আইটি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার টিপস

Spread the love

বর্তমান যুগে অনেক কাজের মাঝে ফ্রিল্যান্সিং একটি পেশা যাতে মানুষের স্বাধীনভাবে কাজ করার সম্ভাব্য সুযোগ রয়েছে এবং এটি অনুকূল ক্যারিয়ার হিসাবে  প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।এখানে প্রত্যেকেই তার নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ পেয়ে থাকে। ফ্রিল্যান্সিং যেকোনো স্থানে বসে সময়মতো কাজ করার স্বাধীনতা দেয়। ফ্রিল্যান্সিং হল কোন প্রতিষ্ঠানে পার্মানেন্ট চুক্তিবদ্ধ না হয়ে প্রোজেক্ট এর সাথে জড়িত হয়ে কাজ করা।

প্রথমেই ফ্রিল্যান্সিংকরতে এসে কিছু জিনিশ বুঝে ও মেনে শুরু করা উচিত যাতে কাজটি খুব সহজে ও প্রতিবন্ধকতাবিহীন শুরু করা যায়।

 এই লেখায় আমরা কিছু টিপস এবং কৌশল নিয়ে আলোচনা করব:

আইটি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

 ১। নিজের দক্ষতা সম্পর্কে জানা

আপনি কোন বিষয়ে ভাল তা জেনে শুরু করুন, বা ক্লায়েন্ট / বাজারের কী প্রয়োজন তা বোঝার মাধ্যমে শুরু করুন: আপনি যদি মনে করেন যে আপনার এমন কোনও দক্ষতা রয়েছে যা থেকে কেউ উপকৃত হতে পারে বা তাদের ব্যবসায় সহায়তা করতে পারে তবে এটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেস এ উপস্থাপন করুন। উদাহরণস্বরূপ: আপনি সিনেমা দেখতে ভাল এবং এটি অন্যান্য ভাষায় ব্যাখ্যা করতে পারেন, আপনি যে চলচ্চিত্রগুলি দেখেছেন সেগুলির সাবটাইটেল লিখতে পারেন এবং একটি পোর্টফোলিও তৈরি করতে পারেন এবং এটি ভবিষ্যতের কাজের জন্য অগ্রিম পোর্টফোলিও হতে পারে। আপনার যে কাজে বেশি আগ্রহ সেটাকেই বেছে নিবেন।

২। পোর্টফোলিও তৈরি করা

 শুরু করার আগে প্রকল্পগুলির একটি বড় পোর্টফোলিও তৈরি করতে সময় ব্যয় করুন: নিজেকে সীমাবদ্ধ করবেন না, একটি ব্যবসায়ের কেবল একটি লোগোর প্রয়োজন হয় না, এটি একটি ওয়েবসাইট এবং এর সাথে যা কিছু যায় তার মতো ডিজিটাল সামগ্রীর অনেক ফর্ম প্রয়োজন। এমনকি অফিসের কাগজের টেমপ্লেটগুলি একজন ডিজাইনার দ্বারা ডিজাইন করা দরকার। সামগ্রীর একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ ডিজাইন করে কখনও কখনও আপনার  পোর্টফোলিও এর গুরুত্ব প্রতিফলিত হয় ।

৩।নতুন কাজে দক্ষতা অর্জন করা

একই ধরনের প্রকল্পে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করার পরে নতুন দক্ষতা শিখতে সময় উৎসর্গ করুন: এমনকি একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের কাছেও একটি কাজ একঘেয়ে হয়ে যেতে পারে এবং পুনরাবৃত্তি অনুভব করতে পারে। এটি একটি লক্ষণ, আপনার বর্তমান কাজের চারপাশে সেট করা আপেক্ষিক দক্ষতায় বৈচিত্র্য শুরু করার জন্য একটি ভাল লক্ষণ। অথবা আপনি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার একটি নতুন  দক্ষতা শিখতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ: আপনি লোগো ডিজাইনে ভাল এবং ক্লায়েন্টদের জন্য লোগো তৈরির সাথে সম্পর্কিত কাজ সম্পর্কে আত্ম বিশ্বাসী।তা দিয়ে কাজ শুরু করুন ক্লায়েন্টদের সাথে ।

বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স মার্কেট প্লেস এ পোস্ট করা জবগুলো ঘেঁটে দেখা আর বুঝার চেষ্টা করা এ ধরনের কাজে কি স্কিল্ লাগে। আপনি  নিজেই গুগল বা ইউটিউব রিসোর্স থেকে খুঁজে সেখান থেকে শিখতে পারেন,আবার চাইলে বিভিন্ন অনলাইনে কোর্স করতে পারেন।

৪।কি কাজ প্রথমে শিখবেন তা বুঝে কাজ শুরু করা

আপনি যা জানেন তা দিয়েই শুরু করবেন।সহজ কাজ দিয়ে শুরু করে স্কিল ডেভেলপ করে কঠিন  কাজে যুক্ত হওয়া উচিত।

ডাটা এন্ট্রি,আর্টিকেল লিখা,গ্রাফিক্স ডিজাইন ,কপি রাইটিং,মার্কেটিং, প্রেজেন্টেশন তৈরি এগুলো দিয়ে শুরু করতে পারেন। এরপরে কথিন কাজগুলো যেমন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট,সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট,ডিজিটাল মার্কেটিং এগুলো করতে পারেন এটাতে বেশি আয় করা যায় এবং প্রতিযোগিতা কিছুটা কম।

৫। নিজের ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং নির্ধারণ করুন

নিজের  ফ্রিল্যান্সিং প্রোফাইল এ প্রথমেই প্রোফাইল পিকচার হিসাবে ফরমাল পিকচার ব্যবহার করুন। প্রোফাইল আপডেট করুন যাতে আপনি সম্পর্কে আরও বেশি লোকজন জানতে পারেন।

Upwork, Freelancer.com এর মত জনপ্রিয় মার্কেট প্লেস এ ফ্রিল্যান্সিং স্কিল মিজারমেন্ট নামে একটা  এক্সাম  দেয়া যায় যাতে  অংশগ্রহন করলে আপনার প্রোফাইল টা অন্নদের কাছে আরো ভালভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন। 

আপনি এইমাত্র ডিজাইন করা লোগোটি ব্যবহার করে একটি ক্যালেন্ডার তৈরি, ভিজিটিং কার্ড তৈরির অনুশীলন করতে পারেন। এটি অবশ্যই কাজের একটি সমৃদ্ধ পোর্টফোলিও তৈরি করতে এবং আপনার দক্ষতা সম্প্রসারণে সহায়তা করবে।

 ৬। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং গ্রুপের সাথে সংযুক্ত থাকা

ফ্রিল্যান্সিং প্রায়শই অনলাইনে কাজ করার সাথে সম্পর্কিত তবে অনলাইন এবং অফলাইন উভয় যোগাযোগই অনুশীলন করতে হবে। আপনি যখন অনলাইনে সক্রিয় থাকেন এবং একই স্থানে এবং তার আশেপাশে ফ্রিল্যান্সিং গ্রুপের সাথে কথোপকথনে জড়িত হন তখন এটি একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের জন্য দুর্দান্ত সহায়তা করে। এটি করার মাধ্যমে আপনি ক্লায়েন্টদের জন্য করা কাজে আরও পারদর্শী হয়ে উথবেন

৭।মানিটাইজেশন পরিকল্পনা তৈরি করা

মানিটাইজেশন হল আনুস্থানিকভাবে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যাবহার করে আয় করারএকটা উপায় যেমন বিজ্ঞাপন, সদস্যতা,প্রচার ইত্যাদি। আপনার অর্থ নৈতিক উন্নয়ন আর ব্যবসার পরিকল্পনা করুন।আপনি কিভাবে আপনার প্রতিষ্ঠান কে চালাবেন সেটা ঠিক করবেন।

আপনার কাজ করার জন্য অনেক প্ল্যাটফর্মআছে  fiverr, freelancer, upwork  যে কোনোটাতে অ্যাকাউন্ট খুলে আপনার কাজগুল পোর্টফলিও আকারে সাজিয়ে রাখতে হবে। এরপর কাজের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

৮। প্রচার

নিজের কাজ নিজের প্রচার করতে হবে সামাজিক মাধ্যম,  ব্লগিং,বিজ্ঞাপন মাধ্যমের  সাহায্যে।

 ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা

ফ্রিল্যান্সিং করার সুবিধা অনেক রয়েছে।এটাতে বিশ্বব্যাপী কাজ করার সুযোগ আছে।  আপনি নিজেই নিজের কাজ বেছে নিতে পারছেন। সময়ের স্বাধীনতা হল ফ্রিল্যান্সিং এর আরেকটা সুবিধা । কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজের বেতন নিজেই ঠিক করা। বিভিন্ন ইন্সিটিউট এর সাথে কাজ করা। দলগত ভাবেও কাজ করা যায়। পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ আছে। নিজের মন মত কাজের পরিবেশ তৈরি করে কাজ করা যায়। এটাতে বেকার মানুষের কাজের ক্ষেত্র তৈরি হছছে।

 ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা

ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা ও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন নিরাপত্তা ও পেমেন্ট বিষয়ে সতর্ক থাকতে হই।নাহলে অনেক স্কেম এর শিকার হতে হয়।

স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে কারন অনেক ক্ষেত্রেই ক্লায়েন্ট এর চাহিদা অনুযায়ী কাজ করতে রাতে জেগে থাকতে হয়।বসে বসে কাজ করতে গিয়ে অনেকের পিঠেব্যথা  চোখেদেখতে অসুবিধা ক্লান্তি অনুভব হয়।

শেষকথা

উপরোক্ত আলোচনা থেকে উপলব্ধি করা যাই যে, সব সেক্টর এই কিছু সুবিধা অসুবিধা আছে। কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই অসুবিধাগুলোকে এড়িয়ে গিয়ে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। এটা একটা মেধার ব্যবসা। পরিশেষে সঠিক নির্দেশিকা মেনে পেশাদার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এগোলে এই সেক্টর এ ভালভাবে সফল হওয়া সম্ভব।

Leave a Comment