নারীরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করবেন, আল্লাহ তাঁদের যৌবন ফিরিয়ে দেবেন। আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
ইসলামে নারীদের সম্মান অনেক বেশি। সম্মানের মুকুট বলতে যা বোঝায়— ইসলাম নারীদের তাই পরিয়েছে। অথচ তাবৎ বিশ্বে একটা সময় নারীদের ভোগের পণ্য মনে করা হতো। এখনও অনৈসলামিক পরিবেশে নারীকে অসম্মানের পাত্র হিসেবে দেখা হয়— যার ভুরিভুরি প্রমাণ রয়েছে।
নারীর জান্নাত লাভের সহজ চারটি আমল
নারীদের প্রতি নিগ্রহের অমানবিক সুযোগ পবিত্র কোরআন দূর করে দিয়েছে। কোরআনে নারীদের নামে ও তাদের অধিকার নিয়ে স্বতন্ত্র্য সুরা অবতীর্ণ হয়েছে। এছাড়াও কন্যাসন্তানের প্রতি অচ্ছুৎ-ভাব যাদের আছে, তাদের বিষয়ে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘যখন তাদের কন্যাসন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, মনঃকষ্টে তাদের চেহারা কালো হয়ে যায়। তাদের যে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে তার কারণে তারা নিজ সম্প্রদায়ের লোক থেকে মুখ লুকিয়ে রাখে। তারা ভাবে এই সন্তান রাখবে, নাকি মাটিতে পুঁতে ফেলবে। সাবধান! তাদের সিদ্ধান্ত কতই না নিকৃষ্ট।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৫৮-৫৯)
নারীরা যে চার কাজে জান্নাত লাভ করবে
ইসলাম নারীদের জন্য জান্নাত লাভের পথ একদম সহজ করে দিয়েছে। এক হাদিসে আছে, “চারটি আমল করলে ” আল্লাহ তাআলা তাদের জান্নাতে পৌঁছে দেবেন। যেকোনো দরজা দিয়ে তারা জান্নাতে যেতে পারবে। হাদিসে আছে—
এক. পাঁচ ওয়াক্ত সালাত।
দুই. রমজানের সিয়াম।
তিন. লজ্জাস্থানের হেফাজত।
চার. স্বামীর আনুগত্য।
এই “ চারটি আমলে ” বিনিময়ে জান্নাতের যেকোনো দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৪১৬৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৬৬১)
আরও পড়ুন:
মিতব্যয়ী হওয়ার মূল্যবান পাঁচটি টিপস্
ক্যারিয়ার গঠনে কি কি গুণ ও দক্ষতা প্রয়োজন
স্বামীকে ভালোবাসা ও মান্য করা

যেসব নারী স্বামীকে ভালোবাসে না ও স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞ নয়— আল্লাহ তাআলা ওই সব নারীদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন না। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ সেই নারীর প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন না, যে স্বামীর কৃতজ্ঞতা আদায় করে না। অথচ সে তার প্রতি মুখাপেক্ষী।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৯০৮৭)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে তিনি বলেন, ‘(একবার) রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো- কোন নারী উত্তম? তিনি বললেন, যার প্রতি দৃষ্টিপাত করলে— সে স্বামীকে সন্তুষ্ট করে। স্বামী আদেশ করলে, তার আনুগত্য করে, এবং (স্ত্রী) নিজের ব্যাপারে ও তার ধন-সম্পদের ব্যাপারে যা স্বামী অপছন্দ করে, এমন কাজের মাধ্যমে স্বামীর বিরোধিতা করে না। (নাসায়ি, হাদিস : ৩২৩১)
তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জন করা
নারী-পুরুষ সবার তাকওয়া অর্জন করা তে হবে। তাকওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ সম্ভব। তাকওয়া না থাকলে, পথভ্রষ্ট হয়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সা.) তার প্রিয়তমা আয়েশা (রা.)-কে বলেন, ‘হে আয়েশা, তোমার জন্য আবশ্যক হলো খোদাভীতি অর্জন করা।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৯৭৮)
শেষ কথা
সুতরাং নারীদের উচিত, হাদিসে ঘোষিত “সহজ চারটি আমল” যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে মেনে চলা। স্বামীকে কষ্ট না দেয়া। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা। নামাজ, রোজা পালন করা, ইজ্জত-আব্রুর হেফাজত করা এবং স্বামীর আনুগত্য করা। আল্লাহর কাছে বেশি বেশি এ প্রার্থনা করা-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ ، وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ ، وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবি ঝাহান্নাম; ওয়া মিন আজাবিল ক্ববর; ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহ্ইয়া ওয়াল মামাতি, ওয়া মিন শাররি ফিতনাতিল মাসীহিদ দাঝঝাল।’ (মুসলিম)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে জাহান্নামের আজব থেকে আশ্রয় চাই, কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাই, তোমার কাছে জীবন ও মৃত্যুর পরীক্ষা থেকে আশ্রয় চাই। দাজঝালের ফেতনার পরীক্ষা থেকে আশ্রয় চাই।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারীকে হাদিসে ঘোষিত “সহজ চারটি আমল ” যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। স্বামীর আনুগত্য করার তাওফিক দান করুন। জান্নাতের সফলতা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
One thought on “যে ৪ আমলে নারীরা সহজেই জান্নাত লাভ করবে”