বিদেশে চাকরি করা বাংলাদেশের অনেক তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন। অনেকেই মনে করেন বিদেশে কাজ মানেই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, পরিবারের জন্য ভালো জীবন এবং নিজের ক্যারিয়ারে নতুন দিগন্তের সূচনা। তবে বাস্তবতা হলো, বিদেশে কাজ পাওয়া সহজ নয়। এর জন্য নির্ভুল পরিকল্পনা, উপযুক্ত প্রস্তুতি এবং সঠিক পদ্ধতির মাধ্যমে এগোতে হয়। যদি আপনি সঠিক তথ্য জানেন, দক্ষতা অর্জন করেন এবং সরকারের নির্ধারিত নিয়ম মেনে কাজ করেন, তাহলে বিদেশে সম্মানজনক চাকরি পাওয়া সম্ভব। আজকের এই লেখায় জানবো, বাংলাদেশীদের জন্য বিদেশে চাকরি পাওয়ার সহজ, নিরাপদ এবং কার্যকর পথ।
১. সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
বিদেশে কাজের জন্য প্রথম ধাপ হচ্ছে আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ। কোন দেশে যেতে চান এবং কোন ধরনের চাকরি করতে আগ্রহী, সেটি পরিষ্কার করতে হবে। যেমন, কেউ দক্ষ শ্রমিক হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে যেতে চায়, কেউ দক্ষিণ কোরিয়ায় EPS প্রোগ্রামে অংশ নিতে চায়, আবার কেউ ইউরোপ বা কানাডায় পেশাদার চাকরি করতে চায়।
আপনি কোন কাজে অভিজ্ঞ বা দক্ষ, সেটি যাচাই করুন। আপনার দক্ষতা যদি কারিগরি, নির্মাণ, গার্মেন্টস বা কৃষি খাতের হয়, তবে মধ্যপ্রাচ্য বা এশিয়ার দেশগুলো হতে পারে আপনার লক্ষ্য। যদি আইটি বা স্বাস্থ্য খাতে কাজ করতে চান, তবে ইউরোপ, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার দিকে লক্ষ্য করুন। সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করলে পরিকল্পনা সহজ হবে।
২. প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করুন
বিদেশি নিয়োগকর্তারা সবসময় দক্ষ এবং পেশাগতভাবে প্রশিক্ষিত কর্মী খোঁজেন। তাই বিদেশে কাজ করতে চাইলে প্রয়োজনীয় কাজের দক্ষতা অর্জন করা জরুরি।
আপনি যদি দক্ষ শ্রমিক হিসেবে বিদেশ যেতে চান, তাহলে কারিগরি প্রশিক্ষণ নিন। যেমন- ইলেকট্রিশিয়ান, ওয়েল্ডার, মেশিন অপারেটর, কৃষিকাজ ইত্যাদি। আবার, যদি আপনি সফটওয়্যার, ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইন বা আইটি পেশায় যেতে চান, তাহলে কম্পিউটার দক্ষতা অর্জন করুন। বিদেশি নিয়োগদাতারা সার্টিফিকেট, কাজের অভিজ্ঞতা এবং হাতে-কলমে দক্ষতাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়।
৩. ভাষার গুরুত্ব বুঝুন
বিদেশে কাজের ক্ষেত্রে ভাষার দক্ষতা অপরিহার্য। অনেক দেশে স্থানীয় ভাষা জানা বাধ্যতামূলক। ইংরেজি ভাষা আন্তর্জাতিকভাবে সব দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজ করতে চাইলে কোরিয়ান ভাষায় TOPIK পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। জাপানে TITP প্রোগ্রামের জন্য জাপানি ভাষা শিখতে হয়। মধ্যপ্রাচ্যের জন্য আরবি ভাষা জানা সুবিধাজনক, যদিও অনেক ক্ষেত্রেই ইংরেজি চলে। ইংরেজি ভালো জানলে ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকাতে কাজের সুযোগ অনেক বেশি। ভাষা শেখা বিদেশে টিকে থাকার জন্যও অপরিহার্য।
৪. সঠিক সরকারি বা বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি বেছে নিন
দালাল ও প্রতারকদের ফাঁদ থেকে নিজেকে বাঁচানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে সরকার অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে কাজের জন্য আবেদন করা।
বাংলাদেশ সরকারের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (BMET) এবং BOESL (বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড) এর মাধ্যমে আবেদন করা সবচেয়ে নিরাপদ। EPS, TITP, GCC প্রোগ্রামগুলোর অফিসিয়াল নোটিশ অনুসরণ করুন। দালালরা সাধারণত বেশি টাকা দাবি করে এবং প্রতারণা করে, তাই সরাসরি সরকারি প্রক্রিয়ার মধ্যেই থাকুন।
৫. অনলাইনে চাকরির জন্য আবেদন করুন
বর্তমানে অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে বিশ্বের অনেক দেশেই চাকরি পাওয়া যায়। এতে খরচ কম, সময় বাঁচে এবং প্রতারণার আশঙ্কা কমে।
সরকারি ও বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট থেকে নিয়মিত চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখুন। EPS এর জন্য eps.boesl.gov.bd ওয়েবসাইট চেক করুন। LinkedIn, Glassdoor, Bayt, GulfTalent এবং Indeed এর মতো ওয়েবসাইটে একাউন্ট খুলে নিয়মিত আবেদন করুন। বিদেশি চাকরির জন্য পেশাদার সিভি প্রস্তুত রাখুন এবং প্রোফাইল হালনাগাদ করুন।
৬. ভিসা ও ডকুমেন্ট প্রস্তুত রাখুন
বিদেশে চাকরি পেতে গেলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট প্রয়োজন। এগুলো আগে থেকেই প্রস্তুত রাখলে প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়।
আপনার পাসপোর্ট থাকতে হবে, এবং তার মেয়াদ কমপক্ষে এক বছর থাকতে হবে। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিতে হবে, যা প্রমাণ করে আপনি কোনো অপরাধে জড়িত নন। মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট থাকতে হবে, যা আপনার শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করে। শিক্ষাগত ও পেশাগত সার্টিফিকেট, ভাষা পরীক্ষার সনদপত্র (যদি প্রয়োজন হয়) সবকিছু সঠিকভাবে প্রস্তুত রাখুন।
৭. সতর্কতা: দালাল থেকে সাবধান থাকুন
বিদেশে চাকরি দিতে গিয়ে অনেক মানুষ দালালের ফাঁদে পড়ে। দালালরা অতিরিক্ত টাকা দাবি করে এবং মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করে।
কখনোই দালালের কাছে পাসপোর্ট বা মূল কাগজপত্র দেবেন না। টাকা লেনদেনের আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বৈধতা যাচাই করুন। সরকারি ওয়েবসাইট থেকে নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করুন। আপনার পরিচিত বা যারা বিদেশে আছেন, তাদের থেকে পরামর্শ নিন। প্রতারণার শিকার হলে অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা নিন।
৮. বিদেশে গিয়ে কীভাবে সফল হবেন
বিদেশে কাজের সুযোগ পাওয়া মানেই সবকিছু শেষ নয়। সফল হতে হলে আপনাকে কাজের প্রতি নিষ্ঠা, সততা এবং সহনশীল মনোভাব রাখতে হবে।
আপনি যেই দেশে যান, সেই দেশের আইন, সংস্কৃতি এবং নিয়ম-কানুন মেনে চলুন। নিয়োগকর্তার নির্দেশ মেনে সময়মতো কাজ করুন। নতুন পরিবেশে দ্রুত মানিয়ে নিতে চেষ্টা করুন। অর্থ সঞ্চয় করুন, অপচয় এড়িয়ে চলুন এবং পরিবারের জন্য নিরাপদ ভবিষ্যত তৈরি করুন। নিজের দক্ষতা বাড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যান, যাতে ভবিষ্যতে আরও ভালো সুযোগ পেতে পারেন।
নিচে বাংলাদেশীদের জন্য বিদেশে চাকরির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০০ প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হলো:
প্রশ্ন ১: বাংলাদেশ থেকে কীভাবে বিদেশে চাকরি পাওয়া যায়?
উত্তর: সঠিক দক্ষতা অর্জন, ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধি, সরকারি বা বৈধ এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন এবং অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে বিদেশে চাকরি পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ২: বিদেশে চাকরির জন্য কোন ডকুমেন্টগুলো লাগে?
উত্তর: বৈধ পাসপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, মেডিকেল রিপোর্ট, শিক্ষাগত সনদপত্র, পেশাগত সার্টিফিকেট এবং ভাষা পরীক্ষার সনদপত্র প্রয়োজন।
প্রশ্ন ৩: কোন দেশগুলোতে বাংলাদেশীরা বেশি কাজের সুযোগ পায়?
উত্তর: দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ইউরোপের কিছু দেশ, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া।
প্রশ্ন ৪: দক্ষিণ কোরিয়াতে কীভাবে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়?
উত্তর: EPS প্রোগ্রামের মাধ্যমে কোরিয়ান ভাষা শিখে এবং TOPIK পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে BMET বা BOESL-এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
প্রশ্ন ৫: বিদেশে চাকরির ক্ষেত্রে ভাষার গুরুত্ব কতটুকু?
উত্তর: ভাষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক দেশে স্থানীয় ভাষা জানা বাধ্যতামূলক। ইংরেজি জানলে সুযোগ অনেক বেশি।
প্রশ্ন ৬: কিভাবে দালাল থেকে সাবধান থাকা যায়?
উত্তর: সরকার অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করুন, দালালের কাছে পাসপোর্ট বা টাকা দিবেন না, সব সময় সরকারি ওয়েবসাইট অনুসরণ করুন।
প্রশ্ন ৭: বিদেশে চাকরি পাওয়ার জন্য কোথায় আবেদন করা যায়?
উত্তর: BOESL, BMET, EPS অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, এবং LinkedIn, Glassdoor, Indeed, GulfTalent-এর মতো অনলাইন প্লাটফর্মে আবেদন করা যায়।
প্রশ্ন ৮: বিদেশে চাকরির জন্য কোন প্রশিক্ষণ দরকার?
উত্তর: কারিগরি, স্বাস্থ্য, নির্মাণ, কৃষি, আইটি, হসপিটালিটি বা আপনার পছন্দের সেক্টরের দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
প্রশ্ন ৯: মেডিকেল টেস্টের কি দরকার?
উত্তর: হ্যাঁ, বিদেশে যেতে হলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার প্রমাণ দিতে মেডিকেল রিপোর্ট বাধ্যতামূলক।
প্রশ্ন ১০: বিদেশে চাকরি করতে গেলে খরচ কত হয়?
উত্তর: সরকার অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে খরচ অনেক কম। দালালের মাধ্যমে খরচ বেশি এবং ঝুঁকি বেশি। EPS বা BOESL-এর মাধ্যমে গেলে স্বল্প খরচে সম্ভব।
প্রশ্ন ১১: অনলাইন আবেদন কি নিরাপদ?
উত্তর: হ্যাঁ, যদি আপনি সরকার অনুমোদিত এবং বিশ্বস্ত অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করেন তবে এটি নিরাপদ।
প্রশ্ন ১২: কি ধরনের সিভি দরকার?
উত্তর: বিদেশি নিয়োগদাতাদের জন্য প্রফেশনাল এবং ইংরেজিতে লেখা সিভি দরকার। কাজের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
প্রশ্ন ১৩: বিদেশে গিয়ে কিভাবে টিকে থাকতে হয়?
উত্তর: কাজের প্রতি নিষ্ঠা, নিয়ম-কানুন মেনে চলা, ভাষা শেখা, এবং পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া খুব জরুরি।
প্রশ্ন ১৪: কোন বিদেশি ভাষা শিখলে ভালো?
উত্তর: ইংরেজি, কোরিয়ান, জাপানি, আরবি শেখা বেশি উপকারি।
প্রশ্ন ১৫: BOESL কী?
উত্তর: BOESL (Bangladesh Overseas Employment and Services Limited) হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের একটি সংস্থা যারা বিদেশে নিরাপদ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে।
প্রশ্ন ১৬: EPS প্রোগ্রাম কী?
উত্তর: EPS (Employment Permit System) দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার পরিচালিত একটি প্রোগ্রাম, যেখানে ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশীরা কাজের সুযোগ পায়।
প্রশ্ন ১৭: বিদেশে চাকরির জন্য IELTS লাগবে কি?
উত্তর: ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতে অনেকক্ষেত্রে IELTS প্রয়োজন, তবে মধ্যপ্রাচ্য বা দক্ষিণ কোরিয়াতে সাধারণত প্রয়োজন হয় না।
প্রশ্ন ১৮: চাকরি পাওয়ার পরে ভিসা পেতে কত সময় লাগে?
উত্তর: নিয়োগপত্র পাওয়ার পরে সাধারণত ১ থেকে ৩ মাসের মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
প্রশ্ন ১৯: জাপানে কাজ করার নিয়ম কী?
উত্তর: TITP বা Specified Skilled Worker (SSW) প্রোগ্রামের মাধ্যমে জাপানে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়। জাপানি ভাষা শিখে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।
প্রশ্ন ২০: কিভাবে নিশ্চিত হবো চাকরির অফার ভুয়া নয়?
উত্তর: কোম্পানির ওয়েবসাইট, কন্ট্রাক্ট ডকুমেন্ট, BOESL বা BMET-এর যাচাই করা তথ্য দেখুন। সন্দেহ হলে সরকারি হটলাইনে যোগাযোগ করুন।
প্রশ্ন ২১: কিভাবে দক্ষতা উন্নয়নের সঠিক কোর্স নির্বাচন করব?
উত্তর: বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, BMET, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (TTC), এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃত অনলাইন কোর্স থেকে আপনার পছন্দের ও প্রয়োজনীয় কোর্স নির্বাচন করতে হবে।
প্রশ্ন ২২: বিদেশে কাজের ক্ষেত্রে মহিলা প্রার্থীদের সুযোগ কেমন?
উত্তর: নারীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, গার্মেন্টস, পরিচর্যা, হসপিটালিটি, এবং কারিগরি খাতে ভালো সুযোগ রয়েছে। তবে নিরাপত্তার জন্য সরকার অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমেই যেতে হবে।
প্রশ্ন ২৩: বিদেশে চাকরি করতে গিয়ে সবচেয়ে সাধারণ প্রতারণা কী?
উত্তর: ভুয়া ভিসা, ভুয়া অফিস, অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, ভুল চুক্তি বা দেশে যাওয়ার পরে ভিন্ন চাকরি দেওয়া — এগুলোই সাধারণ প্রতারণার ধরন।
প্রশ্ন ২৪: বিদেশে কাজের আগে ভাষার পরীক্ষায় কি ধরনের প্রশ্ন আসে?
উত্তর: সাধারণত ভাষার মৌলিক জ্ঞান, পড়া, লেখা, শোনা এবং কিছু কথোপকথনের প্রশ্ন থাকে। TOPIK (কোরিয়ান) ও JLPT (জাপানি) এর নিজস্ব সিলেবাস অনুসরণ করা উচিত।
প্রশ্ন ২৫: বিদেশে চাকরি করতে গেলে বয়সসীমা কত?
উত্তর: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন, তবে EPS বা কিছু প্রোগ্রামে নির্দিষ্ট বয়সসীমা থাকতে পারে।
প্রশ্ন ২৬: কোন ধরনের চাকরিতে দ্রুত ভিসা পাওয়া যায়?
উত্তর: দক্ষ শ্রমিক, কৃষি, নির্মাণ, পরিচর্যা ও স্বাস্থ্যসেবার কাজে তুলনামূলকভাবে দ্রুত ভিসা পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ২৭: BOESL-এর মাধ্যমে বিদেশ যেতে খরচ কেমন?
উত্তর: BOESL-এর মাধ্যমে বিদেশ যেতে সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম ফি প্রযোজ্য, সাধারণত ১ লাখ টাকার মধ্যেই সব খরচ সম্পন্ন হয়।
প্রশ্ন ২৮: কীভাবে বিদেশি চাকরির ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুত হবো?
উত্তর: পেশাগত দক্ষতা, ভাষার প্রস্তুতি, নিজের কাজের অভিজ্ঞতা ভালোভাবে জানুন এবং নিয়োগকারী দেশের সংস্কৃতি ও চাকরির ধরণ শিখে ইন্টারভিউ দিন।
প্রশ্ন ২৯: বিদেশে চাকরি করতে গেলে কি কোনো ফাঁকি দেওয়া যায়?
উত্তর: কখনোই ভিসা, কাজ, বা সরকারের নিয়মের ক্ষেত্রে ফাঁকি দেওয়া উচিত নয়। এতে ভিসা বাতিল বা আইনি সমস্যায় পড়ার ঝুঁকি থাকে।
প্রশ্ন ৩০: অনলাইন সিভি তৈরির জন্য ভালো ওয়েবসাইট কী?
উত্তর: Canva, Novoresume, Zety এবং Europass এর মতো ওয়েবসাইটে সহজে বিদেশের উপযোগী সিভি তৈরি করা যায়।
প্রশ্ন ৩১: EPS টপিক পরীক্ষায় পাশ নম্বর কত?
উত্তর: সাধারণত ২০০ নম্বরের মধ্যে ৮০-৮৫ পেতে হয়, তবে প্রতি বছর শর্ত ও নম্বর পরিবর্তন হতে পারে।
প্রশ্ন ৩২: বিদেশে চাকরির ক্ষেত্রে কোন দেশে বেশি নিরাপত্তা আছে?
উত্তর: দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ইউরোপের দেশগুলো এবং কানাডাতে শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা তুলনামূলক বেশি ভালো।
প্রশ্ন ৩৩: বিদেশে যাওয়ার পরে কীভাবে ভাষা আরও ভালো শেখা যায়?
উত্তর: স্থানীয় ভাষার কোর্সে ভর্তি হওয়া, সহকর্মীদের সঙ্গে ভাষার চর্চা করা, টিভি, ইউটিউব, ও মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা।
প্রশ্ন ৩৪: বিদেশে চাকরির জন্য পার্টটাইম কাজের সুযোগ আছে কি?
উত্তর: স্টুডেন্ট ভিসায় অনেক দেশে পার্টটাইম কাজের সুযোগ আছে। তবে কর্মী ভিসায় নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়া অন্য কাজ করা বেআইনি।
প্রশ্ন ৩৫: BOESL কি শুধু দক্ষ শ্রমিক পাঠায়?
উত্তর: না, BOESL দক্ষ শ্রমিক, আধা-দক্ষ শ্রমিক এবং পেশাদার কর্মী — সব ধরনের লোক পাঠায়।
প্রশ্ন ৩৬: বিদেশে কাজের সময় পরিবার নেওয়া যায় কি?
উত্তর: নির্ভর করে ভিসার ধরণ ও দেশের নিয়মের উপর। অনেক দেশে নির্দিষ্ট সময় পর পরিবার নেওয়ার সুযোগ দেয়।
প্রশ্ন ৩৭: ইউরোপে কাজের জন্য কী ধরনের ভিসা দরকার?
উত্তর: ইউরোপে কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট, ব্লু-কার্ড বা স্পন্সরশিপ ভিত্তিক ভিসা প্রয়োজন।
প্রশ্ন ৩৮: দালাল চেনার সহজ উপায় কী?
উত্তর: দালালরা সাধারনত সরকার অনুমোদিত না, অতি দ্রুত বিদেশ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয়, বেশি টাকা দাবি করে এবং অপ্রমাণিত কাগজপত্র দেখায়।
প্রশ্ন ৩৯: মেডিকেল রিপোর্টের মেয়াদ কত?
উত্তর: সাধারণত ৩ থেকে ৬ মাস, নির্ভর করে কোন দেশের জন্য প্রয়োজন সেটির উপর।
প্রশ্ন ৪০: বিদেশে সফল হতে গেলে কীভাবে খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে?
উত্তর: অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে সঞ্চয় করা, পরিকল্পিত বাজেট করা এবং দেশে টাকা পাঠানোর সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।
প্রশ্ন ৪১: বিদেশে কাজ করতে গেলে কী ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজন হয়?
উত্তর: সাধারণত রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, এইচআইভি, হেপাটাইটিস, টিবি, ড্রাগ টেস্টসহ পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল চেকআপ করতে হয়।
প্রশ্ন ৪২: বিদেশে কাজের চুক্তিপত্রে কী কী দেখতে হবে?
উত্তর: বেতন, কর্মঘণ্টা, কাজের ধরণ, আবাসন, চিকিৎসা সুবিধা, ছুটির নিয়ম ও চুক্তির মেয়াদ ভালোভাবে পড়ে সই করতে হবে।
প্রশ্ন ৪৩: কোনো দেশে চাকরির জন্য সবচেয়ে বেশি চাহিদা কোন খাতে?
উত্তর: নির্মাণ, কৃষি, পরিচর্যা, কারিগরি কাজ, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট, স্বাস্থ্যসেবা, এবং আইটি খাতে বেশি চাহিদা রয়েছে।
প্রশ্ন ৪৪: বিদেশে কাজের ক্ষেত্রে কি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়া নিরাপদ?
উত্তর: ট্রাভেল এজেন্সি নয়, বরং সরকার অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি বা সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে যাওয়া নিরাপদ।
প্রশ্ন ৪৫: কিভাবে নিশ্চিত হবো চাকরির ভিসা আসল নাকি নকল?
উত্তর: নিজে ভিসা চেক করতে দেশের দূতাবাসে যাচাই করুন বা ই-ভিসা ওয়েবসাইটে যাচাই করুন।
প্রশ্ন ৪৬: বিদেশে যাওয়ার পর কিভাবে নতুন চাকরি খুঁজবো?
উত্তর: দেশের আইনের অনুমতি থাকলে অনলাইনে, স্থানীয় পত্রিকায় বা পরিচিতদের মাধ্যমে নতুন চাকরি খোঁজা যায়।
প্রশ্ন ৪৭: বিদেশে চাকরির ভিসার মেয়াদ ফুরালে কী করতে হবে?
উত্তর: মেয়াদ শেষের আগে ভিসা নবায়নের জন্য আবেদন করতে হবে, না হলে জরিমানা বা ডিপোর্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
প্রশ্ন ৪৮: বিদেশে যেতে হলে কি আগেই কাজ নিশ্চিত থাকতে হবে?
উত্তর: অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওয়ার্ক ভিসার আগে কাজ নিশ্চিত থাকতে হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে খালি ওয়ার্ক পারমিট দিয়েও যাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৪৯: বিদেশে পড়াশোনা করে পরে কাজ করার সুযোগ আছে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, অনেক দেশে স্টুডেন্ট ভিসা শেষে পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক ভিসার মাধ্যমে কাজ করার সুযোগ থাকে।
প্রশ্ন ৫০: বিদেশে কাজের ক্ষেত্রে চাকরিদাতা কতটুকু সুবিধা দেয়?
উত্তর: অধিকাংশ বৈধ চাকরির ক্ষেত্রে থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা, ট্রান্সপোর্ট এবং ওভারটাইম সুবিধা দিয়ে থাকে।
প্রশ্ন ৫১: চাকরির ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের কবে নেয়া যায়?
উত্তর: নির্ভর করে দেশের নিয়মের উপর, সাধারণত ১-২ বছর কাজের পর পরিবার নেয়ার অনুমতি পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৫২: বিদেশে যেতে কি IELTS বাধ্যতামূলক?
উত্তর: সব দেশের জন্য নয়, তবে ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে IELTS প্রায় অপরিহার্য।
প্রশ্ন ৫৩: মেডিকেল রিপোর্টে কোন কোন রোগ হলে বিদেশে যাওয়া যাবে না?
উত্তর: এইডস, হেপাটাইটিস, টিবি, ড্রাগ আসক্তি, বড় ধরনের সংক্রামক রোগ থাকলে সাধারণত ভিসা পাওয়া যায় না।
প্রশ্ন ৫৪: বিদেশে কাজের জন্য কোন দেশ কম খরচে যাওয়া যায়?
উত্তর: দক্ষিণ কোরিয়া (EPS), জাপান (TITP), মধ্যপ্রাচ্য — এই দেশগুলোতে সরকার অনুমোদিত চ্যানেলে কম খরচে যাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৫৫: কাজের মেয়াদ শেষে দেশে ফিরে আবার কি যাওয়া যাবে?
উত্তর: নির্ভর করে চুক্তি ও ভিসা নিয়মের উপর। অনেক দেশে পুনরায় যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
প্রশ্ন ৫৬: বিদেশে চাকরির জন্য কোন সার্টিফিকেট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: পাসপোর্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, কাজের অভিজ্ঞতার সনদ, ভাষার সনদ এবং মেডিকেল রিপোর্ট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন ৫৭: কোন ধরনের কাজের জন্য বেশি অভিজ্ঞতা লাগে?
উত্তর: পেশাদার ও টেকনিক্যাল কাজের (যেমন: ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, আইটি) জন্য অভিজ্ঞতা বেশি লাগে।
প্রশ্ন ৫৮: BOESL এর প্রক্রিয়া কতো সময় লাগে?
উত্তর: প্রক্রিয়া নির্ভর করে দেশের উপর। সাধারণত আবেদন থেকে ভিসা পেতে ৪-৬ মাস সময় লাগে।
প্রশ্ন ৫৯: বিদেশে কাজের সময় যদি চাকরি হারাই তাহলে কী হবে?
উত্তর: দ্রুত নতুন চাকরির চেষ্টা করতে হবে বা দেশে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। কিছু দেশে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত থাকতে দেয়।
প্রশ্ন ৬০: বিদেশে থাকা অবস্থায় কীভাবে পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখবো?
উত্তর: ইন্টারনেট, ফোন, ভিডিও কল, এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে সহজে পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখা যায়।
প্রশ্ন ৬১: বিদেশে চাকরির জন্য কি আগে থেকে ব্যাংকে টাকা রাখতে হয়?
উত্তর: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় না। তবে কেউ কেউ ব্যাংক স্টেটমেন্ট চায়, বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া গেলে।
প্রশ্ন ৬২: BOESL থেকে কীভাবে বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায়?
উত্তর: BOESL এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেইজে নিয়মিত চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। নিয়মিত চেক করতে হবে।
প্রশ্ন ৬৩: বিদেশে কাজের সময় কোনো সমস্যায় পড়লে কাকে জানাবো?
উত্তর: সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস বা কনস্যুলেট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। তারা আইনি সহায়তা দেয়।
প্রশ্ন ৬৪: বিদেশে থাকা অবস্থায় কি দেশে টাকা পাঠানো সহজ?
উত্তর: হ্যাঁ, ব্যাংক, মানি এক্সচেঞ্জ বা অনলাইন মানি ট্রান্সফার মাধ্যমে সহজেই টাকা পাঠানো যায়।
প্রশ্ন ৬৫: কোন দেশে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে কম IELTS স্কোর লাগে?
উত্তর: মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানে সাধারণত IELTS স্কোর প্রয়োজন হয় না বা কম লাগে।
প্রশ্ন ৬৬: বিদেশে কাজের জন্য কী ধরনের সিভি বানাতে হবে?
উত্তর: ইংরেজিতে, আধুনিক ফরম্যাটে, কাজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, ভাষাজ্ঞান এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
প্রশ্ন ৬৭: বিদেশে কাজ করতে চাইলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কোথায় থেকে নিতে হবে?
উত্তর: নিজ এলাকার থানায় আবেদন করে অথবা জেলা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করতে হয়।
প্রশ্ন ৬৮: BOESL থেকে কাজের সুযোগ পেলে কি বিদেশে যাওয়ার খরচ কম হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, সরকারি চ্যানেল BOESL এর মাধ্যমে বিদেশে গেলে খরচ তুলনামূলক অনেক কম হয় এবং ঝুঁকিও কম।
প্রশ্ন ৬৯: কোন দেশে নারী কর্মীদের জন্য বেশি সুযোগ আছে?
উত্তর: মধ্যপ্রাচ্য (গৃহকর্মী, নার্সিং, কেয়ারগিভার), জাপান (TITP), এবং ইউরোপে নারীদের চাহিদা অনেক।
প্রশ্ন ৭০: বিদেশে গিয়ে কি পড়াশোনা করার সুযোগ থাকে?
উত্তর: নির্ভর করে দেশের নিয়মের উপর। কিছু দেশে পার্ট টাইম পড়াশোনা করার সুযোগ দেওয়া হয়।
প্রশ্ন ৭১: বিদেশে কাজের জন্য কি নিজের খরচে যেতে হয়?
উত্তর: কিছু প্রোগ্রামে (BOESL, EPS) খরচ কম বা প্রায় ফ্রি। অন্য প্রাইভেট রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গেলে খরচ হয়।
প্রশ্ন ৭২: কাজের জায়গায় সমস্যা হলে কি চাকরি পরিবর্তন করা যায়?
উত্তর: নির্ভর করে দেশের ভিসা নিয়মের উপর। অনেক দেশে নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়া চাকরি পরিবর্তন করা যায় না।
প্রশ্ন ৭৩: বিদেশে কাজ করতে গেলে কি বয়সের সীমা আছে?
উত্তর: বেশিরভাগ দেশে ১৮ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত বয়স সীমা। তবে কিছু দেশে ৫০ বছর পর্যন্ত সুযোগ থাকে।
প্রশ্ন ৭৪: বিদেশে কাজের ভিসা কি স্পন্সর ছাড়া পাওয়া যায়?
উত্তর: কিছু দেশের জন্য স্পন্সর বা নিয়োগদাতা প্রয়োজন হয়। কিছু দেশে ওপেন ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৭৫: বিদেশে কাজ করার সময় কি ড্রাইভিং লাইসেন্স লাগবে?
উত্তর: নির্ভর করে কাজের ধরণ এবং দেশের নিয়মের উপর। পরিবহন খাতের কাজ হলে অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন।
প্রশ্ন ৭৬: কি করে জানবো বিদেশি কোম্পানি আসল নাকি ভুয়া?
উত্তর: কোম্পানির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, রিভিউ, লাইসেন্স নম্বর এবং সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে যাচাই করতে হবে।
প্রশ্ন ৭৭: বিদেশে কাজ করতে গেলে কি স্বাস্থ্য বীমা বাধ্যতামূলক?
উত্তর: অনেক দেশে স্বাস্থ্য বীমা বাধ্যতামূলক। নিয়োগকর্তা অনেক সময় এটি সরবরাহ করে।
প্রশ্ন ৭৮: বিদেশে গিয়ে কি অন্য দেশে যাওয়া সম্ভব?
উত্তর: নির্ভর করে ভিসার ধরণ এবং দেশের অভিবাসন আইনের উপর। অনেক সময় ওয়ার্ক ভিসা শুধু নির্দিষ্ট দেশের জন্যই সীমিত।
প্রশ্ন ৭৯: বিদেশে কাজের সময় কি ধর্ম পালনের সুযোগ থাকে?
উত্তর: অধিকাংশ দেশে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা আছে, তবে কিছু দেশে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করতে হয়।
প্রশ্ন ৮০: বিদেশে কাজ করতে গিয়ে যদি অসুস্থ হই তাহলে কী করবো?
উত্তর: যদি স্বাস্থ্য বীমা থাকে, তাহলে নির্ধারিত হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া যায়। আর দ্রুত নিয়োগকর্তা এবং বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানাতে হবে।
প্রশ্ন ৮১: বিদেশে কাজের মেয়াদ শেষ হলে কি ভিসা নবায়ন করা যায়?
উত্তর: নির্ভর করে দেশের নিয়ম এবং কোম্পানির চাহিদার উপর। অনেক সময় কোম্পানি ভিসা নবায়নে সহায়তা করে।
প্রশ্ন ৮২: কি করে জানবো আমার রিক্রুটিং এজেন্সি বৈধ?
উত্তর: বাংলাদেশ সরকারের BMET ওয়েবসাইটে এজেন্সির লাইসেন্স নম্বর এবং বৈধতা যাচাই করতে হবে।
প্রশ্ন ৮৩: বিদেশে কাজের পর কি স্থায়ী হতে পারি?
উত্তর: কিছু দেশে দীর্ঘদিন বৈধভাবে কাজ করলে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ থাকে, যেমন কানাডা, অস্ট্রেলিয়া।
প্রশ্ন ৮৪: বিদেশে কাজের জন্য মেডিকেল টেস্ট কোথায় করাবো?
উত্তর: সরকার অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারে মেডিকেল টেস্ট করতে হবে, যা BMET ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৮৫: কোরিয়ার EPS পরীক্ষায় কত শতাংশ নম্বর পেতে হয়?
উত্তর: কোরিয়া সরকারের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুসারে, সাধারণত ভাষা পরীক্ষায় ন্যূনতম 50-60% পাস নম্বর।
প্রশ্ন ৮৬: বিদেশে কাজের আগে কি প্রি-ডিপারচার ট্রেনিং নিতে হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, BOESL বা BMET এর মাধ্যমে বিদেশে যাবার আগে ওরিয়েন্টেশন বা প্রি-ডিপারচার ব্রিফিং নেওয়া বাধ্যতামূলক।
প্রশ্ন ৮৭: মালয়েশিয়াতে কাজের চাহিদা কেমন?
উত্তর: মালয়েশিয়ায় নির্মাণ, কৃষি, পরিষেবা, ইলেকট্রনিক্স কারখানায় বাংলাদেশিদের চাহিদা অনেক বেশি।
প্রশ্ন ৮৮: বিদেশে কাজ করতে গেলে কি ফ্যামিলি নিয়ে যেতে পারি?
উত্তর: নির্ভর করে ভিসার ধরণ এবং দেশের নিয়মের উপর। অনেক ওয়ার্ক পারমিটে ফ্যামিলি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
প্রশ্ন ৮৯: বিদেশে গিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করা যায় কি?
উত্তর: স্টুডেন্ট ভিসার আওতায় অনেক দেশে পার্ট-টাইম কাজ করার অনুমতি দেয়।
প্রশ্ন ৯০: বাংলাদেশ থেকে কোন কোন দেশ কম খরচে যাওয়া যায়?
উত্তর: দক্ষিণ কোরিয়া (EPS), জাপান (TITP), সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার ইত্যাদি দেশে সরকারিভাবে কম খরচে যাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৯১: বিদেশে কাজ করতে গিয়ে পার্ট-টাইম ব্যবসা করা যায় কি?
উত্তর: নির্ভর করে দেশের আইনের উপর। অনেক দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় ব্যবসা করার অনুমতি নেই।
প্রশ্ন ৯২: বিদেশে কাজের ক্ষেত্রে কি cultural training দরকার?
উত্তর: অনেক দেশে cultural training অত্যন্ত উপকারী। বিদেশি সংস্কৃতি বুঝতে এবং দ্রুত মানিয়ে নিতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন ৯৩: বিদেশে কাজ করতে গেলে পরিবারের জন্য কি কোনো সুবিধা পাওয়া যায়?
উত্তর: ফ্যামিলি ভিসার সুযোগ থাকলে পরিবার নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়। অনেক দেশে ফ্যামিলি সাপোর্ট সুবিধাও দেওয়া হয়।
প্রশ্ন ৯৪: বিদেশে কাজের জন্য কোন দেশের আইটি সেক্টরে বেশি সুযোগ?
উত্তর: কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপের কিছু দেশ এবং জাপান বাংলাদেশি আইটি পেশাজীবীদের জন্য ভালো গন্তব্য।
প্রশ্ন ৯৫: বিদেশে কি কাজের নিরাপত্তা (Job Security) বেশি?
উত্তর: সরকার অনুমোদিত ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে গেলে সাধারণত কাজের নিরাপত্তা বেশি। তবে চুক্তির শর্ত বুঝে নিতে হবে।
প্রশ্ন ৯৬: বিদেশে কাজ করতে গিয়ে মজুরি নিয়ে কি প্রতারণা হতে পারে?
উত্তর: দালালের মাধ্যমে গেলে প্রতারণার সম্ভাবনা বেশি। সরকারিভাবে বা বিশ্বস্ত এজেন্সি দিয়ে গেলে মজুরি সঠিকভাবে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৯৭: বিদেশে কি শ্রমিক ইউনিয়নে যোগ দেওয়া যায়?
উত্তর: নির্ভর করে দেশের শ্রম আইনের উপর। অনেক দেশে শ্রমিকদের ইউনিয়নে যোগ দেওয়ার অধিকার থাকে।
প্রশ্ন ৯৮: BOESL এর মাধ্যমে কি ইউরোপে যাওয়া যায়?
উত্তর: বর্তমানে BOESL এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মধ্যপ্রাচ্যে সুযোগ বেশি। ইউরোপের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করতে হয়।
প্রশ্ন ৯৯: বিদেশে কি খাদ্য ও বাসস্থানের সুবিধা দেওয়া হয়?
উত্তর: অনেক কোম্পানি খাদ্য ও বাসস্থান দেয়, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার দেশগুলোতে। চুক্তির আগে নিশ্চিত হতে হবে।
প্রশ্ন ১০০: বিদেশে কাজের সময় কি কোন আইনি সমস্যা হলে দেশে ফিরে আসতে হয়?
উত্তর: সবসময় না। অনেক সময় দূতাবাস এবং কোম্পানির সহায়তায় সমস্যার সমাধান সম্ভব। তবে গুরুতর আইনি সমস্যা হলে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
উপসংহার
বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কাজের সুযোগ পাওয়া এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ, যদি আপনি সঠিক পথে এগোন। সতর্কতা, ধৈর্য, দক্ষতা এবং সরকারি নিয়ম মেনে চললে আপনি নিশ্চিন্তে বিদেশে গিয়ে সম্মানজনক কাজ করতে পারবেন। আপনার স্বপ্ন পূরণের জন্য দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত গ্রহণই হবে সাফল্যের চাবিকাঠি।