অবরোধ-হরতালের সময় টাকে যেভাবে কাজে লাগিয়ে বাসা থেকে আয় করবেন

Spread the love

অবরোধ হরতালের সময় অনেকেই ঘরে বসে থাকেন।  অবরোধ হরতালে অনেক মানুষ তাদের কর্মস্থল থেকে ছুটি নিতে বাধ্য হয়। ফলে তাদের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যায়। এই সময়টিকে কাজে লাগিয়ে বাসা থেকে আয় করার মাধ্যমে আপনি আপনার আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে পারেন।

অবরোধ হরতালের সময় বাসা থেকে আয় করার জন্য আপনার কিছু দক্ষতা বা জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। 

আপনি যদি কোনও দক্ষতা বা জ্ঞান অর্জন করে থাকেন, তাহলে আপনি সেটি কাজে লাগিয়ে বাসা থেকে আয় করতে পারেন। বর্তমানে ব্যবসা বা  অনলাইনে অনেক ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে।  এই পোস্টে আমরা অবরোধ হরতালের সময় বাসা থেকে আয় করার কিছু ধারণা এবং টিপস নিয়ে আলোচনা করব।

১। ফ্রিল্যান্সিং

অবরোধ হরতালের সময় বাসায় বসে না থেকে ফ্রিল্যান্সিং করা একটি চমৎকার উপায় হতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং হলো অন্যদের জন্য কাজ করে অর্থ উপার্জনের একটি পদ্ধতি। আপনি আপনার দক্ষতা বা জ্ঞান কাজে লাগিয়ে অনলাইনে কাজ করে আয় করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারেন, যেমন- Fiverr বা আয়করি.কম এর মাধ্যমে  ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ডেটা এন্ট্রি, মার্কেটিং, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ইত্যাদি।

ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু দক্ষতা বা জ্ঞান থাকতে হবে। আপনি যদি কোনও দক্ষতা বা জ্ঞান অর্জন করতে চান, তাহলে আপনি অনলাইনে কোর্স করতে পারেন বা হালাল রিযিকের খোঁজে ট্রেনিং সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য আপনাকে একটি ভালো পোর্টফোলিও তৈরি করতে হবে। আপনার পোর্টফোলিওতে আপনার কাজের নমুনা থাকতে হবে। আপনার পোর্টফোলিও আপনার দক্ষতা বা জ্ঞান প্রদর্শন করবে।

অবশেষে, আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে এবং পরিশ্রম করতে হবে। প্রথমদিকে আপনি হয়তো খুব বেশি কাজ পাবেন না। তবে, ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।

২। ই-কমার্স

ই-কমার্স হল অনলাইনে পণ্য বা সার্ভিস বিক্রির একটি পদ্ধতি। আপনি যদি কোনও পণ্য বা  সেবা ক্রয় বা বিক্রয় করতে চান, তাহলে আপনি অনলাইনে একটি ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

 ই-কমার্স ব্যবসায় আপনি বিভিন্ন ধরনের পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করতে পারেন, যেমন- পোশাক, জুতা, গয়না, খাবার, আসবাবপত্র, ইত্যাদি।

ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি অনলাইন স্টোর তৈরি করতে হবে। আপনি বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আপনার অনলাইন স্টোর তৈরি করতে পারেন।

আপনার অনলাইন স্টোর তৈরি করার পর, আপনাকে আপনার পণ্য বা সেবাগুলি আপনার স্টোরে আপলোড করতে হবে। আপনি আপনার পণ্য বা সেবাগুলির ছবি, বিবরণ, এবং দাম উল্লেখ করতে হবে।

আপনার পণ্য বা সেবাগুলি আপনার স্টোরে আপলোড করার পর, আপনাকে আপনার স্টোরের প্রচার করতে হবে। আপনি বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করে আপনার স্টোরের প্রচার করতে পারেন। 

৩। ব্লগিং

ব্লগিং একটি শখ, একটি শিক্ষা, এবং একটি সংলগ্ন সম্প্রাপ্তির মাধ্যম, যেটি একজন লেখকের মাধ্যমে তার আলোচনা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং অভিজ্ঞতা, শেয়ার করতে সাহায্য করে।। আপনি যদি কোনও বিষয়ে লিখতে ভালোবাসেন, তাহলে আপনি একটি ব্লগ শুরু করতে পারেন।

ব্লগিং করে আয় করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু বিষয়বস্তু তৈরি করতে হবে। আপনি যদি কোনও বিষয়বস্তু তৈরি করতে চান, তাহলে আপনি আপনার আগ্রহ, দক্ষতা, এবং বাজারের চাহিদা বিবেচনা করতে পারেন।

৪। ইউটিউবিং

ইউটিউবিং হল একটি অনলাইন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। আপনি যদি ভিডিও তৈরি করতে ভালোবাসেন, তাহলে আপনি ইউটিউবে একটি চ্যানেল তৈরি করে আয় করতে পারেন।

ইউটিউবিং করে আয় করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু ভিডিও তৈরি করতে হবে। আপনি যদি কোনও ভিডিও তৈরি করতে চান, তাহলে আপনি আপনার আগ্রহ, দক্ষতা, এবং বাজারের চাহিদা বিবেচনা করতে পারেন।

ইউটিউবিং শুরু করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে। আপনি একটি Gmail অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন।

আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার পর, আপনাকে আপনার ভিডিওগুলি আপনার চ্যানেলে আপলোড করতে হবে। আপনার ভিডিওগুলি আকর্ষণীয় এবং তথ্যপূর্ণ হতে হবে।

৫। প্রাইভেট টিউশনি

অবরোধ-হরতালের সময়ে আপনি স্কুল – কলেজের পড়ুয়া বাচ্চাদের পড়াতে পারেন। আর এর বিনিময়ে আয় করে নিতে পারেন বাড়তি   কিছু টাকা।

৬। নকশি কাঁথা

নকশি কাঁথা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প। এটি শুধুমাত্র একটি ব্যবহারিক জিনিস নয়, বরং এটি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক জীবন্ত নিদর্শন। নকশি কাঁথার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, তাই এটি একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে।

আপনি চাইলে আপনার হাতের তৈরী নকশি কাঁথা বিভিন্ন দোকানে অথবা অনলাইন বিক্রি করতে পারেন।

সময়কে কাজে লাগাতে কিছু ভুল মাথায় থেকে সরিয়ে ফেলুন

১। কখনোই  অজুহাত দেখাবেন না

এই তো কয় মিনিট, করে দিচ্ছি’ বা ‘হাতে সময় নেই এই ধরনের অজুহাত দেখাটা খুবই খারাপ। এর ফলে আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জনে পিছিয়ে পড়বেন। কারণ, আপনি যে কাজটি করার কথা বলেছেন, সেটি করার জন্য আপনাকে সময় দিতে হবে। আপনি যদি অজুহাত দেখান, তাহলে সেই সময়টা আপনি কাজে লাগাতে পারবেন না। প্রতিদিন আমাদের কাছে ২৪ ঘন্টা সময় আছে। এই সময়ের মধ্যেই আমরা আমাদের কাজগুলো করতে হবে। তাই, সঠিকভাবে সময় ব্যবহার করার জন্য আমাদের একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।

২। ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস কুরুন

ভোরে ঘুম থেকে ওঠা সময় ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সকালবেলা মন থাকে ফুরফুরে এবং শরীর থাকে সতেজ। তাই সকালবেলায় কাজ করলে তা সহজেই করা যায়।

৩। হতাশ হবেন না

হতাশার হাত থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে প্রথমে বুঝতে হবে যে হতাশা আসলে কী। হতাশা আসলে একটি মানসিক অবস্থা। হতাশা যখন ঘটে তখন মানুষ নিজের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। হতাশা মানুষকে কাজ করতে বাধা দেয়।

কাজ এবং লক্ষ্য থেকে একমাত্র হতাশাই আপনাকে আলাদা করতে পারে।

আপনি যদি আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে চান, তাহলে আপনাকে হতাশাকে জয় করতে হবে।


পড়ুন: প্রতিযোগিতামূলক চাকরির জন্য নিজেকে কিভাবে প্রস্তুত করবেন ?

Leave a Comment