CV লেখার নিয়ম | চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম জেনে নিন

Spread the love

CV লেখার নিয়ম | চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম– আমরা কম-বেশি সকলেই জানি চাকরি মানেই সিভি। বিশেষ করে যে কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিতে বা চাকরিতে যোগদান করতে হলে অবশ্যই নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানে সিভি সহ আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র জমা দিতে হয়। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবিদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সিভি ড্রপ করতে হয়। আমরা অনেকেই ভাল মানের বা প্রফেশনাল লুকের সিভি তৈরী করতে পারি না। আজ আমরা জানতে চেষ্টা করব প্রফেশনাল বা ভাল মানের CV লেখার নিয়ম কি এবং পরবর্তীতে নতুন কোন চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম জেনে তবেই সিভি তৈরী করব।

CV লেখার নিয়ম | চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম

চাকরিতে যোগদানের প্রথম ধাপই হলো নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বরাবর সিভি সহ আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র জমা দেওয়া। সিভির মাধ্যমেই প্রার্থীর পরিচয়, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি সহ সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট প্রকাশ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে সিভিতে নিজেকে উপস্থাপন করার ধরণ দেখেই নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ প্রার্থী সম্পর্কে সহজেই বুঝতে পারেন। সিভির উপর নির্ভর করেই অনেকে চাকরি পেয়ে থাকেন। এজন্য কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য সিভি সাবমিট করার জন্য প্রফেশনাল সিভি তৈরী করা উচিত।

CV (সিভি) বলতে কি বুঝায়-

CV সংক্ষিপ্ত রূপ। এর পরিপূর্ণ রূপ হলো Curriculum Vitae যার অর্থ জীবন বৃত্তান্ত। এক কথায় CV সেই বিষয়কে বলা হয় যা একজন মানুষের শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে চাকরি জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। CV সাধারণত চাকরির ক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া বর্তমানে অন্যান্য ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার করা হয়। তন্মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ। যথা-

ক) চাকরির সিভি
খ) বিবাহের সিভি

চাকরির সিভিতে কি কি উল্লেখ করতে হয়-

ক) নিজ নাম
খ) পিতার নাম
গ) মাতার নাম
ঘ) ঠিকানা (স্থায়ী ও বর্তমান)
ঙ) মোবাইল নম্বর
চ) ই-মেইল
ছ) শিক্ষাগত যোগ্যতা
জ) অভিজ্ঞতা
ঝ) জন্ম তারিখ
ঞ) ধর্ম
ট) জাতীয়তা
ঠ) ট্রেনিং/প্রশিক্ষণ
ড) সিভির তথ্য সম্পর্কে অঙ্গীকার
ঢ) স্বাক্ষর ও তারিখ
ণ) পরিশেষে সিভি তৈরী করা শেষ হলে সদ্য তোলা পরিস্কার এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি যুক্ত করতে হয়।

বিবাহের সিভিতে উল্লেখিত বিষয়গুলো-

বিবাহের সিভি ও চাকরির সিভির মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। বিবাহের সিভিতে নিজের পরিপূর্ণ বর্ণনা সহ পিতা-মাতা, ভাই-বোনের পেশা ও অবস্থান উল্লেখ করতে হয়। এছাড়া পিতা-মাতা উভয়ের আত্মীয়-স্বজন সম্পর্কে সিভিতে উল্লেখ করতে হয়। যেমন-

ক) নিজ নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল, ফেসবুক প্রোফাইল, লিংকডিন প্রোফাইল, হোয়াটস্এ্যাপ নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, অভিজ্ঞতা, শখ, ওজন ও উচ্চতা ইত্যাদি উল্লেখ করতে হয়। এছাড়া সদ্য তোলা 4R অথবা 5R সাইজের সুন্দর লুকিং এর এক কপি ছবি সিভির সাথে সংযুক্ত করে দিতে হয়।

খ) পিতা-মাতা, ভাই-বোন এর নাম, ঠিকানা (স্থায়ী ও বর্তমান), পেশা (চাকরিজীবি হলে- বর্তমান কোম্পানীর নাম, ঠিকানা, পদবী | ব্যবসায়ী হলে- ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, পজিশন | প্রবাসী হলে- দেশের নাম, কোম্পনীর নাম, ঠিকানা ও পদবী) উল্লেখ করতে হয়।

গ) পিতার কূলের আত্মীয়-স্বজন যেমন- দাদা-দাদী, চাচা-চাচী, ফুফু-ফুফা ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গের নাম, ঠিকানা (স্থায়ী ও বর্তমান) ও পেশা উল্লেখ করতে হয়।

ঘ) মাতার কূলের আত্মীয়-স্বজন যেমন- নানা-নানী, মামা-মামী, খালা-খালু ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গের নাম, ঠিকানা (স্থায়ী ও বর্তমান) ও পেশা উল্লেখ করতে হয়।

CV কত প্রকার ও কি কি?

সিভিকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

ক) Chronological (ক্রনোলজিক্যাল)
খ) Functional (ফাংশনাল)
গ) Combined (কম্বাইন্ড)

Chronological (ক্রনোলজিক্যাল) সিভি- ক্রনোলজিক্যাল সিভিতে পেশাগত সর্বশেষ প্রতিষ্ঠান, পদবী, দায়িত্ব এবং দায়িত্বকাল অভিজ্ঞতার প্রথমাংশে উল্লেখ থাকে। নিয়োগদাতা কর্তৃপক্ষ এ ধরনের সিভি পছন্দ করেন। কেননা তারা Chronological সিভি থেকে প্রার্থীর সর্বশেষ পেশাগত অবস্থান খুব সহজেই জানতে পারেন।

Functional (ফাংশনাল) সিভি- ফাংশনাল সিভিতে দক্ষতা অনুযায়ী শিরোনাম ব্যবহার করতে হয়। যে বিষয়ে আপনি অধিক দক্ষ এবং সফলতা অর্জন করেছেন তা দক্ষতা অংশের প্রথমে উল্লেখ করতে হয়। এই ফরমেটের ব্যবহার তখনই করতে হয় যখন আপনি পেশা পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন অথবা চাকরিতে অনেকদিন গ্যাপ হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় চাকরিতে যোগদান করতে চাচ্ছেন।

Combined (কম্বাইন্ড) সিভি- উপরোল্লেখিত উভয় সিভির সমন্বয়ে কম্বাইন্ড সিভি তৈরী করা হয়।

সিভির দৈর্ঘ্য (Length)-

আমাদের অনেকের ধারণা সিভি যত বড় হবে ততই ভালো। এ ধারণাটি আসলে ঠিক নয়। কারণ সিভি যত বড় হবে পড়তে ততো সময় লাগবে। সম্প্রতি একটি জরিপ থেকে জানা যায়- নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ একটি সিভি দেখতে ১ মিনিট বা তার কম সময় ব্যয় করেন। এজন্য সিভিতে অল্প কথায় নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করা উচিত যাতে করে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অল্প সময়ে খুব সহজেই আপনার সম্পর্কে জানতে পারেন। ০২ (দুই) পৃষ্ঠার মধ্যে সিভি তৈরী করার চেষ্টা করতে হবে। অবশ্য যাদের অভিজ্ঞতার বিবরণ বেশী তারা প্রয়োজন অনুযায়ী পৃষ্ঠা বাড়াতে পারেন। তবে এক্ষেত্রেও চেষ্টা করতে হবে সিভিতে যে বিষয়গুলো উল্লেখ না করলেও চলবে সেগুলো অবশ্যই এড়িয়ে চলা উচিত।

প্রফেশনাল সিভি বলতে কি বুঝায় বা CV লেখার নিয়ম কি

সিভির শিরোনাম (Heading)-

আমরা গতানুগতিক যে ধরণের সিভি তৈরী করে থাকি তার শিরোনামে Curriculum Vitae অথবা Resume লিখে থাকি। শিরোনামে Curriculum Vitae লিখলে সিভির Professionalism বা Outlooking নিম্নমানের হয়ে যায়। বর্তমানে সিভির প্রফেশনাল ফরম্যাট অনুযায়ী শিরোনামে নিজের নাম উল্লেখ করতে হয়। শিরোনামে নিজের নাম উল্লেখ করলে সিভির স্মার্টনেস অনেক বেড়ে যায়। শিরোনামের নিচের লাইনে পর্যায়ক্রমে মোবাইল নম্বর, হোয়াটস্এ্যাপ নম্বর, ই-মেইল, ফেসবুক প্রোফাইল লিংক, লিংকডিন প্রোফাইল লিংক (যদি থাকে), জন্ম তারিখ ইত্যাদি উল্লেখ করতে পারেন। যাতে করে সিভির শুরুতেই নাম, কন্টাক্ট নম্বর, জন্ম তারিখ ও সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল লিংক এক নজরে দেখা যায়।

পেশাগত লক্ষ্য (Career Objective)-

প্রফেশনাল সিভি তৈরীর গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো ব্যক্তিগত প্রোফাইল। যেখানে আপনি অল্প কথায় আকর্ষণীয়ভাবে উল্লেখ করবেন নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের উন্নতিকল্পে আপনি কি কি ভূমিকা পালন করবেন এবং আপনার কর্ম জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি। এখানে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে আপনার ব্যক্তিগত প্রোফাইল যেন অনেক বড় না হয়ে যায়।

যোগাযোগের ঠিকানা (Contact Address)

সিভিতে অবশ্যই যোগাযোগের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। বর্তমান ও স্থায়ী উভয় ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।

ছবি সংযুক্ত (Photo Attached)-

আমরা সাধারণত অনেক আগের পুরাতন ছবি ফটোশপে এডিট করে সিভিতে দিয়ে থাকি। আবার অনেক সময় ছবি স্ক্যান করে সিভির মধ্যে ইনসার্ট করে প্রিন্ট করি। প্রফেশনাল সিভিতে এ ধরণের ছবি দেওয়া উচিত নয়। সম্প্রতি তোলা ঝকঝকে এবং সুন্দর লুকের পাসপোর্ট সাইজের ষ্টুডিও প্রিন্ট ছবি সিভির সাথে সংযুক্ত করতে হবে। এখানে আরও একটি বিষয় মনে রাখতে হবে ফেসবুক বা অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়ার ক্যাজুয়াল ছবি কোনোভাবেই সিভির সাথে সংযুক্ত করা যাবে না।

CV লেখার নিয়ম সঠিকভাবে জেনে নিন

শিক্ষাগত যোগ্যতা (Academic Background)

শিক্ষাগত যোগ্যতা সিভির অন্যতম অংশ। যে অংশকে সিভি থেকে কোন অবস্থাতেই বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষার বিবরণ উল্লেখ করার Smart Format হলো প্রথমে সর্বশেষ ডিগ্রী উল্লেখ করতে হবে এবং এভাবে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ডিগ্রী উল্লেখ করতে হবে। শিক্ষার বিবরণ বুলেট আকারে লিখতে পারেন। বিবরণে কি কি উল্লেখ করতে হবে তার নমুনা নিম্নরূপ-

ক) ডিগ্রীর নাম- এমবিএ
খ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
গ) রেজাল্ট- সিজিপিএ-৩.৩৬
ঘ) বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয়- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঙ) পাশের সন- ২০১৮
চ) বিষয়/শাখা- হিসাব বিজ্ঞান

এভাবে সর্বশেষ ডিগ্রীর বর্ণনা উল্লেখ করার পর এর পূর্বে যে ডিগ্রী অর্জন করেছেন তা পর্যায়ক্রমে সিভিতে উল্লেখ করতে হবে।

অভিজ্ঞতা (Experience)-

প্রথমে সর্বশেষ চাকরির তথ্য উল্লেখ করতে হবে। তারপর পর্যায়ক্রমে পূর্বের অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করতে হবে। অভিজ্ঞতায় কি কি বিষয় উল্লেখ করতে হয় তার নমুনা নিচে তুলে ধরা হলো-

প্রতিষ্ঠানের নাম-
পদবী-
প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা-
চাকরির সময়কাল-
দায়িত্ব (সংক্ষিপ্ত আকারে)-

এভাবে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য অভিজ্ঞতা সিভিতে উল্লেখ করতে হবে।

প্রশিক্ষণ (Training)-

কোন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে তা সিভিতে উল্লেখ করতে পারেন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাশ করা ব্যক্তিদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তাদের চাকরির কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। নতুনদের মধ্যে যত বেশি প্রশিক্ষণ উল্লেখ করবেন অন্যদের থেকে ততো বেশি এগিয়ে থাকবেন। প্রশিক্ষণ উল্লেখ করার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের বিষয়, প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা ও সময়কাল উল্লেখ করতে হবে।

কম্পিউটার পরিচালনায় দক্ষতা (Computer Skill)-

বর্তমানে খেয়াল করলে দেখা যায় অফিস সহকারী পদের জন্যও কম্পিউটার পরিচালনার অভিজ্ঞতা আবশ্যক। উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে তো কথাই নেই। অফিসে সাধারণত অফিসিয়াল প্রোগ্রাম যথা- মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ার পয়েন্ট ইত্যাদি জানা জরুরী। তবে অনেক ক্ষেত্রে এডোবি ফটোশপ, ইলাষ্ট্রাটর ইত্যাদি জানতে হয়। এগুলো জানা থাকলে সিভিতে উল্লেখ করতে পারেন।

পারিবারিক তথ্য (Family Information)-

ক) পিতার নাম
খ) মাতার নাম
গ) জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর
ঘ) ধর্ম

চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম কি?

ভাষাগত দক্ষতা (Language Proficiency)-

সাধারণত আমাদের দেশে চাকরির ক্ষেত্রে বাংলা ও ইংরেজি ভাষা জানার প্রয়োজন হয়। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা তাই এ ভাষায় কথা বলতে আমাদের খুব একটা সমস্যা হয়না। তবে এক্ষেত্রে আঞ্চলিকতার বিষয় রয়েছে। কর্পোরেট কোন অফিসে চাকরির জন্য শ্রুতি মধুর ভাষায় কথা বলতে হয়। এজন্য শ্রুতি মধুর ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করা। ইংরেজি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা অর্জনের জন্য IELTS, TOEFL ইত্যাদি ভাষা শিক্ষার প্রতিষ্ঠানে ভাষা শিখে থাকলে তার স্কোর সিভিতে উল্লেখ করুন। এছাড়া অন্য কোনো ভাষা জানা থাকলে সেটিও উল্লেখ করতে পারেন।

শখ/পছন্দ (Hobby)

সিভিতে Hobby বা শখ অংশে বেশিরভাগই উল্লেখ করে থাকেন- আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি, গান শুনতে পছন্দ করি, কবিতা ও গল্প পড়তে পছন্দ করি, খেলা দেখতে পছন্দ করি ইত্যাদি। প্রফেশনাল সিভিতে এ ধরণের শখ বা পছন্দ উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। কেননা এর মাধ্যমে আপনি ব্যক্তি হিসেবে কেমন তা প্রকাশ পায় না। এর পরিবর্তে এমন কোন শখ বা পছন্দের কথা উল্লেখ করুন যার মাধ্যমে আপনার নিষ্ঠা, সততা ও দায়িত্বশীলতার চিত্র ফুটে উঠে।

রেফারেন্স (Reference)-

অনেক ক্ষেত্রে সিভিতে ব্যবহার করা রেফারেন্স চাকরি হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পরিচিত যে কোন পেশার উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিকে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে যাকে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করবেন অবশ্যই তাকে জানিয়ে বা অনুমতি নিয়ে উল্লেখ করবেন। রেফারেন্সে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করতে হয় তাহলো-

ক) ব্যক্তির নাম
খ) পদবী
গ) প্রতিষ্ঠানের নাম
ঘ) মোবাইল নম্বর
ঙ) ই-মেইল
চ) রেফারেন্স এ উল্লেখিত ব্যক্তির সাথে আপনার সম্পর্ক ইত্যাদি

সিভির তথ্য সম্পর্কে ঘোষণা (Declaration)-

সিভিতে উল্লেখিত সকল তথ্য সঠিক ও নির্ভুল হতে হবে। মিথ্যা বা ভুল তথ্য কোনভাবেই সিভিতে উল্লেখ করা যাবে না। সিভির শেষের দিকে এই মর্মে ঘোষণা করতে হবে যে, আপনার প্রদানকৃত সকল তথ্য সঠিক ও নির্ভুল। অঙ্গীকারের নিচে স্বাক্ষর ও তারিখ উল্লেখ করতে হবে।

সিভির সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে-

ফন্টের ব্যবহার-

সিভির সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে ফন্ট নির্বাচন, কোথায় কত সাইজের ফন্ট ব্যবহার করতে হবে, ফন্টের কালার, কোন কোন অংশ বোল্ড করতে হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিভিতে ফন্ট হিসাবে নির্বাচন করতে পারেন- Times New Roman, Arial, Calibri, Tahoma ইত্যাদি। সাধারণ ফন্টের সাইজ ১১ ও হেডিং ফন্টের সাইজ ১৪ ব্যবহার করতে পারেন। হেডিংগুলো অবশ্যই বোল্ড করতে হবে। হেডিংগুলো বড় হাতের অক্ষরে লিখতে পারেন। সিভির টাইটেল বা শিরোনাম এর ফন্ট সাইজ হবে ২৪-২৮, বোল্ড এবং বড় হাতের অক্ষর।

ফন্টের কালার-

প্রফেশনাল সিভিতে ফন্টের কালার হিসেবে অবশ্যই কালো কালার নির্বাচন করতে হবে। তবে কোন ক্ষেত্রে যদি ভিন্ন কালার ব্যবহার করতেই হয় খুবই সিম্পল কালার ব্যবহার করতে হবে।

গ্রাফিক্স এর ব্যবহার-

বর্তমানে প্রফেশনাল সিভিগুলোতে কিছু গ্রাফিক্স এর ব্যবহার করতে দেখা যায়। আপনিও আপনার সিভিতে কিছু গ্রাফিক্স ডিজাইন ব্যবহার করতে পারেন। যেমন- হেডিংগুলোর বাম পার্শ্বে ফন্টের সাইজের সাথে মিলিয়ে বিষয়ভিত্তিক Symbol ব্যবহার করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত গ্রাফিক্স ব্যবহার করে সিভির সৌন্দর্য্যকে নষ্ট করে ফেলবেন না।

কাগজের সাইজ-

প্রফেশনাল সিভিতে স্ট্যান্ডার্ড মাপ A4 (8.27 x 11.69) সাইজের কাগজ ব্যবহার করা উচিত। মার্জিন চারিদিকে ১ ইঞ্চি করে রাখতে হবে।

নির্ভুল সিভি-

কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য সিভি জমা দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সিভিতে যেন কোন ধরণের ভুল না থাকে। যেমন- বানান ভুল, ব্যাকরণ ও ভাষাগত ভুল, মিথ্যা বা ভুল তথ্য ইত্যাদি। সামান্য ভুলের কারণে নিয়োগদাতা কর্তৃপক্ষ আপনার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা করতে পারেন। তাই সময় নিয়ে নির্ভুলভাবে সিভি তৈরী করুন। সিভি তৈরী করার পর অবশ্যই বার বার পড়ে দেখুন কোথাও কোন ভুল আছে কিনা।

ইন্টারভিউ বোর্ডে যাওয়ার প্রস্তুতি-

কোন প্রতিষ্ঠানে সিভি ড্রপ করার পর ইন্টারভিউ কল করলে সেখানে যাওয়ার জন্য কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। যেমন-

ক) মার্জিত পোশাক পড়তে হবে।
খ) চুল ছোট করতে হবে।
গ) দাঁত পরিস্কার ও ঝকঝকে রাখতে হবে।
ঘ) মুখে দুর্গন্ধ থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ঙ) হাতে পায়ের নখ কাটতে হবে।
চ) ঘামের দুর্গন্ধ হলে পারফিউম ব্যবহার করতে হবে।
ছ) ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রশ্নের উত্তর দেয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে ইত্যাদি। চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন ও উত্তর

পরিশেষ-

চাকরি মানেই সিভি। চাকরি হওয়ার পেছনে সিভি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সিভিতে নিজেকে উপস্থাপন করার মাধ্যমেই অনেক সময় চাকরি হয় আবার রিজেক্টও হয়। একটি গবেষণা থেকে জানা যায়- সিভি দেখার পর একজন প্রার্থীকে ৩টি কারণে ইন্টারভিউতে ডাকা হয় না। যথা- ১) গতানুগতিক ধরনের সিভি, ২) বানান ভুল ও ৩) মিথ্যা তথ্য প্রদান। এজন্য CV লেখার নিয়ম সঠিকভাবে জেনে সিভি তৈরি করা উচিত।

1 thought on “CV লেখার নিয়ম | চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম জেনে নিন”

Leave a Comment