“শিক্ষা হচ্ছে আলো, আর সেই আলো থেকে বঞ্চিত হওয়া মানে অন্ধকারে ডুবে যাওয়া।” কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশে এখনো অনেক শিশু সেই আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শুরুর আগেই হার মানে নানা চাপে। পরিবারে অভাব, খাদ্যের অনিশ্চয়তা, স্কুলে যাওয়ার খরচ—এইসব মিলিয়ে তারা একসময় পড়ালেখা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এটি শুধু একজন শিশুর নয়, পুরো জাতির জন্যই একটি বড় ক্ষতি।
এই লেখায় আমরা বিশ্লেষণ করব, কীভাবে দারিদ্র্য শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পাশাপাশি তুলে ধরব কিছু বাস্তব চিত্র, সমস্যার গভীরতা এবং এই সমস্যা সমাধানে কী করা যেতে পারে সে বিষয়েও আলোচনা করা হবে। আমাদের লক্ষ্য একটাই—প্রতিটি শিশু যেন স্কুলে থাকতে পারে, স্বপ্ন দেখতে পারে এবং সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।
১। দারিদ্রতা মানে কী এবং এটি শিক্ষার্থীদের জীবনে কীভাবে প্রভাব ফেলে?
দারিদ্রতা মানে হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে একজন ব্যক্তি বা পরিবার তাদের প্রয়োজনীয় চাহিদা—যেমন খাবার, পোশাক, বাসস্থান বা শিক্ষা—সঠিকভাবে পূরণ করতে পারে না। আমাদের দেশে অনেক পরিবারই দৈনন্দিন খরচ চালাতে হিমশিম খায়। ফলে, পরিবারের শিশুদের স্কুলে পাঠানো তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। শুধু স্কুলে ভর্তি করানোই যথেষ্ট নয়, বরং নিয়মিত স্কুলে যাওয়া, বই-খাতা কেনা, ইউনিফর্ম পড়া, এমনকি টিফিনের জন্য কিছু টাকাও দরকার হয়। এইসব খরচ দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা অনেক পরিবারের জন্য একেবারেই বহনযোগ্য নয়।
একজন শিক্ষার্থী যখন পরিবারের অর্থনৈতিক চাপের কারণে স্কুলে ঠিকমতো যেতে পারে না, তখন ধীরে ধীরে সে পড়াশোনা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সে স্কুলে গেলেও মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না, কারণ হয়তো তার মাথায় চিন্তা—আজ ঘরে খাওয়ার কিছু আছে কি না! এই দুশ্চিন্তা শিশুর পড়ালেখার আগ্রহ কমিয়ে দেয় এবং এক সময় সে ঝরে পড়ে। শুধু অর্থের অভাবই না, সেই সঙ্গে আসে হতাশা, আত্মসম্মানের ক্ষতি এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা।
আমাদের সমাজে এই সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গবেষণা বলছে, গ্রামীণ এবং নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার সবচেয়ে বেশি। অনেক সময় বাবা-মা নিজেরাও শিক্ষিত নন, তাই তারা সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর গুরুত্ব বুঝতে পারেন না। তারা ভাবেন, স্কুলে না গিয়েও ছেলে-মেয়ে যদি একটু কাজ করে, তাহলে পরিবারের খরচে সাহায্য হবে। এই চিন্তা থেকেই অনেক শিশু পড়াশোনা ছেড়ে কাজ করতে বাধ্য হয়।
এই অবস্থায় দরকার সরকারের পাশাপাশি সমাজের সচেতন মানুষের এগিয়ে আসা। দারিদ্র্য নিরসনের উদ্যোগ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়তামূলক কর্মসূচিও অপরিহার্য। স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম, বিনামূল্যে বই, পোশাক ও অর্থ সহায়তা দিলে অনেক শিশু ঝরে পড়া থেকে রক্ষা পেতে পারে।
২। দারিদ্র্যপীড়িত শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের চিত্র
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম বা শহরের বস্তিতে আপনি যদি যান, তাহলে দেখবেন অনেক শিশু সকালবেলা স্কুলব্যাগ নয়, বরং হাতে নেন জলের কলস, ঝুড়ি বা কখনও রিকশার হ্যান্ডেল। এই শিশুরা স্কুলে যাওয়ার বয়সেই জীবিকার সন্ধানে নেমে পড়ে। কারণ তাদের পরিবারে হয় বাবা-মা দিনমজুর, রিকশাচালক বা গার্মেন্টসে কাজ করেন। তারা দিন আনে দিন খায়। ফলে পরিবারের খরচ চালাতে একাধিক সদস্যকে উপার্জনে নামতে হয়।
এমন একটি গল্প বলা যাক। রাহিম একটি গ্রামে থাকে। তার বয়স ১০ বছর। সে খুব মন দিয়ে পড়তো। কিন্তু হঠাৎ একদিন তার বাবার কাজ চলে যায়। ঘরে খাবার নেই, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, স্কুলের খাতা-কলম কিনতে পারছে না। তখন রাহিম সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল ছেড়ে দিনমজুরের কাজ করবে। এই গল্প রাহিমের একার নয়—বাংলাদেশের হাজারো শিশুর প্রতিদিনের বাস্তবতা।
আরেকটা বড় সমস্যা হলো, অনেক সময় স্কুলে গেলেও দরিদ্র শিশুদের প্রতি সহপাঠী বা শিক্ষকদের আচরণ নেতিবাচক হয়। তারা পোশাক বা খাবারের কারণে হেয় প্রতিপন্ন হয়। এতে করে শিশুদের আত্মবিশ্বাস ভেঙে যায়। তারা ভাবে, “আমরা হয়তো স্কুলের জন্য নয়!” এই মানসিক চাপ তাদের পড়ালেখা থেকে আরও দূরে ঠেলে দেয়।
সরকারিভাবে কিছু সাহায্য যেমন উপবৃত্তি, বিনামূল্যে বই, মিড ডে মিল চালু থাকলেও তা যথেষ্ট নয়। বাস্তবে অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থী এই সুবিধাগুলো ঠিকভাবে পায় না বা জানেই না। তথ্য ঘাটতি, দুর্নীতি ও অসচেতনতা এই সমস্যাগুলো আরও বাড়িয়ে তোলে।
এছাড়া, কিছু শিক্ষার্থী পড়তে চাইলেও পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়স্বজন বাধা দেয়। তারা বলে, “তোর কি বই পইড়া পেট ভরবো?” এমন কথা শিশুর মনে গভীর দাগ কাটে। ফলে সে ভেবে নেয়, লেখাপড়া নয়—শুধু টিকে থাকার জন্য উপার্জন করাই জীবনের আসল লক্ষ্য।
এই ধাপে আমরা বুঝতে পারি, দারিদ্রতা শুধু আর্থিক নয়—এর সঙ্গে মানসিক চাপ, সামাজিক প্রতিবন্ধকতা এবং ভুল দৃষ্টিভঙ্গিও জড়িয়ে আছে। এই চিত্র পাল্টাতে হলে দরকার সব পক্ষের সমন্বিত ও আন্তরিক উদ্যোগ।
৩। দারিদ্র্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে সহায়তার অভাব
দারিদ্র্যপীড়িত শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হলো—সহযোগিতা ও সহায়তার অভাব। দরিদ্র পরিবারগুলোতে অভিভাবকেরা সাধারণত অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত হন। ফলে তারা সন্তানদের পড়াশোনার গুরুত্ব ঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারেন না। তাদের কাছে জীবন মানে হলো, “টাকা আয় করো, খাও, বাঁচো!” এই মানসিকতা থেকেই অনেকেই মনে করেন, লেখাপড়া সময় নষ্ট ছাড়া কিছুই নয়।
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা খুবই একা হয়ে পড়ে। তারা যখন কোনো বিষয়ের উপর সাহায্য চায়, তখন পরিবার থেকে কেউ গাইড করতে পারে না। এমনকি অনেক গ্রাম বা শহরতলীতে শিক্ষকের সংখ্যাও কম, কোচিং বা প্রাইভেটের সুযোগ নেই। আবার যারা শহরে থাকে, তারাও অনেক সময় টাকার অভাবে ভালো গাইড পায় না। ফলে বাচ্চারা ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়ে এবং একসময় ক্লাসে গিয়ে বোঝার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
স্কুলগুলোর অবকাঠামোতেও আছে বড় ঘাটতি। অনেক স্কুলে পর্যাপ্ত বেঞ্চ নেই, পাঠ্যপুস্তক ঘাটতি, লাইব্রেরি নেই, এমনকি শিক্ষক অনুপস্থিত থাকেন। আবার শিক্ষকরা সব সময় দারিদ্র্যপীড়িত শিশুদের মানসিকভাবে উৎসাহ দিতে পারেন না। কেউ কেউ এসব শিশুকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন, যা তাদের আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেয়। তারা ভাবতে শুরু করে—“আমরা ভালো ছাত্র হতে পারবো না।”
এর পাশাপাশি সমস্যা হয়, যখন দরিদ্র শিক্ষার্থীরা নানা কারণে স্কুল মিস করে। হয়তো তাদের মা অসুস্থ, তারা বাজার করতে গেছে, কিংবা ছোট ভাই-বোনকে দেখাশোনা করতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত এসব কাজ করে তারা ক্লাস মিস করে এবং পাঠ্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়ে। এতে তারা ক্লাসে নিজেকে বেমানান মনে করে ও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারায়।
সরকারি সহায়তা যেমন উপবৃত্তি, মিড ডে মিল, বা বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হলেও তা সব শিক্ষার্থীর হাতে ঠিকভাবে পৌঁছায় না। অনেক জায়গায় এই সহায়তা অনিয়মিত কিংবা দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত হয় প্রকৃত দরিদ্র শিশুরা।
এইসব দিকগুলো বিবেচনা করলে স্পষ্ট হয়—শুধু দারিদ্র্য নয়, এর সঙ্গে যখন সহায়তার অভাব যুক্ত হয়, তখন শিক্ষার্থীদের টিকে থাকা আরও কঠিন হয়ে পড়ে।
৪। দারিদ্র্যের কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়
যখন একটি শিশু দারিদ্র্যের কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়, তখন তার জীবনের একটি বড় সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায়। শিক্ষা মানে শুধু বই পড়ে ভালো রেজাল্ট করা নয়, বরং এটি একটি মানুষের চিন্তাশক্তি, আত্মবিশ্বাস, দক্ষতা এবং জীবনের সুযোগ তৈরির পথ। কিন্তু যদি সেই পথই বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সে জীবনে উন্নতি করবে কীভাবে?
একজন শিক্ষার্থী যখন ছোটবেলায় স্কুল ছাড়ে, তখন সে হয়তো কোনদিনই একটি ভালো চাকরি, সম্মানজনক পেশা বা নিজের স্বপ্ন পূরণ করার সুযোগ পায় না। অনেক সময় তারা হকার, রিকশাচালক, গার্মেন্টস শ্রমিক বা দিনমজুরের মতো কঠিন শ্রমনির্ভর কাজে যুক্ত হয়। এতে করে তারা দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রেই থেকে যায়—এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে।
অপঠিত বা অর্ধশিক্ষিত মানুষের সমাজে প্রতারণা, সহিংসতা, কুসংস্কার এবং অপরাধও বাড়ে। কারণ তারা অনেক বিষয় বুঝতে পারে না, বিচার বিবেচনায় ঘাটতি থাকে। অনেক সময় তারা সমাজের প্রভাবশালী মানুষের দ্বারা ঠকেও যায়। এসব শিশুরা যেহেতু আত্মবিশ্বাসহীন ও অর্থহীন জীবনযাপন করে, তারা সহজেই নেতিবাচক পথে চলে যেতে পারে।
এই সমস্যার ভয়াবহ দিক হলো—এটি কেবল একটি ব্যক্তির সমস্যা নয়, বরং একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। একজন শিক্ষিত নাগরিক দেশের জন্য সম্পদ, আর অশিক্ষিত বা ঝরে পড়া নাগরিক অনেক সময় হয়ে ওঠে বোঝা। তাই দারিদ্র্যের কারণে ঝরে পড়া শুধু একটি শিশুর ক্ষতি নয়—এটি একটি জাতির অগ্রগতির বড় বাধা।
শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া মানে হলো—একটি সম্ভাবনার মৃত্যু। তাই দরিদ্র শিশুরাও যেন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়ে এখনই ভাবা জরুরি। তাদের পড়াশোনায় টিকিয়ে রাখতে হলে শুধু অর্থনৈতিক সহায়তা নয়, দরকার হবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি।
৫। দারিদ্র্য রোধে করণীয় ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকাতে সমাধান
শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকাতে হলে শুধু দারিদ্র্যকে দোষ দিয়ে বসে থাকলেই হবে না। আমাদের প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ, সমন্বিত সহযোগিতা এবং মানবিক মনোভাব। প্রথমেই দরকার দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট সহায়তা বাড়ানো।
সরকারি সহায়তা আরও বিস্তৃত এবং কার্যকর করতে হবে। উপবৃত্তি যেন সঠিকভাবে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছায়, সেটি নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। পাশাপাশি মিড ডে মিল বা স্কুলে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা আরও নিয়মিত এবং পুষ্টিকর হলে, অনেক শিশু স্কুলে থাকতে আগ্রহী হবে। আবার ইউনিফর্ম, খাতা-কলম, স্কুল ব্যাগ ইত্যাদিও সরকারিভাবে সরবরাহ করা গেলে, দরিদ্র পরিবারগুলোর অনেক চাপ কমে যাবে।
এছাড়া, স্থানীয় সরকার, এনজিও ও সমাজের সচেতন ব্যক্তিদের এগিয়ে আসতে হবে। অনেক সময় এক টাকার অনুপস্থিতিতে একটা শিশু স্কুলে যেতে পারে না—এই ছোট ছোট সমস্যাগুলোর সমাধানে ব্যক্তি ও সামাজিক উদ্যোগ হতে পারে বড় সহায়তা। যেমন: স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা যদি স্কুলে ফ্রি কোচিং চালু করেন, বা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য তহবিল গঠন করেন, তাহলে অনেক শিশু পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে।
স্কুলে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কাউন্সেলিং ব্যবস্থা থাকা দরকার। শিক্ষকেরা যদি একটু সময় নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন, সমস্যা বোঝেন এবং উৎসাহ দেন—তাহলেই শিশুরা নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে। এই আবেগিক সহায়তা তাদের ঝরে পড়া রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
সবচেয়ে বড় কথা, সমাজকে ভাবতে হবে—প্রতিটি শিশুর শিক্ষা পাওয়া অধিকার, বিলাসিতা নয়। কোনো শিশু যেন শুধু গরিব বলে পেছনে পড়ে না থাকে, সেটিই হওয়া উচিত আমাদের সবাইকে দায়িত্ব।
শেষে বলতেই হয়, দারিদ্র্য একটি বড় সমস্যা হলেও, সচেতনতা, মানবিকতা ও একসাথে কাজ করার মানসিকতা থাকলে তা জয় করা সম্ভব। আজ যদি আমরা দারিদ্র্যপীড়িত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াই, তাহলে আগামীর বাংলাদেশ হবে আরও আলোকিত, আরও শক্তিশালী।
উপসংহার:
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড—এই বাক্যটি কেবল একটি প্রবাদ নয়, এটি বাস্তব জীবনের মূল চাবিকাঠি। কিন্তু দারিদ্র্যের মতো একটি সমস্যার কারণে যদি শিশুরা সেই শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ে, তাহলে একটি সমাজ কখনোই এগিয়ে যেতে পারে না। এই লেখায় আমরা দেখেছি, কীভাবে দারিদ্র্য শুধু আর্থিক সীমাবদ্ধতা নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস, আগ্রহ, এমনকি ভবিষ্যতকেও বিপন্ন করে তোলে।
তাই সময় এসেছে সবাইকে একযোগে কাজ করার—সরকার, শিক্ষক, সমাজ ও অভিভাবক সবাই মিলে যদি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে ঝরে পড়ার হার কমিয়ে আনা সম্ভব। প্রতিটি শিশুর মধ্যে যে সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে, তা বিকশিত হোক শিক্ষা দিয়ে—not দারিদ্র্যে হারিয়ে গিয়ে। শিক্ষা যেন সবার জন্য হয়—ধনী, গরিব নয়, এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।