“কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো রেজাল্ট করব?  সেরা ১০টি টিপস?” 

Spread the love

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ভালো রেজাল্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই রেজাল্ট আমাদের ভবিষ্যতের পথে বড় ভূমিকা রাখে। যেমন, ভালো রেজাল্ট করলে আমরা ভালো চাকরি পেতে পারি, উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাড়ে, আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং আমাদের পরিবারের গর্বও হয়ে ওঠে। অনেক সময় মনে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা অনেক কঠিন, অনেক বই পড়তে হয়, আর সময়ও কম। তবে চিন্তার কিছু নেই! সঠিক পরিকল্পনা এবং কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে সবাই ভালো রেজাল্ট করতে পারে।

আসলে ভালো রেজাল্ট করার জন্য শুধু অনেক সময় পড়াই নয়, বরং কীভাবে পড়া যায় সেটাও জানতে হবে। অনেকেই অনেক পড়ে কিন্তু ভালো রেজাল্ট পায় না, কারণ তারা ঠিকভাবে পড়ে না। পড়াশোনার সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে কম সময়েই ভালো ফলাফল আনা সম্ভব। আমি এই নিবন্ধে আপনাদের সাথে শেয়ার করব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো রেজাল্ট করার ১০টি সেরা টিপস যা প্রমাণিত ও ব্যবহারিক।

আপনি যদি এই টিপসগুলো মন দিয়ে মেনে চলেন, তাহলে নিশ্চিত ভালো রেজাল্ট পাওয়া আপনার হাতের মুঠোয় থাকবে। এখন চলুন, শুরু করি প্রথম ধাপ থেকে।

১। সঠিক পরিকল্পনা ও সময় ব্যবস্থাপনা করুন

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো রেজাল্ট পাওয়ার জন্য প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো পরিকল্পনা করা। ভাবুন, আপনার সামনে অনেক বিষয়, অনেক পড়াশোনার কাজ আছে। যদি আপনি পরিকল্পনা না করেন, তাহলে পড়াশোনা এলোমেলো হয়ে যাবে। অনেক সময় গুণে না করে এলোমেলোভাবে পড়লে ভালো ফল আসার সম্ভাবনা কমে যায়।

সঠিক পরিকল্পনা মানে হলো, আপনার প্রতিদিনের সময় ভাগ করে নেওয়া। যেমন, কোন বিষয় কখন পড়বেন, কতক্ষণ পড়বেন, বিরতি কখন নেবেন—সবকিছু ঠিক করে নিন। এতে আপনার পড়াশোনার সময় নষ্ট হবে না, এবং মাথা পরিষ্কার থাকবে।

সময় ব্যবস্থাপনা করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে:

  • প্রতিদিন ঠিক সময়ে পড়াশোনা শুরু করুন।
  • বড় বড় বিষয় একসাথে না পড়ে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করুন।
  • পড়াশোনার মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিন, কারণ দীর্ঘক্ষণ একটানা পড়লে মনোযোগ কমে।
  • পরীক্ষার আগে নিজের দুর্বল বিষয়গুলোর জন্য বেশি সময় রাখুন।

একটি সিম্পল রুটিন তৈরি করুন। যেমন: সকাল ৮টা থেকে ৯টা বাংলা, ৯টা থেকে ১০টা ইংরেজি, ১০টা থেকে ১০:৩০টা বিরতি, তারপর অন্য বিষয় ইত্যাদি। এই রুটিন মেনে চললে আপনি দেখতে পাবেন পড়াশোনা অনেক সহজ এবং মনোযোগপূর্ণ হচ্ছে।

তাই, নিজের পড়াশোনার জন্য একটি বাস্তবসম্মত সময়সূচি বা পরিকল্পনা তৈরি করুন। এতে আপনি নিয়মিত পড়াশোনা করবেন, চাপ কম থাকবে এবং রেজাল্টও ভালো আসবে।

২। মনোযোগ সহকারে এবং বুঝে পড়াশোনা করুন

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় শুধু বইয়ের পাতা উল্টিয়ে যাওয়া নয়, বরং মনোযোগ দিয়ে বিষয়গুলো বুঝে নেওয়াই সবচেয়ে জরুরি। অনেক সময় দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা শুধু মুখস্থ করার চেষ্টা করে, কিন্তু ভালো করে বুঝে না। এতে পরীক্ষা হলে মনে থাকে না, এবং রেজাল্ট ভালো হয় না।

আপনার পড়ার সময় পুরোপুরি মনোযোগ দিন। মোবাইল ফোন, টিভি, কিংবা অন্য কোনো বিরক্তিকর জিনিস থেকে দূরে থাকুন। মনোযোগ না দিলে খুব সহজেই মন পড়াশোনার বাইরে চলে যায়। তাই পড়ার পরিবেশ এমন হওয়া উচিত যেখানে শান্তি থাকে এবং আপনি সহজে ফোকাস করতে পারেন।

আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো পড়ার বিষয়গুলো ভালো করে বোঝার চেষ্টা করুন। কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে লেকচারার, সিলেবাস, বা টেক্সটবুক পুনরায় দেখুন। বন্ধুদের সাথে আলোচনা করুন, কারণ কারো কাছে যদি সহজভাবে বুঝতে পারেন, তা হলে আপনার ধারণা আরও পরিষ্কার হবে।

প্রশ্ন করুন নিজের কাছে: “আমি এটা কি বুঝেছি? এটা আমাকে কীভাবে সাহায্য করবে?” এই ভাবনাটা আপনাকে বুঝতে সাহায্য করবে, আর মুখস্থ করার পরিবর্তে অন্তর্দৃষ্টি তৈরি করবে।

অর্থাৎ, শুধু পড়া নয়, বুঝে পড়া হলো সফলতার চাবিকাঠি। বুঝে পড়লে পরীক্ষার সময় চিন্তা করতে হবে না, উত্তর আসবে সহজেই।

৩। নিয়মিত নোট তৈরি করুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনায় নোট তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। শুধু বই পড়ে গেলে অনেক বিষয় মাথায় ঠিক মতো থাকে না। আর পরীক্ষার সময় সবকিছু আবার শুরু থেকে পড়তে গেলে সময় কম লাগে। তাই নিয়মিত নোট নেওয়া আপনার পড়াশোনাকে সহজ করবে।

নোট মানে হলো বইয়ের বা লেকচারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষিপ্ত করে লিখে রাখা। বড় বড় লেখা ছোট ছোট অংশে ভাগ করা এবং প্রধান পয়েন্টগুলো তুলে ধরা। এতে পড়ার সময় শুধু নোট দেখে দ্রুত প্রস্তুতি নেওয়া যায়।

নোট নেওয়ার সময় কিছু বিষয় মনে রাখবেন:

  • গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো আলাদা করে হাইলাইট করুন বা রঙ ব্যবহার করুন।
  • সহজ ভাষায় লিখুন, যেন পরে পড়তে সুবিধা হয়।
  • টেবিল, তালিকা বা ডায়াগ্রাম ব্যবহার করলে বিষয়গুলো বুঝতে সহজ হয়।
  • নিয়মিত নোট রিভিউ করুন, নতুন কিছু শিখলে তা যুক্ত করুন।

নোট তৈরির একটি বড় সুবিধা হলো, পরীক্ষার সময় প্রস্তুতি নেওয়া অনেক দ্রুত হয় এবং স্মৃতি তাজা থাকে। এছাড়া নিজে যখন নোট বানাবেন, তখন বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।

তাই পড়াশোনার সময় আপনার নিজস্ব একটি নোটবুক রাখুন এবং সেখানেই লেকচার বা বই থেকে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট লিখে নিন। এটি আপনার সময় বাঁচাবে এবং ভালো রেজাল্ট আনতে সাহায্য করবে।

৪। নিয়মিত রিভিশন বা পুনরাবৃত্তি করুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনায় একবার পড়ে নেওয়া যথেষ্ট নয়। যেকোনো বিষয় ভালোভাবে স্মরণ রাখতে নিয়মিত রিভিশন করা খুব জরুরি। রিভিশনের অর্থ হলো আগে যা শিখেছেন, তা আবার পড়া বা ভাবা, যাতে মনে ভালভাবে ধরে থাকে।

অনেক সময় পড়াশোনার পরে সময় না দেওয়া হলে বিষয়গুলো ধীরে ধীরে মনের থেকে হারিয়ে যায়। তাই পড়াশোনার পরে নিয়ম করে বিষয়গুলো পুনরায় পড়া বা নোট দেখে নেওয়া উচিত।

কিছু সহজ নিয়ম রিভিশনের জন্য:

  • প্রতিদিনের পড়াশোনার শেষে ছোট করে একটু রিভিশন করুন।
  • সপ্তাহে একবার পুরো সপ্তাহের পড়াশোনা পুনরায় দেখুন।
  • মাসে অন্তত একবার বড় রিভিশন দিন, যাতে আগের বিষয়গুলো পুরোপুরি মনে থাকে।
  • বন্ধুদের সাথে মিলিত হয়ে পড়া বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন, এতে রিভিশন অনেক ভালো হয়।

রিভিশন করলে নতুন করে পড়তে হয় না, বরং যা শিখেছেন তা মনে থাকে এবং পরীক্ষায় প্রশ্ন আসলে সহজে উত্তর দিতে পারেন। আপনি যদি নিয়মিত রিভিশন করেন, তাহলে পড়াশোনার চাপও কম অনুভব করবেন।

তাই মনে রাখবেন, নিয়মিত রিভিশন হল সফলতার গোপন চাবিকাঠি। এটা আপনাকে শুধু ভালো রেজাল্টই দেবে না, একই সাথে পড়াশোনা অনেক মজার ও আনন্দময় করে তুলবে।

৫। পরীক্ষার জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিন

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার জন্য শুধু পড়াশোনা করা নয়, পরীক্ষার জন্য সঠিক প্রস্তুতিও জরুরি। অনেক সময় পড়াশোনা ঠিক মতো করেও পরীক্ষা হলে সঠিক প্রস্তুতি না থাকায় ফল ভালো হয় না।

প্রথমে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে আপনার পড়াশোনার পরিকল্পনা পরিবর্তন করুন। এ সময় নতুন কিছু শেখার চেয়ে আগের পড়া বিষয়গুলো ভালো করে রিভাইজ করুন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে কিছু টিপস:

  • প্রশ্নপত্রের ধরন বা সিলেবাস ভালো করে বুঝে নিন।
  • পুরানো প্রশ্নপত্র দেখে প্রশ্নের ধরন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বুঝুন।
  • নিজে মক টেস্ট দিন, অর্থাৎ নিজের মতো করে সময় নিয়ে প্রশ্নের উত্তর লিখে দেখুন।
  • পরীক্ষার দিনে কোন বিষয় প্রথমে করবেন সেটা পরিকল্পনা করুন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পরীক্ষার আগের রাতে ভাল ঘুম নিন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নিলে পরিক্ষায় মনোযোগ কমে যায়।

পরীক্ষার সময় কৌশলগত ভাবে কাজ করলে আপনি অনেক বেশি নম্বর পেতে পারবেন। তাই শুধুমাত্র পড়াশোনা নয়, পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার মনে রাখার কথা: ভালো প্রস্তুতি, সঠিক পরিকল্পনা আর আত্মবিশ্বাস থাকলে পরীক্ষায় সফল হওয়া সহজ।

৬। স্বাস্থ্য ভালো রাখুন এবং নিয়মিত বিশ্রাম নিন

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো রেজাল্ট করার জন্য শুধু পড়াশোনাই নয়, আপনার শরীর ও মন ভালো থাকা খুব জরুরি। যদি আপনি অসুস্থ থাকেন বা ক্লান্ত থাকেন, তাহলে পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যাবে এবং রেজাল্ট ভালো হবে না।

সুতরাং, প্রতিদিন নিয়মমতো ঘুমানো, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকালে সঠিক সময়ে উঠুন, দিনে কিছুটা হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করুন। এতে আপনার শরীর ফিট থাকবে এবং মন সতেজ থাকবে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো পড়ার সময় মাঝেমধ্যে বিরতি নেওয়া। একটানা পড়লে মন ক্লান্ত হয়ে যায়। প্রতি ৪৫-৫০ মিনিট পড়ার পর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন। এই বিরতিতে পানি খান বা সামান্য হাঁটাহাঁটি করুন। এতে আবার মনোযোগ ফিরে আসবে।

তাছাড়া মোবাইল, টিভি বা কম্পিউটার থেকে বিরতি নিন, কারণ অতিরিক্ত স্ক্রীন টাইম চোখের ক্লান্তি বাড়ায় এবং মনোযোগ হারায়।

সুতরাং, ভালো ফলাফল পেতে হলে শরীর ও মনের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি। সুস্থ থাকলে পড়াশোনা আরও আনন্দদায়ক হবে এবং আপনি নিজের লক্ষ্য সহজে অর্জন করতে পারবেন।

৭। অনলাইন ও অন্যান্য উৎস থেকে শিক্ষার সুযোগ নিন

বর্তমান সময়ে শুধু বই আর ক্লাসের উপর নির্ভর করলেই হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো রেজাল্ট করার জন্য অনলাইন ও অন্যান্য উৎস থেকে শেখার সুযোগ নেওয়াও খুবই জরুরি। আজকাল অনেক ইউটিউব ভিডিও, অনলাইন কোর্স, পডকাস্ট, ওয়েবসাইট আছে যেগুলো থেকে আপনি যেকোনো বিষয় সহজে এবং মজাদারভাবে শিখতে পারেন।

যদি কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হয়, তাহলে শুধু বই না পড়ে অনলাইনে ভিডিও দেখুন, টিউটোরিয়াল শুনুন বা আলোচনায় অংশ নিন। অনেক সময় অন্য কারো সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা শুনলে বিষয়গুলো অনেক স্পষ্ট হয়।

আরেকটি সুবিধা হলো অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে আপডেটেড তথ্য পাওয়া যায়। বিশেষ করে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি বা সাম্প্রতিক বিষয়ে বইয়ের তথ্য একটু পুরোনো হতে পারে। অনলাইনে থাকা নতুন তথ্যগুলো আপনার পড়াশোনাকে আরও গভীর করে তোলে।

তাছাড়া লাইব্রেরি, গ্রুপ স্টাডি বা সেমিনারেও অংশগ্রহণ করুন। এতে নতুন ধারণা পাবেন এবং নিজের জ্ঞান বাড়বে।

তাই, বর্তমান যুগের সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনলাইন ও অন্যান্য উৎস থেকে শেখার চেষ্টা করুন। এটি আপনার পড়াশোনাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল আনতে সাহায্য করবে।

৮। প্রশ্ন করতে ভয় পাবেন না, শিক্ষক ও সহপাঠীদের সাহায্য নিন

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে যদি কোনো বিষয় বুঝতে অসুবিধা হয়, তাহলে সেটা গোপন রাখবেন না। প্রশ্ন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রশ্ন করার মাধ্যমে আপনি বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।

আপনার শিক্ষকরা অভিজ্ঞ এবং অনেক কিছু জানেন। যদি কোনো বিষয়ে প্রশ্ন থাকে, তাহলে ক্লাসে অথবা পরে শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করুন। তারা আপনার ভুল বুঝা বিষয় স্পষ্ট করে দিবেন এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেখাবেন।

এছাড়াও, সহপাঠী বা বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করুন। কখনো কখনো বন্ধুরা এমন কিছু সহজ উপায় বা স্মার্ট ট্রিকস জানায় যা আপনাকে সাহায্য করবে।

প্রশ্ন করার সময় ভয় পাওয়া ঠিক নয়। মনে রাখবেন, যাদের প্রশ্ন থাকে, তারাই প্রকৃতপক্ষে শেখার আগ্রহী। অন্যদের থেকেও আপনি অনেক কিছু শিখতে পারেন।

সুতরাং, পড়াশোনায় কোনো সন্দেহ বা সমস্যা হলে দ্রুত প্রশ্ন করুন এবং সাহায্য নিন। এটি আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করবে এবং পড়াশোনার মান উন্নত করবে।

৯। নিজেকে উৎসাহিত করুন এবং ধৈর্য ধরুন

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা মাঝে মাঝে কঠিন এবং ক্লান্তিকর মনে হতে পারে। অনেক সময় মন পড়াশোনায় কম যায় বা হতাশা আসতে পারে। এই সময়েই নিজেকে উৎসাহিত করা খুব জরুরি।

নিজেকে বলুন, “আমি পারব!” এবং ছোট ছোট সাফল্যের জন্য নিজেকে প্রশংসা করুন। যেমন, আজকের পড়াশোনা শেষ করলাম, একটিভিটিতে ভালো করলাম—এসব ছোট খুশি আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

এছাড়া ধৈর্য ধরে নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। কখনো একটু বিরতি নিলেও লেগে থাকার মানসিকতা রাখতে হবে। কারণ সফলতা আসে ধীরে ধীরে, একদিনে নয়।

নিজের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং তা অর্জনে মনোযোগ দিন। কখনো অন্যের সাথে নিজের তুলনা করবেন না, কারণ প্রত্যেকের শেখার গতি আলাদা।

বন্ধু, পরিবারের সঙ্গে কথা বলুন, তাদের থেকে ভালো পরামর্শ নিন। তারা আপনার পাশে থাকবে, যা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।

সুতরাং, নিজেকে প্রেরণা দিন, ধৈর্য ধরুন এবং সবসময় মনে রাখুন — কঠোর পরিশ্রম ও সঠিক দিশা নিয়ে আপনি অবশ্যই ভালো রেজাল্ট করবেন।

১০। ভালো ফলাফল আনতে নিজের ভুল থেকে শিখুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনায় সবসময় সফল হওয়া সম্ভব না। মাঝে মাঝে ভুল হবে, কম নম্বর পাবেন, বা প্রত্যাশা মতো ফলাফল আসবে না। কিন্তু এই ভুলগুলোকে দুঃখের বিষয় না করে শেখার সুযোগ হিসেবে নিন।

আপনি যেসব বিষয়ে দুর্বল, সেগুলো চিহ্নিত করুন এবং কেন সেটা হয় বুঝে নিন। হয়তো পড়ার পদ্ধতিতে সমস্যা, হয়তো সময় দিতে পারিনি, বা বুঝতে অসুবিধা হয়েছে। এরপর সেই ভুলগুলো ঠিক করার চেষ্টা করুন।

ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া মানে হলো নিজের দুর্বলতা চেনা এবং পরবর্তী সময়ে উন্নতি করার প্রচেষ্টা। কোনো পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে হতাশ না হয়ে, সেটাকে নিজের শক্তি বাড়ানোর একটা ধাপ মনে করুন।

নিজের ভুল নিয়ে মনোযোগী হলে পরবর্তীতে সেই বিষয়গুলোতে ভালো ফলাফল আনা সহজ হয়। এছাড়া শিক্ষক, বন্ধু বা পরিবারের থেকে পরামর্শ নিয়ে আপনার দুর্বলতা দূর করার পথ খুঁজে বের করুন।

সুতরাং, ভুল থেকে শিক্ষা নিন, আত্মসমালোচনা করুন এবং সেগুলো বদলে নতুন করে এগিয়ে যান। এতে আপনার পড়াশোনা আরও ফলপ্রসূ হবে এবং আপনি নিশ্চিতভাবেই ভালো রেজাল্ট পাবেন।

উপসংহার: নিজের সেরা চেষ্টা করুন, সফলতা আপনার হাতেই

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো রেজাল্ট করার জন্য শুধু কঠোর পরিশ্রম করলেই হবে না, সঠিক পদ্ধতি, পরিকল্পনা এবং ধৈর্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই নিবন্ধে যে ১০টি টিপস শেয়ার করলাম, সেগুলো মেনে চললে পড়াশোনা অনেক সহজ ও ফলপ্রসূ হয়ে উঠবে।

সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করুন, মনোযোগ দিয়ে বুঝে পড়ুন, নিয়মিত নোট নিন ও রিভিশন করুন। পরীক্ষার জন্য ভালো প্রস্তুতি নিন, নিজের স্বাস্থ্য বজায় রাখুন, নতুন জায়গা থেকে শেখার সুযোগ নিন, প্রশ্ন করতে ভয় পাবেন না, নিজেকে উৎসাহিত করুন এবং ভুল থেকে শিখুন—এসব নিয়ম অনুসরণ করলে সফলতা নিশ্চিত।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা এবং কখনো হাল ছাড়বেন না। কারণ সফলতা আসে ধৈর্য এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে। আপনার লক্ষ্য স্পষ্ট থাকলে এবং টিপসগুলো মেনে চললে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো রেজাল্ট অর্জন আপনার পক্ষে খুব সহজ হবে।

সুতরাং, আজ থেকেই এই টিপসগুলো আপনার দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে নিন এবং নিজের সেরা প্রদর্শন করুন। আপনার उज्ज্বল ভবিষ্যত আপনার অপেক্ষায়!

Leave a Comment

You cannot copy content of this page