ক্যারিয়ারের পথ অনিশ্চিত? স্কিল ডেভেলপমেন্ট করুন

Spread the love

অবশ্যই! ক্যারিয়ারের পথে অনিশ্চিিত সাধারণ একটি জিনিস এটা নিজেকে নির্দিষ্ট করা সংখ্যা পথের মধ্যে ভ্রমণ করার মত। কিন্তু এই অনিশ্চিতির সাথে কাজ করার সহায়ক একটি উপায় হল নিজের স্কিল এবং দক্ষতা ডেভেলপ করা। 

প্রথমে নিজের লক্ষ্য এবং আগ্রহ বুঝতে হবে। আপনি কি করতে চান কি অনুষ্ঠান করতে আগ্রহী সেইদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এরপরে যেদিকে যায় সেদিকে স্কেল ডেভেলপ করতে হবে 

আপনি যে কোন কিছু শেখা শুরু করতে পারেন। এটা হতে পারে নতুন কোন ভাষা কোর্স প্রোগ্রামিং দক্ষতা। বাজে কোন কাজের জন্য আবশ্যক সামগ্রী 

আরো অনেক উপায় আছে যা সাহায্য করতে পারে ক্যারিয়ার প্লানিং এবং অনিশ্চিত সম্মুখীন হতে। কি আপনার ক্যারিয়ারের পথে নির্দিষ্টএবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আগ্রহ নির্ধারণ করতে সাহায্য করতে পারেন 

কিভাবে সঠিক ক্যারিয়ার নির্বাচন করবেন 

আমাদের অনেকের মতে স্মার্ট ক্যারিয়ার মানে চাকরি। এর বাইরে যে সম্মানজনক আরো অনেক ক্যারিয়ার আছে তা আমরা জানিই না। সবার কথা শুনে যখন একটা ক্যারিয়ার পথ বেছে নেই দেখা যায় সেই কাজ করতে গিয়ে তা আর ভালো লাগছে না ক্যারিয়ার হয়ে পড়েছে বোঝা গবেষণায় দেখা গেছেআমেরিকাতে একজন মানুষ ৩ বার তার ক্যারিয়ার পথ পাল্টায় কিন্তু বাংলাদেশে চাইলেও তা সম্ভব হয় না আরেক গবেষণায় দেখা গেছে নিন্ম আয়ের দেশগুলোতে ৮৯%মানুষই তাদের চাকরি পছন্দ করেনা এবং তারাপরিবর্তন করতে চায় 

এ সমস্যাগুলোর সমাধান এভাবেই করা যায় শুরুতে নিজের ক্যারিয়ার নির্বাচনের সচেতন হওয়া সেহিসেবে নিজেকে তৈরি করা 

বিকল্প ক্যারিয়ার :

শিক্ষা জীবনে আমাদেরকে খুব কমই জানানো হয় যে ক্যারিয়ার মাত্রই চাকরি নয়।  উদ্যোক্ত হওয়া ফ্রিল্যান্সার স্বাধীন কনসালটেন্ট হওয়াএরকম আরো অনেক ক্যারিয়ার পথ আছে উদ্যোক্তা হলে নিজের কাজের যেমন স্বাধীনতা থাকে তেমনই অনেক মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা যায় বাংলাদেশের মত দেশ যেখানে ৪৭%শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বেকার। সেখানে উদ্যোক্ত হওয়ার চেষ্টা করাটা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হবে।বাংলাদেশে তরুণদের প্রতিষ্ঠা করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শ থেকে হাজার খানেক শিক্ষিত ছেলে মেয়ে কাজ করার সুযোগ পায়। 

দক্ষতা অর্জনের পর যখন আপনি কাজ করার জন্য প্রস্তুত তখন ক্যারিয়ারের জন্য একটি পথ হল ফ্রিল্যান্সিং। আজকের পর্বে আমরা সে বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করব।

ইচ্ছামত ঘুরি,ইচ্ছামত ঘুমাই

ফ্রিল্যান্সার  হলে ইচ্ছামত সময়ে ঘুম ইচ্ছামতো সময় ঘুম থেকে উঠলেও কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবে না। শুধুমাত্র সময় অনুযায়ী বায়ারের কাজ জমা দেওয়াটাই আসল কাজ। কাজ  দিনে করা হচ্ছে নাকি রাতে, সেটি  কারো জন্য টেনশনের বিষয় নয়।

  • হতে চাই নিজের বস 

ফ্রিল্যান্সার মানেই হচ্ছে নিজের বস নিজেই। কোন বসের বকাঝকা খাওয়ার ভয় এই জগতে নেই। প্রয়োজন হলে কাজ করব প্রয়োজন না হলে নতুন করে কোন কাজে যুক্ত হব না। কাজ না করলে কারো কোনো বাধা নেই।

  • জগৎটা ঘুরে দেখাটাই নেশা 

কোন জায়গাতে বসে বায়ারের  কাজ করছেন এবং জমা দিচ্ছেন সেটি ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নয়। আর এটাই হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং এর আসল মজা।ভ্রমণে বের হয়ে সমুদ্রে পাশে বসে কিংবা পাহাড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে বসে বায়ারের কাজ সম্পন্ন করা যায়। ঘুরাঘুরি এবং কাজ দুটি সমান তালের করার সুযোগ রয়েছে ফ্রিল্যান্সারদের।

  • দরকার বড় অংকের মাসিক আয় 

আমাদের দেশে অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা ছাত্র অবস্থাতে মাসে লাখ টাকার উপরে অনলাইন হতে আয় করছে। বাংলাদেশে একজন গ্রাজুয়েটে যেখানে চাকরিতে মাসিক বেতন হয় ১০০০০- ২০০০০ হাজার টাকা। অন্যদিকে অনেক ফ্রিল্যান্সারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, যাদের মাত্র এক সপ্তাহের আয়, অথচ সে ফ্রিল্যান্সার হয়তো এখনো গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করেনি।

  • চাকুরীর কারণে পরিবারকে মিস 

পরিবারের সবারে স্বপ্ন থাকে প্রতিবেলাতে সবাইকে সাথে নিয়ে এক টেবিলে বসে খাবার খাওয়া। চাকরিজীবেরা পরিবারের সব মানুষদের এই চাইতে মেটাতে না পারলে পক্ষে সম্ভব। কারণ ফ্রিল্যান্সারদের  কোন অফিসে যেয়ে কাজ করতে হয় না।

নির্দিষ্ট ছকে বন্দি থাকতে হয় না তারা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় পরিবারকে সময় দিতে পারে। 

  • মনতো চায় প্রতিষ্ঠানের মালিক হব 

একজন ফ্রিল্যান্সার জানে অনলাইন থেকে কিভাবে কাজ জোগাড় করতে হয়। এক থেকে দুই বছর যাওয়ার পর অনেক ফ্রিল্যান্সারদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। তখন সে কাজ করানোর জন্য তাকে বাধ্য হয়ে লোক  খুঁজে নিতে হয়। তখন পূরণ হয় আপনার বহুদিনের বস হওয়ার স্বপ্ন টি।

  • যানজট কমিয়ে দিচ্ছে কাজের সময়

যানজটে ঝামেলাতে বিরক্ত হয় অনেকেই সমাধান হিসেবে বেছে নিচ্ছে ফ্রিল্যান্সার পেশাটি। প্রতিদিন রুটিন মেনে ঘর থেকে বাইরে গিয়ে অফিস করা ঝামেলা থেকে মুক্ত হওয়া যায়। নিজের ঘরটায় অফিস আবার সেই অফিসে নিজেই বস।

  • ঘর থেকে বের হলেই অনিশ্চিত জীবন 

ফ্রিল্যান্সারদের জন্য রাস্তাঘাটে ঝামেলা মুক্ত জীবন। ঘরে বসে যদি চাকরিজীবীদের মতো ভালো টাকা আয় করা যায় তাহলে কেন রাস্তাঘাটে ঝুঁকি নিতে হবে? নিজের প্রয়োজন মত ঘর থেকে বের হওয়া যাবে সেটা তার রুটিন মাসে টেনশন না এরকম আরো অনেক কারণে চাকরিজীবী না হয়ে ফ্রিল্যান্সার হওয়া যেতে পারে 

দক্ষতাই চাবিকাঠি :

এখনকার সময় ক্যারিয়ারের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আর সার্টিফিকেট অনেকটা এন্ট্রি টিকেট  হিসেবে ব্যবহার হয় বাকি পুরোটাই নির্ভর করে দক্ষতার উপর। দেশের একজন নামকরা সফটওয়্যার প্রোগ্রামার  সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে পড়েছিলেন, দেশের অনেক বড় বড় ব্যাংকের উচ্চপদস্থ  ব্যাংকার ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা করা। 

মনে করুন আপনার ফটোগ্রাফি নিয়ে বেশ আগ্রহ আছে। এটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান।তাহলে দেরি না করে একটা ক্যামেরা জোগাড় করুন ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করুন কিভাবে অনেক সুন্দর ছবি তোলা যায়। ইউটিউবে হাজার এক্সপার্টদের পরামর্শমূলক টিউটোরিয়াল আছে হাজার হাজার বই আছে যা pdf আকারে ডাউনলোড করা যায়। প্র্যাকটিস করুন চেষ্টা থাকলে আপনি সফল হবেন। 

★★★ ২০২৪সালের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কিছু দক্ষতা সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকবে। এই দক্ষতা গুলো শিখলে আপনি একজন সফল ফিনান্সার হতে পারবেন।

  • কনটেন্ট রাইটিং 

কনটেন্ট রাইটিং সব সময় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে একটি জনপ্রিয় দক্ষতা। কোম্পানিগুলো তাদের ওয়েবসাইট ব্লক এবং অন্যান্য মিডিয়া গুলোর জন্য ভালো মানের কন্টেন্ট তৈরি করতে চায়। এই দক্ষতায় দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা সব সময় থাকবে। 

  • গ্রাফিক ডিজাইন 

গ্রাফিক ডিজাইন একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতা। কোম্পানিগুলো তাদের লগো ব্রচার ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য মার্কেটিং উপকরণগুলো ডিজাইন করতে ফ্রিল্যান্সারদের সাহায্য নেয়।তাই এ দক্ষতায় দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদাও অনেক।

  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট 

সোশ্যাল মিডিয়া এখন ব্যবসার জন্য একটি অপরিহার্য হাতিয়ার। কোম্পানিগুলো তাদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজ গুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করতে ফ্রিল্যান্সারদের  সাহায্য নেয়। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট একটি চাহিদা সম্পাদন ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতা।

  • ডিজিটাল মার্কেটিং

 

ডিজিটাল মার্কেটিং এখন ব্যবসার জন্য একটা অপরিহার্য কৌশল। কোম্পানিগুলো তাদের অনলাইন উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ডিজিটাল মার্কেটারদের  সাহায্য নেয়। 

  • কোডিং 

কোডিং হলো ওয়েবসাইট অ্যাপ এবং অন্যান্য সফটওয়্যার তৈরি করার জন্য একটি দক্ষতা। এই দক্ষতায় দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা সব সময় থাকবে। 

এই দক্ষতা গুলো ছাড়া  ফ্রিল্যান্সারদের জন্য আরো অনেক চাহিদা সম্পন্ন দক্ষতা আছে। নিজের দক্ষতা গুলো সনাক্ত করুন এবং সেগুলো উন্নয়ন করতে কাজ করুণ। আপনি কাজে যত বেশি দক্ষ হবেন তত বেশি ফ্রিল্যান্সিং প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগ পাবেন। 

কিভাবে এই দক্ষতাগুলো শিখবেন?

দক্ষতাগুলো শিখতে আপনি বিভিন্ন উপায় ব্যবহার করতে পারেন। অনলাইনে কোর্স করতে পারেন, বই পড়তে পারেন, বা কোন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায়টি খুঁজে বের করুন এবং সে অনুযায়ী শিখতে শুরু করুন।

★★★পরিশেষে বলা যায়, আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্সিংটাকে পেশা হিসেবে নিতে ভয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সামাজিক বাধা। তবে খুব শীঘ্রই অবশ্যই এর পরিবর্তন আসবে। তখন দেখা যাবে লোকাল অফিসগুলো ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তাদের লোক নিয়োগ দিবে। অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না ঘরে বসেই অফিস করার সুযোগ থাকবে। অনলাইনে যোগাযোগের এ যুগে সবকিছুতেই পরিবর্তন আসবে। 

Leave a Comment