IELTS ছাড়াই ইউরোপ এবং এশিয়ার দেশগুলোতে পড়াশোনা: সহজ পথের গাইড

Spread the love

বিদেশে পড়াশোনা করার ইচ্ছা অনেক শিক্ষার্থীর মনেই জাগে। তবে অনেকেই ভাবেন, যদি IELTS না থাকে তাহলে বিদেশে যাওয়া অসম্ভব। সত্যি কথা হলো, IELTS ছাড়াও অনেক দেশ রয়েছে যেখানে আপনি সহজেই পড়াশোনার সুযোগ পেতে পারেন। বিশেষ করে ইউরোপের কিছু দেশ এবং এশিয়ার কিছু দেশের ভিসা প্রক্রিয়া এবং ভর্তি শর্ত অনেক সহজ।

IELTS পরীক্ষা দেওয়া অনেকের পক্ষে কঠিন। কেউ সময় পায় না, কেউ খরচ করতে পারে না, আবার অনেকেই ভাষাগত সমস্যার কারণে এই পরীক্ষায় অংশ নিতে চায় না। এ কারণে অনেকেই হতাশ হয়। অথচ আপনি যদি সঠিক দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেন, তাহলে IELTS ছাড়াই আপনি উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।

এই আর্টিকেলে আমরা ধাপে ধাপে আলোচনা করব, কোন কোন দেশে IELTS ছাড়াই পড়ার সুযোগ আছে, কীভাবে আবেদন করতে হয় এবং কী প্রস্তুতি নিলে আপনি সহজেই বিদেশ যেতে পারেন।

১। ইউরোপের যেসব দেশে IELTS ছাড়াই যাওয়া যায়

আপনি কি জানেন, ইউরোপে এমন অনেক দেশ রয়েছে যেখানে IELTS ছাড়াই উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাওয়া যায়? চলুন, এমন কিছু জনপ্রিয় দেশের নাম ও তাদের সুযোগ সুবিধা জেনে নিই।

১.১ জার্মানি

জার্মানির অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের কোর্স পরিচালনা করা হয়। এসব কোর্সে ভর্তি হতে সাধারণত IELTS বাধ্যতামূলক হয় না, যদি আপনি পূর্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার প্রমাণ সরবরাহ করতে পারেন। এই প্রমাণ যেমন আপনার স্কুল বা কলেজ থেকে দেওয়া ইংরেজি মাধ্যমের সনদ হতে পারে। এর ফলে, IELTS পরীক্ষার চাপ এড়িয়ে সহজেই ভর্তি হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

অনেক সময় জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ছোট্ট ইংরেজি দক্ষতার পরীক্ষা নেয়, যা IELTS এর তুলনায় অনেক সহজ। এই পরীক্ষা মূলত ছাত্রের মৌখিক ও লিখিত ইংরেজি দক্ষতা যাচাই করে। তাই যারা IELTS দিতে আগ্রহী নয় বা প্রস্তুত নন, তাদের জন্য এটি একটি ভালো বিকল্প। এতে করে শিক্ষার্থীরা সহজেই ভর্তি পরীক্ষায় সফল হতে পারে।

জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টিউশন ফি অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ফ্রি। এর ফলে পড়াশোনার খরচ অনেকাংশে কমে যায় এবং শিক্ষার্থীরা অর্থনৈতিকভাবেও সুবিধা পায়। এজন্য জার্মানি শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে যারা IELTS ছাড়াই উচ্চশিক্ষার সুযোগ খুঁজছেন।

১.২ ফ্রান্স

ফ্রান্সে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় IELTS ছাড়াই শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে। বিশেষ করে যারা ইংরেজি মাধ্যমে তাদের পূর্বের শিক্ষা সম্পন্ন করেছে, তারা তাদের ইংরেজি মাধ্যমের সনদ বা সার্টিফিকেট দেখিয়ে ফ্রান্সে পড়াশোনার অনুমতি পেতে পারে। এর ফলে IELTS পরীক্ষা দেওয়ার ঝামেলা ও খরচ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ফলে শিক্ষার্থীরা সহজেই তাদের স্বপ্নের কোর্সে ভর্তি হতে পারে।

ফ্রান্সের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স ফ্রেঞ্চ ভাষায় পরিচালিত হয়, যেখানে IELTS’র প্রয়োজন পড়ে না। যারা ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষ, তারা সহজেই সেখানে ভর্তি হতে পারে। এছাড়া ফ্রেঞ্চ ভাষার কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য আলাদা ধরনের ভাষার পরীক্ষা থাকে, যা IELTS’র থেকে অনেক সময় ও অর্থ সাশ্রয়ী। ফলে ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রেও ফ্রান্স শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধাজনক গন্তব্য।

ফ্রান্সে পড়াশোনার সঙ্গে অনেক স্কলারশিপের সুযোগও রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠান বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ ঘোষণা করে, যেখানে IELTS বাধ্যতামূলক নয়। এই সুযোগগুলো ব্যবহার করে অনেক শিক্ষার্থী কম খরচে বিশ্বমানের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। তাই ফ্রান্স IELTS ছাড়া পড়াশোনার জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত।

১.৩ পোল্যান্ড

পোল্যান্ডে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি মাধ্যমে বিভিন্ন কোর্স অফার করে থাকে, যেখানে IELTS দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। আপনি যদি প্রমাণ দিতে পারেন যে আপনার পূর্বের শিক্ষা ইংরেজি মাধ্যমে হয়েছে, তাহলে সেখানে ভর্তি হওয়া বেশ সহজ। অনেক সময় ইংরেজি দক্ষতার জন্য বিকল্প শর্ত বা স্বীকৃত সনদই গ্রহণ করা হয়।

পোল্যান্ডে পড়াশোনার খরচ অনেক কম, যা শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুবিধা। টিউশন ফি তুলনামূলক কম হওয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে পোল্যান্ড খুবই জনপ্রিয়। এছাড়া জীবনযাত্রার খরচও অনেকটা কম, যা পড়াশোনার চাপ কমাতে সহায়তা করে।

পোল্যান্ডে পড়ার সময় পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট-টাইম কাজ করার সুযোগও ভালো। এটি শিক্ষার্থীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করে। তাই যারা IELTS দিতে চান না বা দিতে পারেন না, তাদের জন্য পোল্যান্ড হতে পারে একটি আদর্শ গন্তব্য। এখানে পড়াশোনা ও কাজ মিলিয়ে নিজের ভবিষ্যত গড়ে তোলা সম্ভব।

১.৪ হাঙ্গেরি

হাঙ্গেরির Stipendium Hungaricum স্কলারশিপ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সুযোগ। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার খরচ অনেকটাই কমে যায় এবং শিক্ষার্থীরা ভালো মানের শিক্ষা লাভ করতে পারে। বিশেষ আকর্ষণ হলো, অনেক ক্ষেত্রে IELTS ছাড়াই এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যায়।

হাঙ্গেরিতে ভর্তি হতে সাধারণত মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার প্রমাণ হিসেবে একটি সনদ জমা দিতে হয়। এই সনদ দেখিয়ে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় IELTS ছাড়াই শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে। এর ফলে যারা IELTS দিতে পারেন না, তাদের জন্য এই সুযোগ অনেক বড় সাহায্য হিসেবে কাজ করে।

Stipendium Hungaricum স্কলারশিপের মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি, আবাসন এবং মাসিক ভাতা সহ নানা সুবিধা পায়। তাই যারা বিদেশে পড়তে চান এবং IELTS পরীক্ষায় যেতে অস্বস্তিবোধ করেন, তাদের জন্য হাঙ্গেরি একটি উপযুক্ত গন্তব্য হতে পারে। এখানকার শিক্ষার মানও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং প্রচুর সুযোগ রয়েছে।

১.৫ নরওয়ে

নরওয়ে-তে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় IELTS ছাড়াই ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার সুযোগ দেয়। শিক্ষার্থীরা যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তাদের পূর্বের শিক্ষা ইংরেজি মাধ্যমে হয়েছে, তাহলে তারা সহজেই ভর্তি হতে পারেন। এটি বিশেষ করে যারা IELTS দিতে পারেন না বা দিতে চান না, তাদের জন্য বড় সুযোগ।

তবে কিছু ক্ষেত্রে নরওয়ের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নিজেরা ইংরেজি দক্ষতা যাচাই করার জন্য মৌখিক বা লিখিত পরীক্ষা নিতে পারে। এই পরীক্ষা সাধারণত ছোট এবং সহজ হয়, যার মাধ্যমে তারা শিক্ষার্থীর ভাষাগত সক্ষমতা নিশ্চিত করে। এজন্য নিয়মিত ইংরেজি অনুশীলন রাখা ভালো।

নরওয়ে-তে ভর্তি প্রক্রিয়া সাধারণত সহজ এবং স্বচ্ছ হয়। ইংরেজি মাধ্যমের সার্টিফিকেট থাকলেই অনেক সময় আলাদা পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। এছাড়া এখানে পড়াশোনার মান ভালো এবং জীবনযাত্রার মানও উচ্চ হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী নরওয়েকে পছন্দ করে থাকে।

২। মালয়েশিয়ায় IELTS ছাড়া পড়াশোনা

মালয়েশিয়া এশিয়ার অন্যতম উন্নত শিক্ষানগরী হিসেবে পরিচিত। এখানে অনেক আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে IELTS বাধ্যতামূলক নয়। যারা ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেছে, তারা সহজেই ভর্তি হতে পারে। মালয়েশিয়া পড়াশোনার জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।

মালয়েশিয়ায় আবেদন প্রক্রিয়া

আপনি যদি আপনার পূর্বের শিক্ষা ইংরেজি মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে মালয়েশিয়ার বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে IELTS ছাড়াই ভর্তি করার সুযোগ দেয়। তারা প্রমাণ হিসেবে English Proficiency Certificate গ্রহণ করে, যা আপনি আপনার স্কুল বা কলেজ থেকে সহজেই সংগ্রহ করতে পারেন।

এই সনদটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত হয় এবং এতে উল্লেখ থাকে যে, আপনার পড়াশোনা সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় বোঝে যে আপনার ইংরেজি ভাষায় পর্যাপ্ত দক্ষতা রয়েছে, যা তাদের ভর্তি নীতিমালার সাথে মানানসই।

তাই যারা IELTS পরীক্ষার জন্য সময় বা খরচ করতে পারেন না, তাদের জন্য এই পদ্ধতিটি এক ধরনের বড় সুবিধা হিসেবে কাজ করে। মালয়েশিয়ায় এই ধরণের নীতি শিক্ষার্থীদের বিদেশে পড়াশোনার সুযোগ আরো সহজ করে তোলে।

মালয়েশিয়ার সুবিধা

  • টিউশন ফি ইউরোপের তুলনায় অনেক কম।
  • আবাসন খরচ কম।
  • খাবার, আবহাওয়া ও সংস্কৃতি আমাদের দেশের মতো।
  • সহজ ভিসা প্রক্রিয়া এবং পার্ট-টাইম কাজ করার সুযোগ।

এছাড়া মালয়েশিয়ার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ইংরেজি দক্ষতার ছোট পরীক্ষা নেয়, যা খুব সহজে পাস করা যায়।

৩। চীনে IELTS ছাড়া পড়াশোনা

চীন বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য। কারণ এখানে উচ্চশিক্ষার খরচ কম, স্কলারশিপের সুযোগ অনেক এবং IELTS ছাড়াই পড়ার সুযোগ আছে।

চীনে আবেদন প্রক্রিয়া

চীনে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় Medium of Instruction Certificate গ্রহণ করে। আপনি যদি দেখাতে পারেন যে আপনার পূর্বের শিক্ষা ইংরেজি মাধ্যমে হয়েছে, তাহলে IELTS ছাড়াই আবেদন করতে পারবেন।

চীনের সুবিধা

  • চীনে CSC Scholarship, বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ এবং প্রদেশভিত্তিক স্কলারশিপের সুযোগ আছে।
  • টিউশন ফি অনেক কম।
  • আবাসন খরচ সাধ্যের মধ্যে।
  • English-Taught প্রোগ্রাম পাওয়া যায়।

কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব ইংরেজি দক্ষতার পরীক্ষা নেয়, তবে তা সহজ এবং দ্রুত পাস করা যায়।

৪। IELTS ছাড়া বিদেশে পড়ার প্রস্তুতি ও করণীয়

আপনি যদি IELTS ছাড়া বিদেশে পড়ার স্বপ্ন দেখেন, তাহলে কিছু কাজ অবশ্যই আপনাকে করতে হবে।

কীভাবে প্রস্তুতি নিবেন?

৪.১ Medium of Instruction Certificate সংগ্রহ করুন:

ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার সনদ, যাকে বলা হয় Medium of Instruction (MOI) Certificate, এটি বিদেশে পড়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাগজপত্র। আপনি যদি আপনার স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ে থাকেন, তাহলে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এই সনদ সংগ্রহ করতে হবে। এই সনদে লেখা থাকবে যে, আপনি সম্পূর্ণ পড়াশোনা ইংরেজি ভাষায় সম্পন্ন করেছেন। অনেক বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় IELTS এর পরিবর্তে এই সনদ গ্রহণ করে। তাই যারা IELTS দিতে চান না, তাদের জন্য এই সনদ অত্যন্ত উপকারী এবং দরজার চাবিকাঠি হতে পারে।

৪.২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে খোঁজ করুন:

আপনি যেখানে পড়তে চান, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে খোঁজ করা খুব জরুরি। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ওয়েবসাইটে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দেয়, IELTS ছাড়াও কোন কোন শর্তে ভর্তি হওয়া যায়। আপনার লক্ষ্য থাকা উচিত এই তথ্য গুলো ভালোভাবে পড়া ও বোঝা। প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ই-মেইল করে সরাসরি তথ্য নিশ্চিত করতে পারেন। সঠিক তথ্য জানলে আপনি ভুল আবেদন বা কাগজপত্রের ঝামেলা থেকে সহজেই বাঁচতে পারবেন।

৪.৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে খোঁজ করুন:

বিদেশে পড়তে চাইলে প্রথম কাজ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে খোঁজা। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ওয়েবসাইটে স্পষ্টভাবে IELTS ছাড়া ভর্তি হওয়ার নিয়ম উল্লেখ করে। আপনি ওয়েবসাইটের Admission Requirements বা International Students সেকশন ভালো করে পড়ুন। এতে আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসল নিয়ম জানতে পারবেন এবং ভুল তথ্যের ঝুঁকি কমবে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-মেইল বা কন্টাক্ট নম্বরে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানতে পারেন।

৪.৪ ইংরেজি দক্ষতা বাড়ান

ইংরেজি দক্ষতা বাড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে মৌখিক ও লিখিত ক্ষেত্রে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়ায় ছোট একটি ইংরেজি মৌখিক পরীক্ষা বা সাক্ষাৎকার নেয়। এজন্য নিয়মিত ইংরেজি পড়া, লেখা এবং কথা বলার অনুশীলন করা দরকার। ইংরেজি সিনেমা দেখা, বই পড়া ও বন্ধুদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং পরীক্ষা সহজে পাস করতে পারবেন।

৪.৫ ডেডলাইন মেনে আবেদন করুন:

বিদেশে পড়াশোনার জন্য আবেদন করার সময় নির্ধারিত ডেডলাইন মেনে চলা খুব জরুরি। দেরি করলে আবেদন গ্রহণ নাও হতে পারে বা স্কলারশিপের সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে। তাই আবেদন ফরম সময় মতো পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ঠিকঠাক জমা দিন। আগেভাগেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন যাতে ডেডলাইনের চাপ না থাকে। নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল জানাতে চোখ রাখুন, যাতে কোনো পরিবর্তন মিস না হয়।

৪.৬ ভিসা শর্ত ভালোভাবে বুঝুন:

ভিসার জন্য আবেদন করার সময় শর্তগুলো ভালোভাবে বুঝে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও IELTS লাগবে না, তবুও অনেক সময় দূতাবাস ভাষাগত সাক্ষাৎকার নিতে পারে। তাই ইংরেজিতে সাবলীল কথা বলার জন্য নিয়মিত অনুশীলন করা উচিত। ভাষাগত সাক্ষাৎকারে ভালো পারফর্ম করলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। প্রস্তুত থাকলে এই প্রক্রিয়া অনেক সহজ ও সফল হয়।

অতিরিক্ত টিপস

  • পরিচিত কারও সাথে যোগাযোগ রাখুন যারা ইতোমধ্যে ওই দেশে পড়ছে।
  • প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট ইংরেজি পড়ুন বা শুনুন।
  • ইউনিভার্সিটির সাথে ই-মেইলে যোগাযোগ করে সব শর্ত পরিষ্কার করে নিন।

উপসংহার

IELTS না থাকলে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আপনি চাইলে এখনো ইউরোপ এবং এশিয়ার অনেক দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতে পারেন। জার্মানি, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, নরওয়ে, মালয়েশিয়া ও চীনে IELTS ছাড়াই ভর্তি হওয়া সম্ভব।

IELTS ছাড়া বিদেশে পড়ার জন্য শুধু দরকার সঠিক তথ্য, একটু পরিকল্পনা এবং সময়মতো আবেদন করা। আপনি যদি ধাপে ধাপে এগিয়ে যান, তাহলে বিদেশে পড়ার স্বপ্ন আর স্বপ্ন থাকবে না, সেটি বাস্তব হবে।

আসুন, নিজের লক্ষ্যের প্রতি বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যাই। আপনার ইচ্ছা আর সাহস থাকলে IELTS ছাড়াই বিশ্বজয় করা সম্ভব।

Leave a Comment

You cannot copy content of this page