায়গা থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। কিন্তু স্বল্প সময়ের মধ্যে আপনার এতকিছু পড়া সম্ভবপর হয়ে ওঠবে না। তাই আপনাকে বাছাই করা কিছু প্রশ্ন পড়তে হবে। এরকম কিছু টিপস নিম্নে দেওয়া হলো 

ধীরে ধীরে প্রস্ততি শুরু করুন 

প্রথমেই বড় কোনো পড়ার টার্গেট বা অনেকক্ষণ পড়ার রুটিন না বানিয়ে অল্প অল্প করে পড়া শুরু করে দিন। তাহলে আপনি প্রস্ততি নেওয়া থেকে ছিটকে যাবেন না এবং ধীরে ধীরে আপনার প্রস্ততি নেওয়ার গতিও বাড়তে থাকবে এবং নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। 

গণিত ও ইংরেজি দিয়ে শুরু করতে পারেন 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে,চাকরিপ্রার্থীরা অধিকাংশই গণিত ও ইংরেজিতে দূর্বল হয়ে থাকে। তাই গণিত ও ইংরেজিতে ভিত্তি মজবুত করার জন্য গণিত ও ইংরেজি দিয়ে শুরু করতে পারেন আপনার প্রস্ততি।

প্রশ্নব্যাংক 

সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, একটি বিশাল পরিমাণ প্রশ্ন বিগত বছরের প্রশ্নাবলি থেকে কমন আসে। সেক্ষেত্রে আপনি যদি প্রশ্নব্যাংক এনালাইসিস করে পড়তে পারেন তাহলে কম সময়ের মধ্যেই চাকরির প্রস্ততি গ্রহণ করতে পারবেন। পুরাতন বছরের প্রশ্নব্যাংক সলভ করতে হবে।

রিভিশন 

যা যা পড়বেন তা অবশ্যই বারবার রিভিশন দেওয়ার চেষ্টা করবেন। কেননা,রিভিশন না দিলে আপনি যা যা পড়েছেন সব ভুলে যাবেন আর পড়ে যে লাভ হওয়ার কথা ছিলো তা হবেনা। তাই বেশি বেশি রিভিশন দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

যেকোনো একটি বই পড়ুন

একটি বিষয়ের ওপর বাজারে বিভিন্ন লেখকের অনেক বই পাওয়া যায়। যেগুলোতে প্রলোভনমূলক অনেক কথাবার্তা থাকতে পারে। তবে,আপনি যেকোনো একটি ভালো বই সিলেক্ট করবেন এবং সেই বইটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বারবার পড়ার মাধ্যমে আয়ত্ত্বে নিয়ে আসবেন।

 গ্রুপ স্টাডি করতে পারেন

লাইব্রেরিতে বা ক্যাম্পাসে পড়ালেখার ব্যাপারে সিরিয়াস এমন বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করতে পারেন।  তাহলে,আপনার জানার ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হবে বলে আশা করা যায় ।

ব্যাকআপ রাখুন

দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে সরকারি চাকরির প্রস্ততি নিতে একটি ভালো ব্যাকআপ রাখার চেষ্টা করুন। সেটা হতে পারে ফ্রিল্যান্সিং বা কোনো এনজিওতে চাকরি।

যে সকল বিষয়গুলোতে সতর্ক থাকতে হবে

আলোচনার শেষের দিকে এসে আমরা জানবো, যারা চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন এই ক্ষতিকর কাজগুলো ভুলে করে ফেলেন। যা একেবারেই করা যাবে না এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

নিজের সামর্থ্য ও যোগ্যতার সম্পর্কে জানা 

আপনাকে আপনার অবস্থান সম্পর্কে জানতে হবে। আপনার বেসিক কেমন এবং আপনি কতটুকু মনযোগের সাথে লেখাপড়া করেছেন ছোট ক্লাসগুলোতে বা কতটুকু ফাঁকি দিয়েছেন। লক্ষণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে সামর্থ্য ও যোগ্যতা সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা। অনেক প্রার্থীকে দেখা যায় বাছাই পরীক্ষায় টেকার মতো যোগ্যতা না থাকার পরও বড় পদের চাকরির পেছনে ছুটতে গিয়ে তার জন্য উপযুক্ত পদের চাকরিটিতে আর চেষ্টা করা হয় না। ফলে দুটিই তার হাতছাড়া হয়ে যায়। 

বেসিক শক্ত না করেই চাকরির প্রস্তুতি নেওয়া

বেশির ভাগ প্রার্থীই বেসিক মজবুত না করেই বাজার থেকে গতবাঁধা কিছু বই নিয়ে পড়া শুরু করে দেন । দেখা যায়, পড়ার টেবিলে অনেক সময় দেওয়ার পরও সে অনুযায়ী আউটপুট নেই,বিশেষ করে গণিত, ইংরেজি ও বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোতে বেসিক শক্ত করার বিকল্প নেই। সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায়,বেশিরভাগ প্রশ্নই বেসিক জ্ঞান থেকে করা হয়। তাই কারো যদি বেসিক দুর্বল হয়ে থাকে তাহলে আগে নিজের বেসিক জ্ঞানটিকে ঝালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। 

বারবার প্রস্তুতির ধারা পরিবর্তন করা

প্রার্থীরা বারবার প্রস্তুতির ধারা পরিবর্তন করলে পরে কোনো দিকেই পুরোপুরি প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয় না। যেমন- একজন কিছুদিন বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়ে কিছুদিন পর আবার ব্যাংক প্রস্তুতির দিকে ঝুঁকে গেলেন, ফলে তাঁর কোনো দিকেই কিছু হয় না! 

অযথা সময়ের অপচয় করা

যে সময়ে প্রার্থীদের সবচেয়ে বেশি সিরিয়াস হওয়া উচিত,সে সময়টা অনেকেই অপ্রয়োজনীয় আড্ডা, বিনোদন, সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্নভাবে নষ্ট করে ফেলেন। বিনোদনের দরকার আছে,কিন্তু 

সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারাটাই একজন ব্যর্থ ও সফল ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য। 

পরিশেষে আলোচ্য নিবন্ধের উল্লেখিত বিষয়গুলো চর্চার মাধ্যমে এবং ভুলগুলো থেকে বেঁচে থাকার মাধ্যমে আপনার বিসিএস,ব্যাংক বা অন্য যেকোনো সরকারি চাকরিপ্রাপ্তির পথ হোক সুগম,এই কামনা রইল। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে আপনার,আপনি অবশ্যই পারবেন এবং এই পারার জন্য চেষ্টা করে যেতে হবে। আত্মবিশ্বাস বজায় রাখার পাশাপাশি ধৈর্যশীলও হতে হবে,কারণ অনেক ক্ষেত্রেই সাফল্য অত সহজে আসবে না, সেসব ক্ষেত্রে অধৈর্য হয়ে হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। লেগে থাকার মানসিকতা রাখতে হবে নিজের মধ্যে। 

অনেক চেষ্টার পর দেখা গেল,এরপরও কোনো পরীক্ষার ফল আপনার অনুকূলে আসছে না অথবা লিখিত পরীক্ষার দেয়াল টপকাতে পারলেও আটকে গেছেন ভাইভাতে। এরপর যদি হতোদ্যম হয়ে বসে পড়েন তাহলে কিন্তু হবে না। কোনো অবস্থাতেই অতীতকে ভেবে বর্তমানকে হাতছাড়া করবেন না,তাহলে ভবিষ্যতে পস্তাতে হবে। এভাবে কঠোর পরিশ্রমের সাথে লেগে থাকলেই সাফল্য আপনার কাছে ধরা দিতে বাধ্য হবে ইনশাআল্লাহ।


Leave a Comment