সুস্থ জীবনযাপন মানে শুধু রোগমুক্ত থাকা নয়, বরং শরীর ও মনকে সজীব এবং শক্তিশালী রাখা। নিয়মিত শরীরচর্চা এই লক্ষ্য পূরণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের হৃৎপিণ্ড, মাংসপেশী এবং হাড়কে সুস্থ রাখে, মেজাজ ভালো রাখে এবং মানসিক চাপ কমায়।
ছোট-বড় সবাই দৈনন্দিন জীবনে শারীরিক ব্যায়ামকে অন্তর্ভুক্ত করলে দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচতে পারে। এছাড়া নিয়মিত শরীরচর্চা আমাদের শক্তি, ধৈর্য এবং ফোকাস বাড়ায়। এই নিবন্ধে আমরা ১০টি সাধারণ প্রশ্নের মাধ্যমে দেখব কীভাবে শরীরচর্চা আমাদের সুস্থ জীবনধারায় সহায়ক এবং সহজভাবে প্রতিদিনের রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
১। শরীরচর্চা কেন গুরুত্বপূর্ণ? (Step 1: Why Exercise is Important)
শরীরচর্চা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অনেকেই ভাবেন, শুধু খাবারের দিকে মনোযোগ দিলেই সুস্থ থাকা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে, শরীরচর্চা ছাড়া আমাদের শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ থাকে না। শরীরচর্চা আমাদের মাংসপেশী শক্তিশালী করে, হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় এবং হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। এছাড়াও, নিয়মিত ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, হরমোনের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখে এবং শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।

শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই শরীরচর্চার সুবিধা পেতে পারে। ছোটদের জন্য হালকা দৌড়, লাফ, এবং খেলাধুলা মস্তিষ্ক এবং মাংসপেশীর উন্নতি ঘটায়। বড়দের জন্য হাঁটা, যোগব্যায়াম বা হালকা জিম ব্যায়াম মানসিক চাপ কমায় এবং শরীরকে সতেজ রাখে। একজন অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্ট বলেন, “প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করলে দীর্ঘমেয়াদে আমাদের জীবনের মান অনেক বৃদ্ধি পায়।”
শরীরচর্চা কেবল ফিট থাকার জন্য নয়, এটি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। ব্যায়ামের সময় শরীর এন্ডোরফিন নামক রাসায়নিক তৈরি করে, যা আনন্দ এবং প্রশান্তি দেয়। যদি আমরা প্রতিদিন নিয়মিত শরীরচর্চা করি, তাহলে ধীরে ধীরে মন স্থিতিশীল হয়, মানসিক চাপ কমে এবং ঘুমও ভালো হয়। এজন্য, ছোট ছোট সময় নিয়েও শরীরচর্চা শুরু করা উচিত। মনে রাখবেন, এটি কোনো কঠিন কাজ নয়, বরং একটি আনন্দদায়ক অভ্যাস যা জীবনকে সুস্থ, শক্তিশালী এবং সুখী করে তোলে।
২। শরীরচর্চা কিভাবে দৈনন্দিন রুটিনের অংশ করা যায়? (Step 2: How to Make Exercise Part of Daily Routine)
অনেকেই মনে করেন যে শরীরচর্চা করতে হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিম বা ব্যায়াম করতে হবে। কিন্তু সত্যি কথা হলো, শরীরচর্চা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট কাজের সঙ্গে সহজেই অন্তর্ভুক্ত করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, অফিস বা বাড়ি থেকে হেঁটে যাওয়া, সিঁড়ি ব্যবহার করা, বা সকালের হালকা স্ট্রেচ করা—এগুলোই শরীরচর্চার অংশ। ছোট ছোট পরিবর্তনও দীর্ঘমেয়াদে বড় প্রভাব ফেলে।

প্রথমে আমাদের একটি সঠিক সময় নির্ধারণ করতে হবে। সকাল বা সন্ধ্যা যেকোনো সময়ে ২০-৩০ মিনিট শরীরচর্চা করা সহজ। ছোট বাচ্চাদের জন্য খেলাধুলা বা সাইকেল চালানোও শরীরচর্চার অন্তর্ভুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, একজন মা তার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে প্রতিদিন ১৫ মিনিট পার্কে হাঁটেন। এতে শিশুরা খেলে আনন্দ পায়, আর মা নিজেও ফিট থাকেন। এছাড়াও, পরিবারের সবাই মিলে হালকা ব্যায়াম করলে আনন্দ এবং সুস্থতা একসাথে আসে।
শরীরচর্চা রুটিনে স্থায়িত্ব আনতে ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করা দরকার। প্রথমে ১০ মিনিট হাঁটা বা স্ট্রেচ দিয়ে শুরু করা যায়, ধীরে ধীরে সময় বাড়ানো যেতে পারে। একটি জার্নাল বা ফোন অ্যাপ ব্যবহার করে আমাদের ব্যায়ামের রেকর্ড রাখা যেতে পারে। এতে আমরা আমাদের অগ্রগতি দেখতে পাই এবং প্রেরণা পাই। মনে রাখবেন, নিয়মিত অভ্যাস গড়ে ওঠা মানেই দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ জীবন। ছোট পরিবর্তন এবং ধাপে ধাপে উন্নতি আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে শরীরচর্চা সহজভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে সাহায্য করে।
৩। নিয়মিত শরীরচর্চার শারীরিক উপকারিতা (Step 3: Physical Benefits of Regular Exercise)
নিয়মিত শরীরচর্চা আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশকে সুস্থ রাখে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি শুধু ওজন কমানোর জন্য নয়, বরং হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, হাড় ও মাংসপেশীর স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, নিয়মিত হাঁটা বা দৌড় হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য উন্নত করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। হালকা ভার উত্তোলন বা জিম ব্যায়াম মাংসপেশী শক্তিশালী করে এবং হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়।

শরীরচর্চা শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষমতাও বাড়ায়। যেমন যোগব্যায়াম বা ব্রিদিং এক্সারসাইজ ফুসফুসকে সুস্থ রাখে এবং অক্সিজেন সঠিকভাবে রক্তে পৌঁছাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের চর্বি কমায়, হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং শক্তি বৃদ্ধি করে। একজন ফিজিওথেরাপিস্ট বলেন, “শরীরচর্চা মানেই শরীরকে সচল রাখা, রোগ থেকে দূরে থাকা এবং দৈনন্দিন কাজে আরও শক্তিশালী হওয়া।”
শারীরিক উপকারিতার পাশাপাশি, শরীরচর্চা আমাদের দৈনন্দিন কাজ সহজ করে। শক্তিশালী পেশী এবং ফ্লেক্সিবল হাড় আমাদের চলাফেরা এবং দৈনন্দিন কাজ করার ক্ষমতা বাড়ায়। বাচ্চাদের জন্য খেলার সময় শক্তিশালী পেশী তাদের দৌড়, লাফ এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বড়দের জন্য এটি দৈনন্দিন কাজ যেমন বাজার করা, ধুলো পরিষ্কার বা লম্বা হাঁটা আরও সহজ করে। তাই, নিয়মিত শরীরচর্চা আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে সহজ, শক্তিশালী এবং রোগমুক্ত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪। নিয়মিত শরীরচর্চার মানসিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উপকারিতা (Step 4: Mental and Emotional Benefits of Regular Exercise)
শরীরচর্চা কেবল শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করে না, এটি আমাদের মানসিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়ামের সময় আমাদের মস্তিষ্ক এন্ডোরফিন এবং সেরোটোনিন নামে রাসায়নিক তৈরি করে, যা আনন্দ এবং প্রশান্তি প্রদান করে। এই কারণে ব্যায়াম করলে আমরা আরও খুশি এবং উদ্দীপনাময় বোধ করি। বিশেষ করে স্ট্রেসপূর্ণ দিনগুলিতে শরীরচর্চা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

শরীরচর্চা আমাদের মনোযোগ এবং ফোকাস বাড়ায়। উদাহরণস্বরূপ, সকালে হালকা যোগব্যায়াম বা হাঁটা করলে দিনের শুরুতে আমাদের মন সতেজ থাকে এবং কাজের উপর মনোযোগ ভালোভাবে কেন্দ্রীভূত হয়। শিশুদের জন্য খেলাধুলা ও শরীরচর্চা মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে এবং তারা আরও সক্রিয় ও সৃজনশীল হয়ে ওঠে। বড়দের জন্য এটি স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে এবং মানসিক ক্লান্তি কমায়।
এছাড়া, নিয়মিত শরীরচর্চা আত্মবিশ্বাস এবং ধৈর্যও বাড়ায়। একটি ছোট উদাহরণ—একজন ব্যক্তি প্রতিদিন ২০ মিনিট হেঁটে বা জিমে ব্যায়াম করলে ধীরে ধীরে তার শক্তি এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি পায়। এটি জীবনের অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়ও সহায়ক হয়। সামগ্রিকভাবে, শরীরচর্চা আমাদের মনকে শান্ত, মনোযোগী এবং উদ্দীপনাময় রাখে। সুতরাং, মানসিক সুস্থতার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৫। শরীরচর্চা শুরু করার সহজ উপায় ও টিপস (Step 5: Easy Ways and Tips to Start Exercising)
শরীরচর্চা শুরু করা অনেকের জন্য প্রথমে কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু ছোট ছোট ধাপে এটি খুবই সহজ হয়ে ওঠে। প্রথমে আমাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, “প্রতিদিন ১৫ মিনিট হাঁটব” বা “সপ্তাহে তিনবার যোগব্যায়াম করব।” ছোট লক্ষ্য সহজভাবে অর্জনযোগ্য এবং প্রেরণা বাড়ায়। ধীরে ধীরে সময় ও তীব্রতা বাড়ানো যায়।

একটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস হলো সময় ঠিক রাখা। সকালে বা সন্ধ্যায় যেকোনো সময় ব্যায়াম করতে পারা যায়, তবে নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করলে অভ্যাস গড়ে ওঠে। এছাড়া, ব্যায়ামকে আনন্দদায়ক করা গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, শিশুদের জন্য মজাদার খেলা, সঙ্গীত শুনে হাঁটা বা পরিবারের সঙ্গে ব্যায়াম করা যেতে পারে। এটি একঘেয়েমি কমায় এবং শরীরচর্চাকে রুটিনে স্থায়ী করে।
শরীরচর্চার জন্য সরঞ্জাম এবং স্থানও গুরুত্বপূর্ণ। ঘরে হালকা স্ট্রেচ, দড়ি লাফ, ব্যান্ড এক্সারসাইজ সহজে করা যায়। বাইরে পার্কে হাঁটাহাঁটি বা সাইকেল চালানোও খুব কার্যকর। এছাড়াও, জল বেশি খাওয়া, সঠিক ঘুম এবং পুষ্টিকর খাবার ব্যায়ামের প্রভাব আরও বাড়ায়। মনে রাখবেন, প্রথম দিন থেকেই শারীরিক সীমা অতিক্রম করার চেষ্টা না করে ধীরে ধীরে অভ্যাস তৈরি করা উচিত। নিয়মিত এবং আনন্দদায়ক শরীরচর্চা আমাদের শক্তিশালী, সুস্থ এবং সুখী জীবনের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।
উপসংহার (Conclusion)
নিয়মিত শরীরচর্চা সুস্থ জীবনযাপনের মূল ভিত্তি। এটি কেবল শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখে না, বরং মানসিক প্রশান্তি, শক্তি এবং উদ্দীপনাও বৃদ্ধি করে। ছোট ছোট ধাপে শুরু করে ধীরে ধীরে অভ্যাস গড়ে তুললে প্রতিদিনের জীবন আরও কার্যকর ও আনন্দদায়ক হয়।
পরিবারের সঙ্গে বা একা ব্যায়াম করাও সম্ভব এবং প্রতিটি প্রচেষ্টা আমাদের দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যবান ও সুখী রাখে। তাই আজই শুরু করুন—হাঁটা, যোগব্যায়াম বা খেলাধুলা, যা আপনার সুবিধাজনক, তা নিয়মিত অভ্যাসে রূপান্তরিত করুন এবং সুস্থ, শক্তিশালী জীবনযাত্রার পথে এগিয়ে যান।
সুস্থ জীবনযাপনের জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা সম্পর্কে 1০ টি সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর।
প্রশ্ন ১: কেন নিয়মিত শরীরচর্চা করা জরুরি?
শরীরচর্চা আমাদের শরীরকে সুস্থ, শক্তিশালী এবং রোগমুক্ত রাখে। এটি মাংসপেশী শক্তিশালী করে, হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় এবং হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। শুধু শারীরিক স্বাস্থ্য নয়, নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে এবং মনকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
নিয়মিত ব্যায়াম আমাদের দৈনন্দিন কাজ আরও সহজ করে। এটি শক্তি এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি করে। ছোট বাচ্চাদের জন্য খেলাধুলা ও বড়দের জন্য হাঁটা বা যোগব্যায়াম মানসিক শান্তি এবং সুখের অনুভূতি দেয়। এটি দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ জীবনযাত্রার জন্য অপরিহার্য।
প্রশ্ন ২: শরীরচর্চা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যে কী প্রভাব ফেলে?
নিয়মিত ব্যায়াম মস্তিষ্কে এন্ডোরফিন এবং সেরোটোনিন মুক্ত করে, যা আনন্দ এবং প্রশান্তি বাড়ায়। এটি মানসিক চাপ কমায়, উদ্বেগ দূর করে এবং মনকে সতেজ রাখে। একটি ছোট হালকা হাঁটা বা যোগব্যায়াম দিনকে আনন্দময় করে তোলে।
শরীরচর্চা ফোকাস এবং মনোযোগও বৃদ্ধি করে। এটি স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং মানসিক ক্লান্তি কমায়। শিশুদের জন্য খেলাধুলা সৃজনশীলতা বাড়ায়, আর বড়দের জন্য এটি আত্মবিশ্বাস এবং ধৈর্য বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।
প্রশ্ন ৩: কোন ধরণের শরীরচর্চা প্রতিদিন করা উচিত?
প্রতিদিনের জন্য সহজ এবং কার্যকর ব্যায়াম হল হাঁটা, হালকা দৌড়, সিঁড়ি চড়া এবং স্ট্রেচিং। শিশুদের জন্য খেলাধুলা, দৌড়ানো এবং লাফানো খুবই উপকারী। বড়দের জন্য যোগব্যায়াম, হালকা জিম এক্সারসাইজ এবং সাইকেল চালানো শরীর ও মনের জন্য ভালো।
এছাড়া, দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে ছোট ছোট ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, বাজার যাওয়া বা বাড়ির কাজ করার সময় সক্রিয় থাকা। নিয়মিত এবং হালকা ব্যায়াম ধীরে ধীরে শক্তি বাড়ায় এবং স্বাস্থ্য রক্ষা করে। এটি দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ জীবনযাত্রা নিশ্চিত করে।
প্রশ্ন ৪: প্রতিদিন কত সময় শরীরচর্চা করা উচিত?
প্রতিদিন কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট শরীরচর্চা করা উচিত। এটি হালকা হাঁটা, স্ট্রেচিং, যোগব্যায়াম বা হালকা জিম এক্সারসাইজ হতে পারে। ছোট ছোট সময়ও নিয়মিত করলে দীর্ঘমেয়াদে বড় উপকার হয়।
শিশুদের জন্য খেলাধুলা এবং খেলাধুলার মাধ্যমে ৩০ মিনিট সক্রিয় থাকা যথেষ্ট। বড়দের জন্যও ছোট ছোট ব্যায়াম দিনে তিনবার ১০ মিনিট করে করা যেতে পারে। নিয়মিত সময় নির্ধারণ করলে অভ্যাস সহজ হয় এবং শরীর ও মন উভয়ই সুস্থ থাকে।
প্রশ্ন ৫: বাচ্চাদের জন্য শরীরচর্চা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
শিশুরা প্রতিদিন খেলাধুলা এবং শরীরচর্চার মাধ্যমে তাদের মাংসপেশী, হাড় ও ফুসফুসের বিকাশ ঘটায়। এটি তাদের শক্তি বাড়ায়, ফোকাস উন্নত করে এবং সুস্থ রাখে। নিয়মিত খেলা মস্তিষ্কের সৃজনশীলতা এবং সামাজিক দক্ষতাও বৃদ্ধি করে।
ছোট বাচ্চাদের জন্য হালকা দৌড়, লাফানো এবং সাইকেল চালানো খুব উপকারী। এছাড়াও, পরিবারের সঙ্গে খেলাধুলা করলে তারা আনন্দ পায় এবং ব্যায়ামকে অভ্যাসে পরিণত করে। এটি তাদের দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যবান এবং সক্রিয় রাখে।
প্রশ্ন ৬: বড়দের জন্য শরীরচর্চার সবচেয়ে ভালো উপায় কী?
বড়দের জন্য নিয়মিত হাঁটা, যোগব্যায়াম, হালকা জিম ব্যায়াম এবং সাঁতার সবথেকে উপকারী। এগুলো হৃৎপিণ্ড, হাড় এবং মাংসপেশী সুস্থ রাখে। ছোট ছোট সময়ে এই ব্যায়াম করলে দৈনন্দিন কাজও সহজ হয়।
দৈনন্দিন জীবনে সক্রিয় থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সিঁড়ি ব্যবহার, পার্কে হাঁটা বা সাইকেল চালানো শরীরচর্চার অংশ হতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক চাপ কমায়, শক্তি বৃদ্ধি করে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যবান জীবন নিশ্চিত করে।
প্রশ্ন ৭: শরীরচর্চা ও ওজন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে সম্পর্ক কী?
নিয়মিত ব্যায়াম আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি পুড়িয়ে দেয় এবং মেটাবলিজম উন্নত করে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ফিট রাখে। শুধু ওজন কমানো নয়, ব্যায়াম পেশী শক্তিশালী করে এবং হাড়কে সুস্থ রাখে।
সুস্থ খাবারের সঙ্গে নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ওজন নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। ছোট ছোট ব্যায়াম যেমন হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইকেল চালানো দীর্ঘমেয়াদে ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। এটি শরীরকে আরও সতেজ এবং শক্তিশালী রাখে।
প্রশ্ন ৮: শরীরচর্চা শুরু করার আগে কি কিছু প্রস্তুতি দরকার?
শরীরচর্চা শুরু করার আগে হালকা স্ট্রেচিং এবং শরীরকে প্রস্তুত করা জরুরি। এটি পেশী ও জয়েন্টকে কোমল রাখে এবং আঘাতের সম্ভাবনা কমায়। এছাড়া, আরামদায়ক পোশাক এবং ভালো জুতো ব্যবহার করা উচিত।
পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং হালকা খাবার খাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়ামের আগে দেহকে ধীরে ধীরে উষ্ণ করা শরীরচর্চাকে নিরাপদ ও কার্যকর করে। প্রস্তুতি নিলে ব্যায়ামের সুবিধা আরও বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন ৯: নিয়মিত শরীরচর্চা কীভাবে শক্তি এবং সহনশীলতা বাড়ায়?
শরীরচর্চা পেশীকে শক্তিশালী করে এবং হাড়কে মজবুত রাখে। নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে ধৈর্য এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি পায়, যা দৈনন্দিন কাজ এবং বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক।
ছোট ছোট ব্যায়াম যেমন হাঁটা, দৌড়ানো বা স্ট্রেচিং শক্তি বাড়ায়। দীর্ঘমেয়াদে নিয়মিত শরীরচর্চা আমাদের আরও সতেজ, শক্তিশালী এবং সক্রিয় রাখে। এটি জীবনকে আরও আনন্দময় ও স্বাস্থ্যবান করে।
প্রশ্ন ১০: কিভাবে নিয়মিত শরীরচর্চাকে জীবনের অংশে পরিণত করা যায়?
নিয়মিত শরীরচর্চা অভ্যাসে পরিণত করতে ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত। প্রথমে ১০-১৫ মিনিট দিয়ে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে সময় ও তীব্রতা বাড়ান। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ব্যায়াম করলে এটি স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিণত হয়।
পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ব্যায়াম করলে এটি আরও আনন্দদায়ক হয়। হাঁটা, যোগব্যায়াম, খেলাধুলা বা হালকা জিম এক্সারসাইজ জীবনের অংশ করলে সুস্থতা, শক্তি এবং মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত হয়। নিয়মিত অভ্যাসই দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যবান জীবন নিশ্চিত করে।