ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করে লাভবান কিভাবে হব

Spread the love

ই-কমার্স অনেক বড় একটি জায়গা। এখানে নতুন কিছু নিয়ে এসে কেউ তাড়াতাড়ি সফলতা পেতে পারে, কিন্তু সবার সফলতা কিন্তু একবারে আসবে না। সেক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে ব্যবসায় টিকে থাকতে হবে। গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা গেলে একসময় সফলতা আসবে।বাংলাদেশের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ই-কমার্স খাতে সফল হতে সময় লেগেছে। কিন্তু গ্রাহকদের আস্থা অর্জনের পর তাদের সফলতা বহুগুণ বেড়েছে।

ই-কমার্সের গুরুত্ব :

 সময়ে বহুল  আলোচিত অনলাইন প্লাটফর্ম হচ্ছে  ই-কমার্স । বর্তমানে ই-কমার্স সেক্টরে তরুণদের অনেক ঝোঁক বেড়েছে। দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো দিক।নতুন উদ্যোক্তাদের কাজে লাগালে দেশের বেকারত্ব অনেকখানি কমবে।   নিজের দক্ষতা ও  সৃজনশীলতার প্রয়োজন যে কোন কাজে সফলতা অর্জনের জন্য।

আজকে আমরা জানবো কিভাবে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করে লাভবান হতে পারি :

ডিজিটাল স্কিলস ফর বাংলাদেশ:

প্রথমে জেনে নিতে হবে ই- কমার্স সেক্ট্ররে কাজ করার জন্য ব্যাসিক স্কিল আছে না কি নেই। যদি না থাকে তবে ডিএসবি (ডিজিটাল স্কিলস ফর বাংলাদেশ) নামক ফেসবুক গ্রুপটি সেরা। তথ্য প্রযুক্তি ও ব্যবসা সম্পর্কিত জ্ঞানের সমন্বয়কৃত একটি প্ল্যাটফর্ম এটি। যেখান থেকে খুব সহজেই বিনা পয়সায় শেখা সম্ভব। লাখো মানুষ এখন শিখছেন ডিএসবিতে।

পন্য নির্বাচন:

যে পণ্যটি নিয়েই কাজ শুরু করেন না কেনো সেটা নিয়ে আপনাকে আদ্যপ্রান্ত জানতে হবে। পণ্যটি কোথায় পাওয়া যায়, কীভাবে উৎপাদন হয়, বাজারে চাহিদা কেমন, বাজারে এগুলো কীভাবে বিক্রি হয়? পণ্যের গুণগত মান পণ্যের ব্যবহারবিধিসহ বিস্তারিত আপনাকে জানতে হবে।

পন্য বিপনন:

অনলাইনে বেচার জন্য যত মাধ্যম আছে সেগুলোকে জানতে হবে। পণ্যটি অনলাইনে বিক্রি হলেও হাতে পৌঁছাবে অফলাইনে । মানে কীভাবে কাস্টমার হাতে পাবে, সেগুলো নিয়েও স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে।একজন ক্রেতা আপনার পণ্যটিই শুধু কেনে না, কেনে সেবাটাও।

 দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও সঠিক বাস্তবায়ন:

সুন্দর ও সাবলীল ওয়েবসাইট তৈরি। যাতে মোবাইল, ল্যাপটপ,ডেস্কটপ যেকোন মাধ্যম থেকে খুব সহজেই ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করতে পারে। কোন ধরণের বাধা ছাড়াই গ্রাহক পন্য বা সেবাটি অর্ডার করতে পারে।

পন্যের মান নির্বাচন:

পন্যের সঠিক মান নিশ্চিত করতে হবে। যদিওনিজস্বওয়েবসাইট ও পণ্যের বাজার তৈরির মাধ্যমে ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনা করতে বড় পুজির প্রয়োজন। তবে দীর্ঘমেয়াদি সফলতার জন্য এটার বিকল্প নেই।

সঠিক সময়ে পন্য সরবরাহ:

 ই-কমার্স ব্যবসায় সফলতার অন্যতম ধাপ হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গ্রাহকের নিকট অর্ডারকৃত পণ্যের সরবারহ নিশ্চিত করতে হবে। এর ফলে গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জনের পাশাপাশি আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। যা আপনার ই-কমার্স ব্যবসা সফলতার জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

কুরিয়ার সার্ভিস:

সঠিকভাবে পণ্য সরবরাহ করার জন্য কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থা রাখতে হবে।গ্রাহকের জন্য পণ্য প্রাপ্তি সহজ করে তুলবে। এর ফলে আপনার ব্যবসার সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।

ধৈর্য ও সৎ থাকা:

‘ই-কমার্স অনেক বড় একটি জায়গা। এখানে নতুন কিছু নিয়ে এসে কেউ তাড়াতাড়ি সফলতা পেতে পারে, কিন্তু সবার সফলতা কিন্তু একবারে আসবে না। সেক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে ব্যবসায় টিকে থাকতে হবে। গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা গেলে একসময় সফলতা আসবে।বাংলাদেশের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ই-কমার্স খাতে সফল হতে সময় লেগেছে। কিন্তু গ্রাহকদের আস্থা অর্জনের পর তাদের সফলতা বহুগুণ বেড়েছে।

অর্থায়ন:

সফলভাবে একটি ই-কমার্স ব্যবসা লাভের গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলির মধ্যে একটি হল আপনার অর্থের উপর নজর রাখা। আপনি যে ব্যবসাটি লাভ করার চেষ্টা করছেন তা পর্যাপ্তভাবে অর্থায়ন করার জন্য একটি সুস্থ নগদ প্রবাহ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে অর্থায়ন ট্র্যাক না করে, আপনি দ্রুত অতিরিক্ত ব্যয়, অপর্যাপ্ত তহবিল বা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগের সমস্যাগুলির মধ্যে পড়তে পারেন। যেসব ব্যবসার অর্থায়ন দুর্বল তারা নিজেদেরকে প্রসারিত করতে সংগ্রাম করতে পারে, তাদের প্রতিযোগিতাকে পেছনে ফেলে। উপরন্তু, আপনার খরচের ট্র্যাক না রাখলে এমন ত্রুটি হতে পারে যা আপনি কীভাবে আপনার ব্যবসা দেখবেন এবং পরিচালনা করবেন তার উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। ই-কমার্স ব্যবসায় লাভবান হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ টিপস, এটা অপরিহার্য যে সমস্ত আর্থিক ক্রিয়াকলাপ রেকর্ড এবং বাজেটে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়।

 ই-কমার্সের সুবিধা:

ই-কমার্স এর কয়েকটি সুবিধা হল সহজে পণ্য খুঁজে পাওয়া যায় এতে সময় বাঁচে। ব্যবসা পরিচালনায় খরচ কমায় যা ভালো ব্যবসায়ির পরিচয় দিয়ে থাকে। সহজে ক্রেতার কাছে পৌঁছা যায়।ঘরে বসেই ক্রেতারা প্রোডাক্টের নির্বাচন করতে পারে ইত্যাদি। 

ই-কমার্সের অসুবিধা :

সবসময় অনলাইনে একটিভ  অবস্থায় থাকা যায় না।যার কারনে অনেক গ্রাহক পন্য সামগ্রি কিনতে চায় না। 

যদি কখনো কোন সময়  পন্যের মান খারাপ হয় তাহলে গ্রাহক ছুটে যায়। পন্য ডেলিভারিতে দেরি করলে। পন্যের গুনগত মান খারাপ হলে। পন্যের ওয়েবসাইটের ডিজাইন ভালো করতে না পারলে। 

ওয়েবসাইট ডিজাইন :

ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরির প্রথম ধাপ। তবে ওয়েবসাইট তৈরির আগে অবশ্যই পূর্বে ই-কমার্স নাম বাছাই করতে হবে। প্রতিটি অনলাইন বিজনেসে একটি ওয়েবসাইট থাকা মানেই সফলতার হাতিয়ার থাকা। 

অ্যাপ তৈরি:

ওয়েবসাইট তৈরি করার সাথে সাথে সেই রিলেটেড অ্যাপও তৈরি করে ফেলতে হবে। কেননা এটি ছাড়া ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়। 

২৪/৭ ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা:

(Operating activities based on 24/7 ) : ই-কমার্স-এর অন্যতম সুবিধা হলো ক্রেতারা সপ্তাহের প্রতিদিন দিন-রাত ২৪ ঘন্টার যেকোনো সময় তারা তাদের প্রয়োজনীয় সেবা পেতে পারে। ক্রেতা তার সুবিধামতো সময়ে ই-কমার্স-এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবার কেনা-বেচা করতে পারে।

গ্রাহকের সেবা :  

গ্রাহকের সেবাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।  দ্রুততম সময়ে গ্রাহকের সকল প্রকার জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। পাশাপাশি পণ্য ফেরত দিলে পেমেন্ট রিটার্ন এর ব্যবস্থা দ্রুত ও সহজ করতে হবে। এর মাধ্যমে আপনার ই-কমার্স ব্যবসার ব্যাপারে গ্রাহকের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।

পরিকল্পনা :

 ক্রয়/ বিক্রয় সহজে হয় আর পণ্য খুঁজে পাওয়া ও সহজ। ব্যবসা পরিচালনায় খরচ কমায়।পণ্যের গুণগতমান উন্নয়ন করে।মার্কেটিং এবং  বাস্তবায়ন  তা কতটুকু ফলপ্রসূ তার হিসাব জানতে হলে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে যাতে পরবর্তীতে মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আরও উপযোগী ই-কমার্স মার্কেটিং কৌশল অবলম্বন করা যায়।

ব্যবসার নতুন ধারা তৈরি করেছে ই-কমার্স বিজনেস। সঠিক ই-কমার্স বিজনেস প্ল্যান বাস্তবায়নের মাধ্যমে ই-কমার্স বিজনেস এ সফল হওয়া সম্ভব।

Leave a Comment

You cannot copy content of this page