মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার কারণ এবং সমাধান

Spread the love

একটি শিক্ষিত সমাজই একটি উন্নত জাতির ভিত্তি। শিক্ষা শুধু চাকরির জন্য নয়, বরং চিন্তা-ভাবনার বিকাশ, সামাজিক সচেতনতা এবং মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার মূল হাতিয়ার। অথচ বাংলাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের অনেক শিক্ষার্থী পড়ালেখা মাঝপথে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তারা হয়তো স্কুলে ভর্তি হয় ঠিকই, কিন্তু আর সেখান থেকে সনদ নেওয়া পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। কেন এই ঝরে পড়া? কারা এর জন্য দায়ী? এবং কীভাবে আমরা এই প্রবণতা রোধ করতে পারি? এই লেখায় আমরা সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখব ধাপে ধাপে—সহজ ভাষায়, বাস্তব অভিজ্ঞতা ও তথ্যের আলোকে।

১। শিক্ষার্থী ঝরে পড়া কী এবং কেন এটি গুরুতর সমস্যা

বাংলাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস ৬ থেকে শুরু করে এসএসসি পর্যন্ত পুরো কোর্স শেষ করতে পারে না। তারা মাঝপথে স্কুল ছেড়ে দেয়, ফলে শিক্ষা জীবন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এই ঝরে পড়ার ঘটনা শুধু একটি ব্যক্তির জন্যই নয়, পুরো জাতির উন্নয়নের পথে একটি বড় বাধা তৈরি করে।

একজন শিক্ষার্থী যখন পড়াশোনা ছেড়ে দেয়, তখন সে শুধু একটি সনদ হারায় না, হারায় ভবিষ্যৎ গড়ার একটি বড় সুযোগও। এমন একজন শিক্ষার্থী হয়তো ভবিষ্যতে দক্ষ পেশাজীবী, শিক্ষক, ডাক্তার, বা বিজ্ঞানী হতে পারত। কিন্তু পড়ালেখা বাদ দিয়ে সে হয়তো বাল্যবিবাহে জড়িয়ে পড়ে, শিশুশ্রমে যুক্ত হয়, কিংবা নেশার পথে পা বাড়ায়। তাই এই সমস্যা শুধু একটি স্কুলের নয়, এটি একটি জাতীয় ইস্যু।

এই ঝরে পড়া সমস্যাটি এতো গুরুতর কেন? কারণ এটি শিক্ষার প্রতি অনীহা ও অসচেতনতার প্রতিফলন। একটি দেশের উন্নয়নের জন্য শিক্ষিত জনগণ সবচেয়ে বড় সম্পদ। আর যদি শিক্ষার্থীরা মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়, তবে সে দেশের ভবিষ্যৎ দুর্বল হয়ে পড়ে। শিক্ষার হার কমে গেলে কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য নিরসন এবং সামাজিক উন্নয়ন—সব কিছুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

তাই শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার এই প্রবণতা রোধ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। পিতা-মাতা, শিক্ষক, সমাজ ও সরকার—সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। এই লেখার পরবর্তী ধাপগুলোতে আমরা জানব কেন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা ছেড়ে দেয়, এর মূল কারণগুলো কী, এবং কীভাবে এ থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করা যায়।

২।  মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার প্রধান কারণগুলো

অনেক সময় আমরা ভাবি, “শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা ছেড়ে দেয় কেন?” এই প্রশ্নের উত্তরে একাধিক কারণ পাওয়া যায়। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার সবচেয়ে বড় কিছু কারণ রয়েছে—যা আমাদের সমাজ, পরিবার এবং শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

১. অর্থনৈতিক সমস্যা:

বাংলাদেশের অনেক পরিবার এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। স্কুলে পড়ার খরচ, ইউনিফর্ম, খাতা-কলম, যাতায়াত—সব কিছু মিলিয়ে একটা বড় ব্যয়। অনেক বাবা-মা এসব খরচ মেটাতে না পেরে সন্তানকে পড়াশোনা থেকে সরিয়ে কাজে লাগিয়ে দেন। বিশেষ করে ছেলে শিশুরা কৃষিকাজে, আর মেয়েরা গার্মেন্টসে অথবা গৃহস্থালির কাজে যুক্ত হয়।

২. বাল্যবিবাহ:

মেয়েশিশুদের ঝরে পড়ার অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ। গ্রামীণ এলাকায় এখনো এই প্রথা প্রচলিত। মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ুয়া অনেক মেয়েকে অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়, ফলে তাদের শিক্ষা জীবন অসমাপ্ত থেকে যায়।

৩. পরিবারের অশান্ত পরিবেশ:

পরিবারে যদি মারামারি, ঝগড়া কিংবা পারিবারিক ভাঙন থাকে, তাহলে শিশুর মনোযোগ পড়াশোনায় থাকেনা। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, দরিদ্রতা, বা একক অভিভাবকের বোঝা—এইসব মানসিক চাপ শিশুদের পড়া থেকে দূরে ঠেলে দেয়।

৪. স্কুলে সহানুভূতির অভাব:

অনেক সময় শিক্ষক বা সহপাঠীদের কাছ থেকে যদি বারবার বকা বা উপহাস পেতে হয়, তাহলে শিক্ষার্থীর মন ভেঙে যায়। ক্লাসে পিছিয়ে পড়লে বা ভুল করলে যেভাবে তাকে সাহস জোগানো দরকার, তার বদলে যদি অপমান করা হয়—তাহলে সে আর স্কুলে যেতে চায় না।

৫. গুণগত শিক্ষা ও অনুপ্রেরণার অভাব:

স্কুলে শুধু পড়াশোনাই নয়, একজন শিক্ষার্থীকে অনুপ্রাণিত করাও জরুরি। কিন্তু অনেক স্কুলে শিক্ষার মান ভালো নয়, এবং শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারে না কেন পড়ছে। বই মুখস্থ করিয়ে পাশ করানোই যেন একমাত্র লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। এতে করে পড়ালেখা থেকে আগ্রহ হারিয়ে যায়।

এই প্রতিটি কারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ হারিয়ে ফেলে। তাই শুধু “স্কুলে ভর্তি করালেই দায়িত্ব শেষ” — এমন ভাবা চলবে না। আমাদের বুঝতে হবে কেন একজন শিশু স্কুল ছাড়ছে, এবং কীভাবে আমরা তাকে ফিরিয়ে আনতে পারি।

৩।  শিক্ষার্থী ঝরে পড়া বন্ধে পরিবার, সমাজ ও শিক্ষকের দায়িত্ব

শিক্ষার্থীরা কেন পড়াশোনা ছেড়ে দেয়, তা বোঝার পর আমাদের দায়িত্ব হলো তাদের পাশে দাঁড়ানো। এই দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, বরং পরিবার, সমাজ এবং শিক্ষকেরাও এর বড় অংশীদার। যদি সবাই একসাথে কাজ করে, তাহলে ঝরে পড়ার হার অনেক কমানো সম্ভব।

১. পরিবারের ভূমিকা:

একজন শিশুর শিক্ষা জীবনের প্রথম শিক্ষক তার বাবা-মা। পরিবার যদি সচেতন থাকে, তাহলে শিশুও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী হয়। অনেক সময় দেখা যায়, বাবা-মা নিজেরাই লেখাপড়া না জানা বা দারিদ্র্যের কারণে সন্তানের পড়াশোনাকে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু তাদের উচিত সন্তানকে উৎসাহিত করা, যতটা সম্ভব সাহায্য করা—even ছোট্ট একটা “তুমি পারবে” বলাটাও অনেক বড় শক্তি দেয়।

বাচ্চাদের শারীরিক এবং মানসিক চাহিদার যত্ন নেওয়া, নিয়মিত স্কুলে পাঠানো, এবং ক্লাসের খোঁজখবর রাখা—এসবই পরিবারের কাজ। শিক্ষার্থীর পাশে থেকে তাকে বোঝাতে হবে, পড়ালেখা করলেই সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।

২. শিক্ষকের দায়িত্ব:

শিক্ষকরা কেবল বই পড়ান না, তারা ভবিষ্যৎ গড়েন। একজন শিক্ষক যদি একজন পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীকে সময় দেন, তাকে বুঝিয়ে বলেন, তার ভুল নিয়ে হাসাহাসি না করে পাশে থাকেন—তাহলেই শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস বাড়ে।

অনেক সময় শিক্ষার্থীরা কোনো কিছু বুঝতে না পারলে ক্লাসে প্রশ্ন করতেও ভয় পায়। তাই একজন শিক্ষককে বন্ধুর মতো আচরণ করতে হবে। তাদের উচিত দুর্বল শিক্ষার্থীদের আলাদা করে সাহায্য করা, এবং ভালো ফলাফল না করলেও তাকে অপমান না করা।

৩. সমাজের দায়িত্ব:

গ্রামে-গঞ্জে বা শহরে—যেখানেই হোক, সমাজের সবার উচিত শিশুদের পড়াশোনার বিষয়ে সচেতনতা ছড়ানো। যদি কোনো প্রতিবেশীর সন্তান স্কুলে না যায়, তবে তাকে উৎসাহ দেওয়া, তার পরিবারকে বোঝানো—এসব আমাদের দায়িত্ব। সমাজ যদি সচেতন না হয়, তাহলে একে একে অনেক শিশুই ঝরে পড়বে।

একটি শিক্ষিত সমাজ গড়তে হলে আমাদের ছোট ছোট পদক্ষেপ নিতে হবে। এটি কেবল একজন ছাত্রের নয়, বরং পুরো দেশের ভবিষ্যতের প্রশ্ন।

৪। শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে সরকার ও নীতিনির্ধারকদের ভূমিকা

শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার, আর সেই অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের বড় ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার শিক্ষাখাতে অনেক কাজ করলেও এখনো শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে আরও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন। সরকারের সচেতন ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।

১. বিনামূল্যে বই ও উপকরণ প্রদান:

বাংলাদেশে সরকার অনেক আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করছে। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে শুধু বই দিলেই হবে না—খাতা, কলম, স্কুল ব্যাগ ইত্যাদির খরচ অনেক পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। এই দিকেও সরকারের সাহায্য বাড়ানো দরকার।

২. উপবৃত্তি ও আর্থিক সহায়তা:

দারিদ্র্যই যদি প্রধান কারণ হয়, তাহলে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত উপবৃত্তি চালু করা এবং তা সময়মতো বিতরণ নিশ্চিত করা জরুরি। বিশেষ করে কন্যাশিশুদের জন্য আলাদা আর্থিক সহায়তা এবং স্কুলে নিয়মিত উপস্থিত থাকার ভিত্তিতে পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে।

৩. বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ:

সরকারকে বাল্যবিবাহ রোধে আরও কঠোর হতে হবে। মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে হবে। স্কুলে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা টয়লেট, স্যানিটারি ব্যবস্থা এবং নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করলে অনেক পরিবার মেয়েদের পড়াশোনার প্রতি আরও আগ্রহী হবে।

৪. মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ:

শুধু স্কুল খোলা থাকলেই হবে না, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, পাঠদানের মান, পাঠ্যসূচি আধুনিকীকরণ—এসবের দিকেও নজর দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যদি স্কুলে গিয়ে কিছু শিখতে না পারে, তাহলে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।

৫. স্কুল পরিদর্শন ও তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত:

ঝরে পড়ার হার কোথায় বেশি, কারা ঝরে পড়ছে, কেন পড়ছে—এসব তথ্য সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। স্কুলগুলোর ওপর নিয়মিত তদারকি এবং শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির পরিসংখ্যান রাখাও জরুরি।

শিক্ষার জন্য বাজেট বাড়ানো, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা, এবং দুর্নীতি মুক্তভাবে সব কার্যক্রম পরিচালনা করলেই শিক্ষার্থীরা আর ঝরে পড়বে না। সরকারের এই উদ্যোগগুলো যদি বাস্তবায়ন হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আরও শিক্ষিত, সচেতন এবং সম্ভাবনাময়।

৫। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া বন্ধে আমাদের করণীয় ও সম্মিলিত উদ্যোগ

শুধু পরিবার, শিক্ষক বা সরকার নয়—আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু দায়িত্ব আছে যাতে একটি শিশুও আর স্কুল থেকে ঝরে না পড়ে। সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে এবং ছোট ছোট উদ্যোগ নিয়েই বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব।

১. সচেতনতা বৃদ্ধি:

অনেকেই জানেন না যে স্কুল থেকে ঝরে পড়া কীভাবে একজন শিশুর জীবন ধ্বংস করে দিতে পারে। তাই সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া, মসজিদ-মন্দিরের খুতবা বা ধর্মীয় আলোচনায় ঝরে পড়া রোধে বার্তা প্রচার করা যেতে পারে। স্থানীয়ভাবে পাড়া-মহল্লায় সচেতনতামূলক মিটিং, কর্মশালা বা পোস্টার ব্যবহার করাও কাজে দেবে।

২. প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ সেবা:

ঝরে পড়া রোধে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের জন্য মানসিক সহায়তা ও পরামর্শ সেবা চালু করা যেতে পারে। অনেক সময় শিশুরা নানা চাপের মধ্যে থাকে, যেমন—পরীক্ষার ভয়, পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া, পারিবারিক সমস্যা ইত্যাদি। এসব বিষয়ে কাউন্সেলিং করে তাদের মানসিকভাবে শক্ত করা যায়।

৩. সহযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি:

স্কুল যেন হয় একটি আনন্দঘন জায়গা, যেখানে শিশুরা আনন্দের সাথে শিখতে পারে। খেলাধুলা, চিত্রাঙ্কন, গান-বাজনা, নাটক—এসব সহশিক্ষা কার্যক্রম বাড়ানো দরকার। এতে করে শিশুদের স্কুলে আগ্রহ বাড়বে, তারা আনন্দ পাবে, এবং পড়ালেখা থেকে দূরে সরে যাবে না।

৪. স্থানীয় উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতা:

বিভিন্ন এনজিও, দাতব্য সংস্থা, স্থানীয় বিত্তবান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চাইলে স্কুলকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে পারে। তারা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনিফর্ম, বই, বা উপহার দিতে পারে। এতে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়।

৫. একটি শিশুও যেন পিছিয়ে না পড়ে – এই মানসিকতা গড়ে তোলা:

শেষ কথা হলো—প্রতিটি শিশু গুরুত্বপূর্ণ। সে ভালো ছাত্র হোক বা দুর্বল, শহরে থাকুক বা গ্রামে, ধনী হোক বা দরিদ্র—তাকে পড়াশোনার সুযোগ দিতে হবে। আমাদের মানসিকতা বদলাতে হবে। পড়াশোনা যেন শুধু পরীক্ষায় পাশ করবার জন্য নয়, বরং একজন ভালো মানুষ, সচেতন নাগরিক এবং সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য—এই বিশ্বাসে শিশুকে গড়ে তুলতে হবে।

একসাথে কাজ করলেই শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমানো সম্ভব। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষিত করে তোলার এই যুদ্ধ আমাদের সবার।

উপসংহার:

শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো জাতির ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই এই সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া নয়—সমাধানের জন্য সক্রিয় হওয়াই এখন সময়ের দাবি। পরিবার, শিক্ষক, সমাজ এবং সরকার—সবাই যদি নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে, তাহলে একটি শিক্ষার্থীও আর পড়ালেখা ছেড়ে যাবে না। শিশুদের শুধু বই মুখস্থ করানো নয়, তাদের পাশে দাঁড়ানো, উৎসাহ দেওয়া এবং শেখার প্রতি ভালোবাসা জাগানো—এই হল আসল শিক্ষা। আসুন, আমরা সবাই মিলে একসাথে এমন একটি সমাজ গড়ে তুলি, যেখানে “ঝরে পড়া” শব্দটি থাকবে কেবল অতীতের ইতিহাসে।

Leave a Comment

You cannot copy content of this page