“ঘরে বসেই পাসপোর্ট! বাংলাদেশে অনলাইনে ডিজিটাল পাসপোর্ট করার সহজ নিয়ম”

Spread the love

আজকের যুগে প্রায় প্রতিটি সরকারি সেবা অনলাইনে পাওয়া যায়। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেবা হলো পাসপোর্ট। বাংলাদেশের নাগরিকরা এখন ঘরে বসে ডিজিটাল পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারেন। অনলাইন পদ্ধতি সময় সাশ্রয়ী, সহজ, এবং কাগজপত্রের ঝামেলা কমায়।

এটি বিদেশ ভ্রমণ, শিক্ষা, ব্যবসা কিংবা অন্য যেকোনো কারণে জরুরি নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক। অনলাইনে আবেদন করার ফলে, নাগরিকরা সহজেই নিজের সময় অনুযায়ী আবেদন ফর্ম পূরণ করতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সরাসরি সরকারী সিস্টেমে জমা দিতে পারেন।

অনলাইনে ডিজিটাল পাসপোর্ট করার নিয়ম

১। পাসপোর্ট অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে লগইন করুন
প্রথমে জাতীয় পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করুন। নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য “নতুন ব্যবহারকারী রেজিস্ট্রেশন” অপশন থেকে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।

২। নতুন আবেদন ফর্ম পূরণ করুন

 লগইন করার পর “নতুন পাসপোর্ট আবেদন” অপশনটি নির্বাচন করুন। এখানে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম, জন্মতারিখ, ঠিকানা, পরিচয়পত্র নম্বর ইত্যাদি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

৩। দরকারি কাগজপত্র আপলোড করুন

জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) স্ক্যান কপি, জন্ম সনদ, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট অনলাইনে আপলোড করতে হবে। সব কাগজপত্র স্পষ্ট ও পাঠযোগ্য হতে হবে।

৪। ফি প্রদান করুন 

অনলাইনে পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার জন্য বিকাশ, ব্যাংক ট্রান্সফার বা ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা যায়। ফি জমা দেওয়ার পরে একটি পেমেন্ট রসিদ পাবেন।

৫। স্লট বুকিং ও সাক্ষাৎকারের জন্য সময় নির্ধারণ করুন

আবেদন ফর্ম সম্পূর্ণ করার পর আপনাকে নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে সাক্ষাৎকার এবং বায়োমেট্রিক তথ্যের জন্য স্লট বুক করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে অফিসে উপস্থিত হয়ে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

৬। স্ট্যাটাস চেক করুন

আবেদন জমা দেওয়ার পর, ওয়েবসাইটে লগইন করে আবেদন স্ট্যাটাস নিয়মিত চেক করা যায়। পাসপোর্ট তৈরি হলে ডাকযোগে বা অফিস থেকে তা গ্রহণ করতে পারবেন।

উপসংহার

বাংলাদেশে অনলাইনে ডিজিটাল পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সহজ, নিরাপদ এবং সময় সাশ্রয়ী। নাগরিকরা এখন ঘরে বসেই আবেদন করতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য অনলাইনে সরবরাহ করতে পারেন। সঠিক তথ্য প্রদান, কাগজপত্রের সতর্কতা এবং নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হওয়া হল এই প্রক্রিয়ার সফল সমাপ্তির চাবিকাঠি। অনলাইন আবেদন পদ্ধতি ব্যবহার করে, পাসপোর্ট প্রাপ্তি এখন আরও দ্রুত এবং সুবিধাজনক হয়েছে।

১০টি সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর 

অনলাইনে ডিজিটাল পাসপোর্ট আবেদনের জন্য কি কি প্রয়োজন?

অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদনের জন্য প্রথমে আপনাকে জাতীয় পাসপোর্ট অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। এরপর আবেদন ফর্ম পূরণ, ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম, জন্মতারিখ, ঠিকানা, এবং পরিচয়পত্র নম্বর সঠিকভাবে দিতে হবে।

সাথে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID), জন্ম সনদ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে। কাগজপত্র স্পষ্ট ও পাঠযোগ্য হতে হবে যাতে কোনো সমস্যা না হয়।

আবেদন ফি কিভাবে প্রদান করা যায়?

অনলাইনে পাসপোর্ট ফি প্রদান করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। বিকাশ, ব্যাংক ট্রান্সফার, অথবা ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড দিয়ে ফি জমা করা যায়।

ফি জমা দেওয়ার পরে একটি রসিদ পাবেন যা আপনার আবেদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। রসিদটি প্রয়োজনে অফিসে প্রদর্শন করতে হতে পারে।

পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য কি নিকটস্থ অফিসে যেতে হবে?

হ্যাঁ, আবেদন প্রক্রিয়ার শেষ ধাপে আপনাকে নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে। এখানে বায়োমেট্রিক তথ্য যেমন আঙুলের ছাপ এবং সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।

সাক্ষাৎকারের জন্য স্লট আগে অনলাইনে বুক করতে হয়। নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক, নইলে আবেদন প্রক্রিয়া স্থগিত হতে পারে।

আবেদন ফর্ম পূরণের সময় কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে?

আবেদন ফর্মে সব তথ্য সঠিকভাবে এবং স্পষ্টভাবে পূরণ করা আবশ্যক। ভুল তথ্য দিলে পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় বিলম্ব বা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ এবং পরিচয়পত্র নম্বর ঠিকভাবে লিখুন। অনলাইনে ফর্ম জমা দেওয়ার আগে সব তথ্য পুনরায় যাচাই করা জরুরি।

কোন ধরনের কাগজপত্র আপলোড করতে হবে?

জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) স্ক্যান কপি, জন্ম সনদ এবং ছবি প্রয়োজন। যদি প্রয়োজন হয়, পূর্ববর্তী পাসপোর্টের কপি বা অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাগজপত্রও আপলোড করতে হতে পারে।

কাগজপত্র অবশ্যই স্পষ্ট এবং পাঠযোগ্য হতে হবে। অস্পষ্ট কাগজপত্র থাকলে আবেদন বাতিল হতে পারে বা পুনরায় জমা দিতে হতে পারে।

অনলাইনে আবেদন করার পরে আবেদন স্ট্যাটাস কিভাবে চেক করা যায়?

আপনি যে অ্যাকাউন্ট দিয়ে আবেদন করেছেন, লগইন করে আবেদন স্ট্যাটাস নিয়মিত চেক করতে পারবেন। এখানে আপনার আবেদন গ্রহণ হয়েছে কি না এবং প্রক্রিয়ার কোন ধাপে রয়েছে তা দেখা যায়।

স্ট্যাটাস চেক করার মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন কখন পাসপোর্ট তৈরি হবে এবং ডাকযোগে বা অফিসে তা নিতে পারবেন।

শিশু বা নবজাতকের জন্য পাসপোর্ট কিভাবে আবেদন করা হয়?

শিশুদের জন্য পাসপোর্ট আবেদনও অনলাইনে করা যায়। শিশুদের জন্ম সনদ এবং অভিভাবকের NID প্রয়োজন। ফর্মে শিশুর তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

সাক্ষাৎকারে অভিভাবক উপস্থিত থাকলে বায়োমেট্রিক তথ্য নেওয়া হয়। শিশুদের জন্য ফি প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কম হতে পারে।

অনলাইনে ছবি আপলোড করার নিয়ম কি?

আপনার পাসপোর্টের জন্য স্পষ্ট এবং সাম্প্রতিক ছবি আপলোড করতে হবে। ছবিতে পেছনের ব্যাকগ্রাউন্ড সাধারণত সাদা হওয়া উচিত এবং আপনার মুখ পরিষ্কারভাবে দেখা যাবে।

অনলাইনে ছবি ফরম্যাট সাধারণত JPEG বা PNG হয়। সাইজ এবং পিক্সেল সীমা ওয়েবসাইটে উল্লেখ থাকে, যা মেনে চলা আবশ্যক।

পাসপোর্ট গ্রহণের সময় কি আনুষঙ্গিক কাগজ প্রয়োজন হয়?

হ্যাঁ, পাসপোর্ট গ্রহণের সময় আবেদন রসিদ এবং NID প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হয়। এছাড়া কোনো নির্দিষ্ট নোটিশ বা ডাকযোগের রসিদ থাকলে সেটিও দেখাতে হবে।

এই কাগজপত্র দেখানো বাধ্যতামূলক। অনুপস্থিত থাকলে পাসপোর্ট গ্রহণে সমস্যা হতে পারে।

১০ অনলাইনে আবেদন করলে পাসপোর্ট কত সময়ে পাওয়া যায়?

সাধারণত অনলাইন আবেদন করলে পাসপোর্ট ১০–১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রস্তুত হয়। তবে ভীড়, অতিরিক্ত আবেদন বা অনুপস্থিতি থাকলে সময় একটু বেশি হতে পারে।

নিয়মিত স্ট্যাটাস চেক করলে আপনি জানতে পারবেন ঠিক কখন পাসপোর্ট তৈরি হবে। প্রক্রিয়া শেষে ডাকযোগে বা অফিসে তা গ্রহণ করতে হবে।

Leave a Comment

You cannot copy content of this page